• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • হজ্জ্বঃ হাদীস ও আছারের আলোকে

    হজ্ব তিন প্রকার : তামাত্তু, কিরান ও ইফরাদ।

    মক্কার বাইরে অবস্থানকারী ব্যক্তিরা উপরোক্ত যেকোনো প্রকার হজ্ব করতে পারেন। এতে তাদের ফরয হজ্ব আদায় হবে। তবে উপরোক্ত তিন প্রকার হজ্বের মধ্যে সর্বোত্তম হল হজ্বে কিরান, এরপর হজ্বে তামাত্তু, এরপর হজ্বে ইফরাদ। নিচে প্রতিটির পরিচয় ও জরুরি মাসাইল উল্লেখ করা হল।

    এক. কিরান

    মীকাত অতিক্রমের পূর্বে উমরা ও হজ্বের ইহরাম বেঁধে একই ইহরামে উমরাহ ও হজ্ব উভয়টি আদায় করা। প্রথমে মক্কা মুকাররামা পৌঁছে উমরা করা অতঃপর এই ইহরাম দ্বারা হজ্বের সময়ে হজ্ব করা এবং কুরবানী দেওয়া।

    দুই. তামাত্তু হজ্ব

    হজ্বের মাসসমূহে মীকাত থেকে শুধু উমরার নিয়তে ইহরাম বাঁধা এবং মক্কা মুকাররামায় পৌঁছে উমরার কাজ সম্পন্ন করার পর চুল কেটে বা চেঁছে ইহরামমুক্ত হয়ে যাওয়া। অতঃপর এই সফরেই হজ্বের ইহরাম বেঁধে হজ্বের নির্ধারিত কাজগুলো সম্পন্ন করা এবং কুরবানী দেওয়া।

    তিন. ইফরাদ

    মীকাত থেকে শুধু হজ্বের নিয়তে ইহরাম বাঁধা এবং মক্কা মুকাররামা পৌঁছে উমরা না করা বরং (সুন্নত তাওয়াফ) তাওয়াফে কুদূম করে ইহরাম অবস্থায় হজ্বের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা। অতঃপর নির্ধারিত সময়ে হজ্বের আমলগুলো সম্পন্ন করা। উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা রা. বলেন, বিদায় হজ্বে আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে রওনা হলাম। আমাদের মধ্যে কেউ (তামাত্তুর নিয়তে প্রথমে) উমরার জন্য তালবিয়া পাঠ করলেন, কেউ (কিরানের নিয়তে) হজ্ব ও উমরার জন্য তালবিয়া পাঠ করলেন এবং কেউ (ইফরাদের নিয়তে) শুধু হজ্বের ইহরাম গ্রহণ করলেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ্বে ইফরাদের জন্য তালবিয়া পাঠ করলেন। যারা শুধু হজ্ব বা একত্রে হজ্ব-উমরার (কিরানের) ইহরাম গ্রহণ করেছিলেন তারা ১০ যিলহজ্বের পূর্ব পর্যন্ত- ইহরাম থেকে মুক্ত হননি।-সহীহ বুখারী ১/২১২

    ইহরামের নিয়ম

    ইহরামের মূল বিষয় হচ্ছে হজ্ব বা উমরার নিয়তে তালবিয়া পাঠ। এর দ্বারাই ইহরাম সম্পন্ন হয়ে যায়। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মাথায় সিঁথি করা অবস্থায় ইহরামের তালবিয়া পাঠ করতে দেখেছি। তিনি বলেছেন, এই বাক্যগুলোর অতিরিক্ত কিছু বলেননি।-সহীহ মুসলিম ১/৩৭৬তবে ইহরাম গ্রহণের সুন্নত তরীকা হল মোচ, নখ এবং শরীরের পরিষ্কারযোগ্য লোম চেঁছে বা কেটে পরিষ্কার করবে। উত্তমরূপে গোসল করবে, গোসল সম্ভব না হলে ওযু করবে। পুরুষগণ দু’টি নতুন বা ধৌত সাদা চাদর নিবে। একটি লুঙ্গির মতো করে পরবে। অপরটি চাদর হিসাবে ব্যবহার করবে। পায়ের পাতার উপরের অংশ খোলা থাকে এমন চপ্পল বা স্যাণ্ডেল পরবে। মহিলাগণ স্বাভাবিক কাপড় পরবে। তাদের জন্য ইহরাম অবস্থায় জুতা-মোজা পরার অবকাশ রয়েছে। ইহরাম বাঁধার আগে খালি শরীরে আতর বা সুগন্ধি ব্যবহার করা মুস্তাহাব। শরীরের আতর বা ঘ্রাণ ইহরাম গ্রহণের পর বাকি থাকলেও অসুবিধা নেই। তবে ইহরামের কাপড়ে আতর বা সুগন্ধি লাগাবে না। কেননা ইহরামের কাপড়ে এমন আতর বা সুগন্ধি লাগানো নিষেধ, যার ঘ্রাণ ইহরামের পরও বাকি থাকে। মাকরূহ ওয়াক্ত না হলে ইহরাম বাঁধার আগে দুই রাকাত নফল নামায পড়বে। অতঃপর যে হজ্ব আদায়ের ইচ্ছা সে অনুযায়ী নিয়ত করে তালবিয়া পাঠ করবে।

    নিচে ইহরামের প্রতিটি বিষয় দলীলসহ আলোচনা করা হল১. মোচ, নখ এবং শরীরের পরিষ্কারযোগ্য লোম চেঁছে বা কেটে পরিষ্কার করা। যে ব্যক্তি হজ্বে যেতে চায় তার শরীরের ক্ষৌর কার্য সম্পর্কে বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত আতা রাহ.কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন, এর অনুমতি আছে, এতে কোনো অসুবিধা নেই।-মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা হাদীস : ১৪৯৯৮

    ২. ইহরামের উদ্দেশ্যে উত্তমরূপে গোসল করা। হযরত যায়েদ বিন ছাবেত রা. থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইহরামের জন্য পরিহিত পোশাক খুলতে এবং গোসল করতে দেখেছেন।-জামে তিরমিযী ১/১০২ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, কোনো ব্যক্তি যখন ইহরাম বাঁধার ইচ্ছা করবে তখন তার জন্য গোসল করা সুন্নত।-মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা হাদীস : ১৫৮৪৭ গোসল সম্ভব না হলে ওযু করে নেওয়া। আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি উমরার জন্য অযু করলেন, গোসল করলেন না।- মাসআলা : ঋতুমতী মহিলার জন্য ইহরামের আগে গোসল করা মুস্তাহাব।-গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ৬৯ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো নারী হায়েয বা নেফাস অবস্থায় মীকাতে পৌঁছলে গোসল করবে এবং ইহরাম গ্রহণ করবে। অতঃপর হজ্বের যাবতীয় কাজ করতে থাকবে। শুধু বাইতুল্লাহর তাওয়াফ ব্যতীত।-সুনানে আবু দাউদ ১/২৪৩

    পদত্যাগ করলেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

    জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার আগেই পদত্যাগ করলেন দেশটির বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী তোমোমি ইনাডা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা- বিবিসির খবরে এর নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে।
    বিবিসি জানাচ্ছে, দেশটির ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বেশ ঘনিষ্ঠ এই নারী বিতর্কিত শান্তিরক্ষা স্থাপনার তথ্য ফাঁসের অভিযোগে পদত্যাগ করেছেন। যদিও জাতীয়তাবাদী এই নারী নেত্রীকে শিনজো আবের কর্মকাণ্ডকে ছড়িয়ে দেয়ার মূল কাণ্ডারি বলে অভিহিত করা হতো।
    জানা গেছে, ৫৮ বছর বয়সী ইনাডার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী আবের নজরে আসায় এবং দেশটির অনেকেই এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কারণেই তিনি পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। তাকে ভবিষ্যৎ জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। তার আগে, মাত্র একজন নারী দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বিবিসি।

    বাংলাদেশের বাইরে আরেক ‘বাংলাদেশ’

    বাংলাদেশের বাইরে আরেকটি ‘বাংলাদেশ’ আছে। আর সেই বাংলাদেশের লোকজনও ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে পরিচিত। অবিশ্বাস্য শোনালেও ঘটনাটি সত্যি। দ্বিতীয় এই বাংলাদেশের অবস্থান আর্মেনিয়াতে। দেশটির রাজধানী ইয়েরেভানের একটি শহরতলী এটি। জায়গাটির নাম কেন বাংলাদেশ হলো তা নিয়ে নানারকম মত আছে। ইয়েরেভানের মধ্যে অন্যতম জনবহুল এবং জনপ্রিয় এলাকা এই বাংলাদেশ। এরা ‘বাংলাদেশি’ নামে পরিচিত হলেও আসলে এরা আর্মেনীয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এখানকার মানুষ জানে যে বাংলাদেশ নামে একটি দেশ আছে এবং তারাও ‘বাংলাদেশি’। তবুও নিজেদের ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে পরিচয় দিতে তারা গর্ববোধ করে। এদের নিজস্ব আইন, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য আছে। এখানে আছে বড় বড় দোকানপাট, কারখানা, অফিস এবং পার্ক। এখানকার মানুষ খুব অতিথিপরায়ন, দয়ালু, কর্মঠ এবং সত্।

    এই ছোট্ট বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। এদের ৯৯ শতাংশই আর্মেনীয়।  এখানে যারা বাস করে তারা এই এলাকা ছাড়তে চায় না। কারণ এলাকাটি বসবাসের জন্য অনেক সুন্দর। অফিসিয়াল নাম ‘মালাতিয়া সেবাস্তিয়া’ হলেও স্থানীয়দের কাছে ‘বাংলাদেশ’ হিসেবেই এটি পরিচিত। বাসযাত্রী, দোকানদার, পুলিশসহ যাকেই বলুন না কেন সবাই চেনেন বাংলাদেশ নামেই। কোন বাংলাদেশি সেখানে গিয়ে ‘উই আর ফ্রম বাংলাদেশ’ বললে প্রথমে সবাই আর্মেনিয়ার বাংলাদেশের কথাই মনে করবেন!

    যাই হোক, গুগলে প্রাপ্ত একটি আর্টিকেল থেকে জানা গেলো এই এলাকার নাম ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ‘বাংলাদেশ’ হিসেবে পরিচিতি পায়। ইয়েরেভানের অন্যান্য এলাকা থেকে তুলনামূলক নিচু স্থানে অবস্থিত, তুলনামূলক অনুন্নত, বাংলাদেশের মতো কিছুটা সবুজ অরণ্য ইত্যাদি মিলিয়ে এটির নাম বাংলাদেশ। একটি লেখায় বলা হয়েছে, আর্মেনিয়াকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান স্বীকৃতি দিতে কার্পণ্য করার প্রতিবাদে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান থেকেও এমন নামকরণ করা হতে পারে।

    ৫৭ ধারা বিতর্ক

    তথ্যপ্রযুক্তি আইন মামলায় ১৬ সাংবাদিক আসামি

    ৫৭ ধারার অপরাধ স্পষ্ট করা হবে -আইনমন্ত্রী আনিসুল হক : এ আইন ব্যাপকহারে অপব্যবহার হচ্ছে -ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ : বাকস্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ -এড. খন্দকার মাহবুব হোসেন : ওই ধারার অপপ্রয়োগ বন্ধ হোক -মনজুরুল আহসান বুলবুল : মত প্রকাশের স্বাধীনতা হনন -ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া

    মালেক মল্লিক : ‘আইনের জন্য মানুষ না মানুষের জন্য আইন’ প্রশ্নটি সর্বত্রই উঠেছে। তথ্যপ্রযুক্তি আইন-২০১৩-এর ৫৭ ধারার জন্য মিডিয়া; নাকি মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য বিতর্কিত এই ধারা? সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক ধারাটি অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। সংবিধানে ৩৯ অনুচ্ছেদে দেশের সব নাগরিকের চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে নাগরিকের বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। অথচ এই ধারায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অপব্যবহার করে অপছন্দের ব্যাক্তিকে দমন-পীড়নের দরজা খুলে দেয়া হয়েছে। এতে মানুষ আতঙ্কিক। সাধারণ মানুষ মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্বকারী বিতর্কিত ধারাটি বাতিলের দাবিতে সোচ্চার। ধারাটি বাতিলের দাবি করছে সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব), সম্পাদক পরিষদ, সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, রেডিও-টিভির সর্বস্তরের সাংবাদিক এ ধারা বাতিলের দাবিতে সোচ্চার। এ প্রসঙ্গে আইন মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ইনকিলাবকে বলেন, বিষযটি নিয়ে আলোচনা চলছে। সাবেক আইন মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ৫৭ ধারার আইনের কতগুলো বিষয় সংশোধন করা উচিত। এটা এখন ব্যাপকহারে অপব্যহার হচ্ছে। ৫৭ ধারায় হয়রানির আশঙ্কা তো বাস্তবেই আমরা দেখছি।
    ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায়/ ওরা কথায় কথায় শিকল পরায় আমার হাতে-পায়ে’ বাউল শিল্পী আব্দুল লতিফের এ গানটি বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের মুখে মুখে শোনা যেত। ’৫২ ভাষা আন্দোলন পরবর্তীতে ৭১ মুক্তিযুদ্ধ এমনকি ’৯০ এর এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেও হাটে-মাঠে-ঘাটে গানটি শোনা যেত মানুষের মুখে মুখে। ওই গানটির মতোই তথ্যপ্রযুক্তি আইন-২০১৩-এর ‘৫৭ ধারা’ নিয়ে সারাদেশে চলছে বিতর্ক। এ আইনটি যেন হয়ে গেছে সবার ‘হৃৎকম্পন’। ক্ষমতাসীনরা এ আইনের মাধ্যমে মিডিয়া এবং মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়; অন্যদিকে মিডিয়া, সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ মানুষ চায় বিতর্কিত ধারাটি বাতিল করে চিন্তা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা। মিডিয়া ব্যাক্তিত্বদের বিরোধিতা উপেক্ষা করে আইনটি কার্যকর করা হয়েছে। অতপর আইনটি অপপ্রয়োগের অভিযোগ উঠায় সর্বমহলে আইনটি বাতিলের দাবি উঠেছে। শুধু মিডিয়ার স্টেক হোল্ডাররাই নয়; দেশের প্রখ্যাত আইনজীবী, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী এবং মানবাধিকার কর্মীরা আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে। চতুমূখী দাবির মুখে আইনমন্ত্রী বেশ কয়েক বার আইনটি কখনো সংশোধন কখনো বাতিল করা হবে বলেও প্রতিশ্রæতি দেন। কিন্তু তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ২৪ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে তথ্যপ্রযুক্তি আইন-২০১৩-এর ৫৭ ধারা রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ হিসেবে অবিহিত করেন। তিনি বলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার ও বাক-স্বাধীনতা ছাড়া একটি রাষ্ট্র আগাতে পারে না। সংবিধান অনুযায়ী এখন সব কিছুই বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ থাকতে হবে।
    গত এক বছরে সারা দেশে অন্তত ৫০টি মামলা হয়েছে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার অধীনে। অভিযোগ রয়েছে এর অধিকাংশই হয়রানিমূলক এবং প্রতিহিংসা পরায়ন। চলতি বছরেও অন্তত ৩৫টি মামলা হয়। এর মধ্যে আসামী হয়েছে ১৬ জন সাংবাদিক। এছাড়াও আসামি হয়েছেন ছাত্র, শিক্ষক ও মৎসজীবী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার মানুষ। অনেক আবার জেলও খাটছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আইনজীবী বলেন, তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার ভয়ংকর এই ৭টি শব্দবন্ধ আছে। সেগুলো হলো: মিথ্যা ও অশ্লীল, নীতিভ্রষ্টতা, মানহানি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি। যেকোনো নিরীহ কথাকেই এসব বিমূর্ত অভিযোগের ফাঁকে ফেলা সম্ভব। সবচেয়ে মারাত্মক হলো, এই ৭টি অপরাধ আদৌ করা হয়েছে কি না, আইনে তা নির্ধারণের ভার দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। পুলিশই অভিযোগ শুনে মামলা নিয়ে গ্রেফতারী পরোয়ানা পাঠাতে পারবে। তাহলে এই পুলিশ সদস্যকে একাধারে সংস্কৃতি বিশেষজ্ঞ, ভাষাবিদ, জনপ্রশাসনবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, ধর্মবিশারদ এবং অপরাধ বিশেষজ্ঞ হতে হবে। সেটা কি আমাদের পুলিশ বাহিনীর পক্ষে সম্ভব?
    এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল আইন মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ইনকিলাবকে বলেন, বিষযটি নিয়ে আলোচনা চলছে। ৫৭ ধারা একটি অপরাধ; এটা সাইবার অপরাধ। এতদিন ৫৭ ধারা অপরাধের বিষয়ে স্পষ্ট ছিল না। আমাদের কাজ চলছে দ্রæত সময়ের মধ্যে ৫৭ ধারার অপরাধগুলো স্পষ্ট করা হবে। তিনি আরো বলেন, যে সব বিষয়গুলো নিয়ে সমালোচনা ছিল সেগুলো নিরসণ করা হবে। আইসিটির অ্যাক্টের ৫৭ ধারা বাতিল হবে কিনা এ বিষয়ে স্পষ্ট কোন কথা বলেনি।
    এ প্রসঙ্গে সাবেক আইন মন্ত্রী ও ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ৫৭ ধারার আইনের কতগুলো বিষয় সংশোধন করা উচিত। কারণ এটা এখন ব্যাপকহারে অপব্যহার হচ্ছে। বিশেষ করে মামলা হওয়ার আগে অভিযোগের বিষয়ে ইনভেস্টিগেশন করতে হবে। তিনি বলেন, ৫৭ ধারায় হয়রানির আশঙ্কা তো বাস্তবেই আমরা দেখছি। ফেসবুকে কেউ একটা স্ট্যাটাস দিল, তাতে কি বলা হল, কেউ কারও অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কিছু লিখে দিল কিনা বা গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টটি সত্য ছিল কিনা- এসব তদন্ত না করে তো মামলা নেয়া উচিত নয়। তিনি আরো বলেন, সংবাদপত্রের সমালোচনা করলেই যদি মামলা হয়, তবে তা সংবাদপত্রের বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
    সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, আইনটি সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষের বাক স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। এটি দেশের গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরুপ। ৫৭ ধারা সাংবাদিকদের কন্ঠরোধ করা একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। সাংবাদিক সংবাদের যে কোন অংশ নিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহেনী ৫৭ ধারা মামলা করতে পারেন। এতে করে সাংবাদিকরা বস্তু নিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে ইতস্থবোধ করেন। এইভাবে স্বাধীন গণমাধ্যমের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। এর কারণে সবাই এ আ্ইনটির বাতিলের দাবি জানিয়েছে আসছে।
    সংশোধ করা হলে কি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মনে করি এই আইনটি সংশোধন না করে সরাসরি বাতিল করা হোক। এতে করে সংবিধানের স্বীকৃতি নাগরিকদের বাক স্বাধীনতাকে নিশ্চিত হবে।
    বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (একাংশ) এর সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল ইনকিলাবকে বলেন, আমরা আমাদের বক্তব্য বিভিন্ন সময় দিয়েছি। আমাদের বক্তব্য একটাই তাহল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, প্রধান মন্ত্রীও বলেছেন, ৫৭ ধারা সাংবাদিকদের হরয়ানির জন্য নয়।
    ৫৭ ধারা বাতিল চেয়ে রিট আবেদন কারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়–ঁয়া ইনকিলাবকে বলেন, আইনটি করা হয় মূলত মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হনন করার উদ্দেশ্যে। আমি শুরু থেকে এই আইনটির বাতিলের দাবি জানি আসছি। কারণ আমাদের সংবিধানেও নাগরিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিয়েছেন। এখন তাহলে আবার ৫৭ ধারা কেন। এ ধারাটি সর্বমহলের ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব করেছেন। রিট আবেদনটির প্রাথমিক শুনানি শেষে রুল জারি করেন আদালত। তবে বিষয়টি চূড়ান্ত নিস্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
    হাইকোর্টে রিট আবেদন : আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়। রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা বিলুপ্ত করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করে হাইকোর্ট, যা বর্তমানে চূড়ান্ত শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। রিট আবেদনে বলা হয়, তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা সংবিধানের ২৭, ৩২ ও ৩৯ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে; কিন্তু এই ৫৭ ধারা মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ব্যাপকভাবে খর্ব করছে। আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় তা বাতিল করা উচিত।
    এ আইনের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর শিকার হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন সাংবাদিকরা। সর্বপ্রথম ২০১৫ সালে সাংবাদিক প্রবীর শিকদারের বিরুদ্ধে মামলা হলে পুলিশ তাকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করে। এরপর থেকে ধারাটি বাতিলের জন্য বিভিন্ন মহল থেকে জোর দাবি ওঠে। আইনমন্ত্রী তখন ধারাটি বাতিলের আশ্বাস দিয়েছিলেন। এরপর গত ২ বছরে হয়েছে আরও বেশকিছু মামলা। এরপর মামলার শিকার হয়েছেন ঢাকা, খুলনা ও হবিগঞ্জের ৪ সাংবাদিক। চারদিনের ব্যবধানে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলা হয়। খুলনার সিএমএমের বিষয়ে রিপোর্ট করায় সিএমএমের পক্ষে ওই আদালতের নাজির তপন কুমার বাদী হয়ে ১৪ জুন খুলনা মেট্রোপলিটন সদর থানায় আলোকিত বাংলাদেশের খুলনা প্রতিনিধি মোতাহার রহমান বাবু ও স্থানীয় সময়ের খবরের স্টাফ রিপোর্টার সোহাগ দেওয়ানের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা করেন। এর তিন দিন আগে ১১ জুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কমের স্টাফ করসপন্ডেন্ট গোলাম মুজতবা ব্রুব’র বিরুদ্ধে এবং এর দুই দিন আগে ১২ জুন হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ ছাড়া ওয়ালটনের পণ্য নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের জের ধরে ৫৭ ধারায় দায়ের হওয়া এক মামলায় স¤প্রতি অনলাইন নিউজ পোর্টাল নতুন সময় ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক আহমেদ রাজুকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। দু’দিন কারাগারে থাকার পর তিনি জামিনে মুক্ত হন। এছাড়াও চট্টগ্রমে দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর রিপোর্টার তৌফিকুল ইসলাম বাবর এবং দিনাজপুরে যমুনা টিভির সিনিয়র রিপোর্টার নাজমুল হোসেনসহ চারজনের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
    সর্বশেষ গত ৭ জুলাই দৈনিক সকালের খবরের রিপোর্টার আজমল হক হেলালের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে যদিও তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। এরপর থেকে সাংবাদিক নেতারা ৫৭ ধারা বাতিলের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে।
    কর্মসূচির চলাকালে গত বৃহস্পতিবার এ ধারায় দায়েরকৃত মামলায় যুগান্তরের সাংবাদিক হেলাল উদ্দিনকে জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে নিন্ম আদালত।
    ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির তথ্য হচ্ছে, ২০১৫ থেকে এই আইনে সংগঠনের ৯ সদস্য এবং তাঁদের সঙ্গে আরও ৭ জনের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা দেয়া হয়েছে। গত বছর এই ধারায় মোট মামলা হয়েছে ৩৬টি, এ বছরের জুন পর্যন্ত এই সংখ্যা ২৪।
    আসামি হয়ে কমপক্ষে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জেল খেটেছেন, একজন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হয়েছেন। সমালোচনা করে মামলার আসামি হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ভুক্তভোগীদের তালিকায় রয়েছেন একজন মৎস্যজীবীও। প্রতি দিনই দেশের কোথাও না কোথায় এ ধারা মামলা হচ্ছে।
    গত ২০ জুলাই সম্পাদক পরিষদও এ ধারাটি বাতিলের দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, এই ধারা সংবিধান পরিপন্থী এবং সংবিধানে রক্ষিত স্বাধীন মতপ্রকাশ ও সাংবাদিকতার প্রতি হুমকি। একই সঙ্গে তারা আইসিটি আইন থেকে ৫৭ ধারা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং নতুন কোনো আইনে এই ধারা পুনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া থেকে বিরত থাকতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এতে আরো বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়ার ১৯ ধারায় বিদ্যমান তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার সব বিষয় বিদ্যমান থাকায় আমরা উদ্বিগ্ন। সম্পাদক পরিষদ মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অন্তরায় হয় এমন সব বিধিবিধান বাদ দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। সম্পাদক ও সাংবাদিকদের হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের জন্য সারা দেশে যত মিথ্যা মামলা করেছেন, তা প্রত্যাহারের এবং গ্রেফতার হওয়া সাংবাদিকদের মুক্তির দাবি করছে।
    সাউথ এশিয়ান ফ্রি মিডিয়া এসোসিয়েশনের (সাফমা) এর আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা প্রত্যাহার করে সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধ করার আহ্বান জানান। তারা বলেন, গণতান্ত্রিক চেতনা ও মিডিয়ার স্বাধীনতা খর্বকারী এই ধারা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছে। তাদের মতে, ৫৭ ধারার মত কালো আইন থাকলে শুধু মিডিয়া জগতই নয়, সমাজের সব অংশেরই সুস্থতা ও বিকাশ বিঘিœত হবে। সরকারকে এটাই ভাবতে হবে যে তারা যখন ক্ষমতায় থাকবেন না, তখন এ কালো আইন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবহৃত হবে।
    গত ২৪ জুলাই মতপ্রকাশের ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রতি অন্তরায় সৃষ্টি করে এমন কোন আইন না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সংবাদপত্র মালিক সমিতি নিউজপেপার ওনারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। এক বিবৃতিতে বলা হয়, বহুল অপপ্রয়োগের কারনে বিতর্কিত তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন, আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা অবিলম্বে বাতিল এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ওই আইনে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। একই সাথে নোয়াব বলেছে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং হয়রানিমূলক মামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এগুলো বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্যও সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।

    বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করার ইচ্ছে সরকারের নেই -কাদের

    বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি বড় দল হওয়ায় তাদের বাদ দিয়ে নির্বাচন করার ইচ্ছে সরকারের নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

    রবিবার সকালে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবসের অনুষ্ঠানে ওবায়দুল এসব কথা বলেন।

    ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজনীতি করতে হলে সাহস লাগে, মামলা মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু তারেকের কোনোটাই নেই। মামলার ভয়ে পালিয়ে না গিয়ে সেটি জনগণের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত। মামলা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা উচিত।’
    নির্বাচনে সবার জন্য সমান ক্ষেত্র তৈরির বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমরাও চাই সবাই নির্বাচনে আসুক। কিন্তু যারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বলছেন, তাদের মুখের বিষে নির্বাচনের মাঠ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

    তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে আক্রমণ থাকবে। কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণ শোভনীয় নয়।’

    ‘জাপানি ফার্স্ট লেডি ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন না’: ট্রাম্প

    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, জাপানের ফার্স্ট লেডি ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন না। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে গোপন বৈঠকের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে এর ব্যাখা দিতে গিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে এ কথা বলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
    তবে জানা গেছে, ফার্স্ট লেডি আকিয়ে অ্যাবে ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন। তিনি কেবলই না বলার ভান করেছিলেন। জার্মানির হামবুর্গে জি-২০ সম্মেলনে জাপানের ফার্স্ট লেডির কাছে বসেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। কিন্তু পরে তিনি পুতিনের কাছের ফাঁকা আসনে বসেন।
    ট্রাম্প বলেন, ‘তার (আকি আবে) স্বামী জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে খুবই ভালো মানুষ। সেখানে একজন জাপানি অনুবাদকও ছিলেন। তা না হলে বিষয়গুলো বোঝা খুব কঠিন হতো। তবে আমি সেদিন সন্ধ্যায় তার সঙ্গে আলাপ করেছি। তিনি খুব আন্তরিক একজন মানুষ। ওই সময়টা আমি খুব মজা পেয়েছি। আসলে পুরো ব্যাপারটাই বেশ ভালো ছিল।’
    পুতিনের সঙ্গে তার গোপন বৈঠকের বিষয়টি আলোচনায় আসে। ট্রাম্প বলেন, ‘নৈশভোজটি ছিল পৌনে দুই ঘন্টার। তাই এতক্ষণ চুপ করে বসে থাকাটা সম্ভব ছিল না। আর আমার মনে হয়, জাপানি ফার্স্ট লেডি ইংরেজিতে ‘হ্যালো’ শব্দটি পর্যন্ত বলতে পারেন না।’ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

    জাপানের ফুকুশিমা উপকূলে ভূমিকম্প অনুভূত

    জাপানের হনশু দ্বীপের তোহোকু অঞ্চলের ফুকুশিমা উপকূলে বৃহস্পতিবার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। তবে এতে সুনামির কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি। খবর সিনহুয়ার।
    জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানায়, স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১১ মিনিটে ৩৭.৩ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ও ১৪১.৬ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
    তারা আরো জানায়, এর উৎপত্তিস্থল ছিল প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশের ৪০ কিলোমিটার গভীরে। তোহোকু ও জাপানের পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়।

    সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নিতে অক্ষম আ.লীগ -ফখরুল

    আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার চ্যালেঞ্জ নিতে তারা অক্ষম বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাই তারা ৫ জানুয়ারির মতোই এবারও দেশে একটা অর্থবহ নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হবে।

    শুক্রবার ঠাকুরগাঁওয়ের তাঁতিপাড়াস্থ বাসভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

    তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে এখন খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত বিষোদগার করছে।’

    আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রতি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রশ্নে ব্যক্তিগত আক্রমণ না করে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কাউকেই গ্রাহ্য করে না, তারা গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। তারা বিরোধীদলকে দমনের জন্য গুম খুনের রাজনীতি করছে।’

    তিনি সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ঠাকুরগাঁওয়ের স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মান্নান হত্যার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘মান্নানের পরিবার কতটুকু সুবিচার পাবে সে ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ আছে।

    কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নিজ দলের মধ্যকার এসব খুনাখুনির কারণ চাঁদাবাজির ভাগ বাটোয়ারা। আর তাই পুলিশ কোনও জিজ্ঞাসাবাদ না করে অভিযুক্তদের জেলহাজতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে।’

    এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান,সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক পয়গাম আলীসহ জেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

     

    বরফের নিচে মিলল ৭৫ বছর ধরে নিখোঁজ দম্পতির মৃতদেহ

    সুইজারল্যান্ডে একটি ক্রমশ ছোট হতে থাকা হিমশৈলের নিচে দুটি মৃতদেহ পাওয়া গেছে। জানা গেছে এই দুইজন হচ্ছেন ৭৫ বছর আগে ১৯৪২ সালে নিখোঁজ হওয়া মার্সেলিন ও ফ্রান্সিন দুমোলিন দম্পতি।
    ১৯৪২ সালে আল্পস পর্বতে নিজেদের গবাদি পশুর খোঁজ নিতে গিয়ে নিখোঁজ হন এই দম্পতি। তাদের সাত সন্তান ছিল। এদের মধ্যে সবার ছোট মার্সেলিন উদ্রি দুমোলিনের বয়স ৭৯ বছর। বাবা-মার মৃতদেহর খোঁজ পাওয়ায় গভীর প্রশান্তি পেয়েছেন কারণ তিনি এখন তাদের প্রাপ্য শেষকৃত্যটি করতে পারবেন। তিনি বলেন, আমাদের সারাজীবন তাদের খোঁজ করে শেষ হয়েছে। পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ টেস্ট করা হবে।
    স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, গত সপ্তাহে স্যানফ্লেউরন হিমশৈলে একজন স্কি লিফট শ্রমিক এই দুই জনের মৃতদেহর সন্ধান পান। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক বার্নহার্ড শ্যানেন বলেন, ওই কর্মী আমাদের বলে বরফের নিচে সে কিছু ব্যাকপ্যাক, টিন ও গ্লাসের বোতল এবং নারী ও পুরুষের জুতার পাশাপাশি একজনের শরীরের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে। যে পোশাক তারা পরিধান করে আছেন তাতে মনে হচ্ছে ৭০-৮০ বছর ধরে তারা সেখানে পড়ে বাছে।
    উদ্রি দুমোলিন বলেন, আমার মা শিক্ষক ছিলেন এবং পেশায় জুতার কারিগর বাবার সঙ্গে পাহাড়ে যেতেন না। কারণ সাত সন্তানের জননী তার যৌবনের বেশিরভাগ সময় গর্ভবতীই ছিলেন। মা বাবা নিখোঁজ হওয়ার পরে তারা বিভিন্ন পরিবারে চলে যান এবং কারো সঙ্গে কারো যোগাযোগ নেই। বিবিসি।

    সহায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না -মির্জা ফখরুল

    সহায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    বুধবার খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।

    ফখরুল বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এই ভোট বিহীন অগণতান্ত্রিক সরকারকে হটাতে জনগণের নিশ্চিত ভোট প্রয়োগের সুযোগ তৈরি করতে হবে । সহায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।

    ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আজ

    ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আজ সোমবার। এটি দেশটির চতুর্দশ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। রাজধানী নয়াদিল্লীর পার্লামেন্ট ভবন ও রাজ্যের বিধানসভাগুলোতে লোকসভা, রাজ্যসভা ও বিধানসভার সদস্যরা ভোট দিয়ে তাদের নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করবেন।
    স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। নির্বাচনের ভোট গণনা করা হবে ২০ জুলাই।
    এবার রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী দুইজন। বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের পক্ষ থেকে প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দ যিনি এর আগে বিহারের রাজ্যপাল ছিলেন। আর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ’র প্রার্থী মীরা কুমার যিনি এর আগে কংগ্রেস শাসনামলে লোকসভার স্পিকার ছিলেন। দুইজনই দলিত সম্প্রদায়ের।
    বর্তমান বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৪ জুলাই। নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি শপথ নিবেন ২৫ জুলাই। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

    নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা

    আ’লীগকে ক্ষমতায় রেখেই সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব -সিইসি

    আইনি কাঠামোগুলো পর্যালোচনা ও সংস্কার : নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও যুগোপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ : সংসদীয় এলাকার নির্বাচনী সীমানা পুনর্নির্ধারণ : নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ
    স্টাফ রিপোর্টার : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনী এই রোডম্যাপ প্রকাশ করা হয়। ৭টি কর্মপরিকল্পনা সামনে রেখে বই আকারে এই রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে ইসি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর আগে এ রোডম্যাপ প্রকাশের পর তা সব রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানোর কথা জানিয়েছে কমিশন। রোডম্যাপ তুলে ধরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, নির্বাচনী রোডম্যাপের এই দলিল সর্বশেষ নয়। সময় ও বাস্তবতার নিরিখে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে কমিশন কর্মকর্তারা আরো বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ আস্থাশীল। নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে বিদ্যমান আইনেই যথেষ্ট। তবে সময়ের প্রয়োজনে ঘোষিত রোডম্যাপে পরিবর্তন আসতে পারে। ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে সিইসি ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো: রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, দশম সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। সেক্ষেত্রে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগে ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
    ইসির নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোনো আলোচনা না করে এই রোডম্যাপ দিয়ে তো সমস্যার সমাধান হবে না। রোডটা তো থাকতে হবে। এখন পর্যন্ত আমরা রোড দেখতে পারছি না। ম্যাপ দিয়ে কি হবে? ঘোষিত ‘রোডম্যাপ’কে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল বলেছেন, নির্বাচন কমিশন যে পথনকশা জাতির সামনে পেশ করেছে তা খুবই সুন্দর এবং বাস্তবসম্মত হয়েছে। তবে নির্বাচন বিশেষজ্ঞরাও এই ইসিকে নিয়ে অবাধ-নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
    ইসির রোডম্যাপে যে ৭টি কর্মপরিকল্পনা উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- (ক) আইনি কাঠামোগুলো পর্যালোচনা ও সংস্কার, (খ) নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও যুগোপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ, (গ) সংসদীয় এলাকার নির্বাচনী সীমানা পুনর্নির্ধারণ, (ঘ) নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ, (ঙ) বিধিবিধান অনুসরণপূর্বক ভোটকেন্দ্র স্থাপন, (চ) নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা এবং (ছ) সুষ্ঠু নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরবর্তী ৯০ দিন নির্বাচনী আইন-বিধি অনুযায়ী ইসি কাজ করবে। তবে ওই সময় সরকার কিভাবে পরিচালিত হবে, রাজনৈতিক কর্মপরিবেশ কিভাবে নিশ্চিত করা হবে সে ব্যাপারে রোডমাপে সুস্পষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা নেই। বিএনপির ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার’ দাবির মুখেই একাদশ সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ-গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে সংলাপে রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনের কাছ থেকে সুপারিশের পাশাপাশি সহযোগিতাও চাওয়া হবে।
    একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দায় নেই নির্বাচন কমিশনের বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। আগামী ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগে ৯০ দিনের মধ্যে এ সংসদ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে জানিয়ে সিইসি বলেন, এটি একটি সূচনা দলিল। নির্বাচনের পথে কাজের জন্য এ কর্মপরিকল্পনাই সব নয়। সংযোজন-পরিমার্জন করে সবার মতামত নিয়ে আমরা কাজ করে যাব। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রত্যয় নিয়ে কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হলেও তফসিল ঘোষণার পর থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসির অধীনে প্রশাসনিকসহ সব ধরনের কাজের তদারকি শুরু হবে।
    সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, তফসিল ঘোষণার পরবর্তী ৯০ দিন নির্বাচনী আইন-বিধি অনুযায়ী আমরা কাজ করব। এ মুহূর্তে সরকার কিভাবে পরিচালনা হবে ও রাজনৈতিক কর্মপরিবেশের বিষয়গুলো আমাদের এখতিয়ারে নয়। সরকারের কর্মকান্ডে এখনই কমিশন হস্তক্ষেপ করবে না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে কে এম নূরুল হুদা বলেন, আগামী নির্বাচন শুধু সরকার কেন, আমরা রাজনৈতিক দল বা যে কোনো দেশি-বিদেশি সংস্থার প্রভাবমুক্ত নির্বাচন করতে পারব। তিনি জানান, তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত ৭ কর্মপরিকল্পনা ধরে এগোনো হবে। তফসিল ঘোষণার পর ইসির কাজে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা এলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনী রোডম্যাপের প্রসঙ্গের বাইরে স¤প্রতি একজন রাজনৈতিক দলের নেতার বাসায় সামাজিক অনুষ্ঠানে পুলিশের বাধা দেয়ার বিষয়টি উঠে আসে। এ ধরনের রাজনৈতিক তৎপরতায় বাধা দেয়ার বিষয়ে ইসির কোনো পদক্ষেপ থাকবে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এটা সরকারের বিষয়। আমরা তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী পরিবেশ বজায়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। এখন সরকারের কাছে কোনো অনুরোধ থাকবে না। তবে তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতির প্রয়োজন হলে অনুরোধ করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম স্বাগত বক্তব্যে জানান, ১৫ ফেব্রুয়ারি ইসির দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত সব কাজ প্রশ্নের ঊর্ধ্বে রেখে করা হয়েছে। ইসির সুচিন্তিত কাজের অংশই আজকের কর্মপরিকল্পনা কমিশনের কাজের ফসল। আমরা পরিকল্পনা ধরেই এগোচ্ছি। জনগণের সামনে সুষ্ঠু ও সুন্দর, সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন করতে চাই। নির্বাচন করতে গিয়ে সততা ও শক্তির স্বাক্ষর যেন আমরা রাখতে পারি সে জন্য সবার সহযোগিতা চাই।
    নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচনে ভোট গ্রহণে ইভিএম ব্যবহারের দরজা আমরা বন্ধ করে দিইনি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর সরকার সহযোগিতা করলে এর ব্যবহার সম্ভব। বর্তমান কমিশন সরকার, কোনো দল বা দেশি-বিদেশি সংস্থার প্রভাবমুক্ত থেকে নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। প্রভাবমুক্ত থেকেই নির্বাচন করতে পারবে বলে কমিশনের বিশ্বাস আছে। তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন অবস্থায় বর্তমান ইসির পক্ষে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।
    আইনি কাঠামোসমূহ পর্যালোচনা ও সংস্কার : ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী চলতি বছরের জুলাই থেকে আইনি কাঠামো পর্যালোচনা, প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়গুলো চিহ্নিতকরণ, নির্বাচন সহায়তা ও সরবরাহ অধিশাখা/আইন অধিশাখা, আইনি কাঠামো সংস্কারের লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণ, আইন সংস্কারের প্রাসঙ্গিক খসড়া প্রস্তুত করে ২০১৮ সালের ফেব্রæয়ারির মধ্যে আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা নেয়া।
    কর্মপরিকল্পনার ওপর পরামর্শ গ্রহণ : কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উপকারভোগী, সুবিধাভোগী শ্রেণীর নাগরিকদের নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমের ওপর পরামর্শ প্রদানের ক্ষেত্র সৃষ্টি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সে প্রেক্ষিতে চলতি জুলাই মাস থেকে পর্যায়ক্রমে সুশীলসমাজ, সাংবাদিক, নির্বাচন বিষয়ে অভিজ্ঞ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় হবে।
    সংসদীয় এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ : দেশের জনসংখ্যার ভিত্তিতে ৩০০ আসন নির্ধারণ করা আছে। নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ একটি চলমান কাজ। সাধারণত প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের আগে সীমানা নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। এ জন্য এ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ শেষ করে চলতি বছরের ডিসেম্বরে নীতিমালার আলোকে বিশেষজ্ঞদের কারিগরি সহায়তায় সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া তালিকা প্রণয়ন করা হবে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে এ সংক্রান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশ করে দাবি/আপত্তি/সুপারিশ আহ্বান করবে তারা। আর এপ্রিলে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ হবে।
    জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুতকরণ এবং বিতরণ : আগামী ২৫ জুলাই থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। সব কাজ শেষ করে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে হালনাগাদকৃত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর ওই বছরের জুনে ৩০০ নির্বাচনী এলাকার জন্য ভোটার তালিকা মুদ্রণ, ছবিসহ ও ছবি ছাড়া ভোটার তালিকার সিডি প্রণয়ন ও বিতরণ করা হবে।
    ভোটকেন্দ্র স্থাপন : ২০১৮ সালের জুন থেকে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র চিহ্নিত করে ন্যূনতম সুবিধাদি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হবে। আর ভোট গ্রহণের ৩৫ দিন আগে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হবে। তফসিল ঘোষণার পর গেজেটে প্রকাশিত ভোটকেন্দ্রের তালিকা সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
    নতুন দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধিতদের নিরীক্ষা : ২০১৭ সালের অক্টোবরে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন শর্ত প্রতিপালন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ, নির্বাচন সহায়তা ও সরবরাহ করবে এ সংক্রান্ত অধিশাখা। এরপর আগামী বছরের (২০১৮) ফেব্রুয়ারিতে নতুন রাজনৈতিক দলের জন্য প্রাপ্ত আবেদন যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধন দেয়া হবে। মার্চে প্রকাশ করা হবে নিবন্ধিত নতুন রাজনৈতিক দলের চূড়ান্ত তালিকা।
    নির্বাচনে সংশ্লিষ্টদের সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম : সুন্দর, সুষ্ঠু ও নিয়ম অনুযায়ী ভোট গ্রহণে ইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগামী বছরের জুলাই থেকে প্রশিক্ষণ/নির্দেশনার কর্মসূচি শুরু হবে।

    গুগলের চাকরি ছেড়ে শিঙাড়া বিক্রি, তাতেও কোটিপতি

    ভারতের উচ্চশিক্ষিত তরুণ মুনাফ কাপাডিয়া। স্বপ্নের গুগলে ঈর্ষণীয় বেতনে চাকরি, মার্কিন মুলুকের বিলাসবহুল জীবন- কোনোটাই টানেনি তাকে। তবে যেটা টেনেছে সেটাতেই মন বসিয়ে বিশ্বের ৩০ তরুণ সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তার কাতারে নাম লিখিয়েছেন তিনি।
    গরম ধোঁয়া ওঠা সোনালি খোল। তার ভিতর হরেক কিসিমের মশলায় মাখামাখি তুলতুলে মাটনের পুর। যার বাহারি নাম ‘স্মোকড মাটন কিমা সমোসা’। বাংলায় যাকে বলে ‘মাটন শিঙাড়া’। এই শিঙাড়া বিক্রির ব্যবসা শুরু করার জন্যই টেক জায়ান্ট গুগলের আরামদায়ক চাকরি ছেড়েছিলেন মুম্বাইয়ের বাসিন্দা ২৯ বছরের মুনাফ কাপাডিয়া। যেমন ভাবা তেমন কাজ। ২০১৫ সালে তিনি ‘দ্য বোহরি কিচেন’ নামে একটি রেস্তোরাঁ খুলে ফেললেন। মাত্র দু’বছরের মধ্যে মুনাফের ‘দ্য বোহরি কিচেন’ হয়ে উঠল মুম্বাইয়ের অন্যতম আলোচিত খাবারের আশ্রম। আর এখান থেকেই বছরে ৫০ লক্ষ থেকে কোটি টাকার মতো আয় করছেন তিনি।
    জানা গেছে, মুম্বাইয়ের নার্সি মনজি থেকে এমবিএ করে বছরখানেক দেশেই চাকরি করেছিলেন তিনি। এর পর ডাক এলো গুগল থেকে। আমেরিকায় কয়েকবছর কাটিয়েও মন বসলো না তার। ফিরে এলেন মায়ের কোলে। আর সেই মায়ের হাতে তৈরি রান্না করা খাবার দিয়েই জার্নিটা শুরু করলেন মুনাফ। রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে উঠল ‘দ্য বোহরি কিচেন’। তবে শুধুমাত্র শিঙ্গারাই নয়। মা-ছেলে মিলে আরো বেশ কিছু খাবার যোগ করেছেন মেন্যুতে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মুনাফের রেস্তোরাঁর সামনে লেগে থাকে ভোজনরসিকদের লাইন।
    তার ইচ্ছে কয়েক বছরের মধ্যে মুনাফার অঙ্কটাকে বছরে পঞ্চাশ লক্ষ থেকে পাঁচ কোটিতে নিয়ে যাবেন তিনি। সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ’কে মুনাফ বলেন, ‘সাফল্যের জন্য ঝুঁকি নিতে হয়।’ এখানেই থামছেন না মুনাফ। জার্নিটা সবে শুরু। আরও এগিয়ে যেতে চান অনেক অনেক দূর পর্যন্ত।  তার ‘বোহরি কিচেন’কে ছড়িয়ে দিতে চান ভারতের সীমানা পেরিয়ে দেশের বাইরেও। ফোর্বস ম্যাগাজিন সম্প্রতি ‘আন্ডার থার্টি’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে মুনাফ কাপাডিয়ার নাম। ইন্ডিয়া টাইমস।

    আগামী রাজনীতির জন্য এ সফর নতুন দিকনির্দেশনা

    বিএনপি চেয়ারপার্সন লন্ডন যাচ্ছেন আজ

    বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার উদ্দশ্যে আজ লন্ডন যাচ্ছেন। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এমিরাত এয়ার লাইন্সের ৫৮৭ নং ফ্লাইটে তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন। তার সফর সঙ্গী হিসেবে একান্ত সচিব আব্দুস সাত্তার এবং গৃহপরিচালিকা ফাতেমা বেগমের যাওয়ার কথা রয়েছে। চেয়ারপার্সনের প্রেস ইউং সদস্য শায়রুল কবীর খান ইনকিলাবকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে দলের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে বিএনপি চেয়ারপার্সনের লন্ডন সফরে দলের আরও বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাও রয়েছেন। এর মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সহ-আর্ন্তজাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা গতকাল সকালের ফ্লাইটে লন্ডনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন। এ দুই নেতা লন্ডনের হাউজ অব কমন্সের একটি সেমিনারে প্রথম অংশ নেবেন এর পর তারা চেয়ারপার্সনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবেন। এ ছাড়া বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালেরও আজ লন্ডন যাওয়ার কথা রয়েছে। অন্যদিকে লন্ডনে অবস্থান করছেন দলের আর্ন্তজাতিক সম্পাদক মাহিদুর রহমান এবং ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম। তারাও চেয়ারপার্সনের এ সফরে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
    বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ব্যক্তিগত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন দল থেকে এমনটি বলা হলেও রাজনৈতিক অঙ্গণে এ সফর নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। এ সফর দেশের আগামী রাজনীতির জন্য নতুন দিক নির্দেশনা হবে বলেও অনেকে মনে করছেন। বিশেষ করে বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে এ সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিএনপির আগামীদিনের কান্ডারি দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের অন্যতম সিনিয়র ভাইসচেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে লন্ডন অবস্থান করছেন। চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে ছেলের বাসায় থেকে চিকিৎসা করাবেন। এ সময় আগামী নির্বাচন- আন্দোলন এবং দলের সার্বিক বিষয় নিয়ে দুই নেতা বিস্তারিত আলোচনা করবেন। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে বিএনপির প্রধান দাবী নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখাও তারেক রহমানের সাথে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে বলে দলের নেতাকর্মী এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও মনে করছেন। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লন্ডন সফর থেকে দেশে ফিরে খালেদা জিয়া সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করতে পারেন। লন্ডনে অবস্থানকালে খালেদা জিয়া তার ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে পরামর্শ করে চূড়ান্ত করবেন। দেশে ফিরে আগামী কুরবানীর ঈদের পর সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেশবাসীর সামনে উপস্থাপন করবেন।
    দলের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সাথে কথা বলে জানা যায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের এ সফরে দলের আরো অনেক বিষয় চূড়ান্ত হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আগামী নির্বাচন। এ নির্বাচনে ২০দলীয় জোটকে সর্বদলীয় নির্বাচনী জোট বা ফ্রন্টে নেয়ার বিষয় আলোচনা হবে। সর্বদলীয় নির্বাচনী ফ্রন্ট হলে কত আসন ছাড় দেয়া হবে তা আলোচনা করে ঠিক করা হবে। ২০দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে আলোচনা করা হবে। লন্ডনে অবস্থানরত জামায়াতের সিনিয়র নেতাদের সাথেও এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ইতিপূর্বে বাতিল হয়েছে। দলের নির্বাচনী মার্কা দাঁড়ি পাল্লাও আদালত বাতিল করেছে। এক্ষেত্রে জামায়াত কি ভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে? তারা কি জোটে থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবে? এ বিষয়েও দলের দুই শীর্ষ নেতা আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। এ ছাড়া নির্বাচনে দলের মনোনয়ন কারা পাবেন তাও তারেক রহমানের সাথে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে।
    বিএনপির সিনিয়র নেতারা বিভিন্ন মামলার জালে আটকে আছেন। নির্বাচনের আগে সরকার বিএনপিকে বিপাকে ফেলতে নেতাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলোকে টার্মকার্ড হিসেবে কাছে লাগাতে পারে। বিএনপি চেয়ারপার্সনসহ অনেক সিনিয়র নেতাদের সাজা দিয়ে নির্বাচনে অযোগ্য করার চেষ্টা করতে পারে। সরকারের এমন ষড়যন্ত্রে বিষয় মাথায় রেখে বিএনপি বিভিন্ন স্তরের নেতাদের নিয়ে তিনটি নির্বাচনী প্যানেল তৈরী করেছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন সে প্যানেল নিয়ে সিনিয়র ভাইসচেয়ারম্যানের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে চূড়ান্ত করবেন। তাই এ সফরে দলের অনেক নেতার ভাগ্যও নির্ধারিত হবে। সব মিলিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর বিএনপির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের দিক থেকে যেমন তেমনি চেয়ারপার্সনের শারিরীক সুস্থতার বিষয়টিও রয়েছে। লন্ডনে এক মাসেরও বেশি সময় অবস্থান করে চিকিৎসা সেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আগামী নির্বাচনের পূর্ণ প্রস্তুতি নেবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছে বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, সহায়ক সরকারের রূপরেখার খসড়া তৈরী করা হয়েছে। ম্যাডাম ( বেগম খালেদা জিয়া) লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে এসেই সহায়ক সরকারের রূপরেখা চূড়ান্ত করে জাতির সামনে তুলে ধরবেন। সহায়ক সরকারের রূপরেখার বিষয়ে সরকার কি পদক্ষেপ নেয় তার উপরেরই আমাদের পরবর্তী করনীয় নির্ধারণ করা হবে।
    শুধু নিজের দল নয় সরকারীদল এবং অন্যান্য বিরোধীদলও বিএনপি চেয়ারপার্সনের এ সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে। আগামী নির্বাচনে সর্বদলীয় ফ্রন্ট গঠনের বিষয়ে লন্ডনে চূড়ান্ত আলোচনা হবে। এ লক্ষে গত বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রধান উত্তরায় আ স ম আব্দুর রবের বাসায় বৈঠক করেছেন। আইন শৃংখলাবাহিনী তাতে বাধা দিলেও তাদের মধ্যে আগামী নির্বাচন এবং নির্বাচনী জোট গঠনের বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। বিরোধীদলের প্রতিনিধি হিসাবে কয়েকজন লন্ডনেও রয়েছেন। তারা এ বিষয়ে আলোচনা করবেন বলেও জানা গেছে। এ ছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন লন্ডনে অবস্থান কালে বিশ্বের অন্যান্য দেশের নেতৃবৃন্দ বা বিভিন্ন প্রতিনিধিদের সাথেও মতবিনিময় করতে পারেন। বর্তমান সরকারের গুম খুন এবং নিপিড়ন নির্যাতনের বিষয় তুলে ধরতে পারেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এসব কারণে সরকারও বিএনপি চেয়ারপার্সনের এ সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করছে।

    জাপানে ২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

    জাপানে সাজাপ্রাপ্ত দুই খুনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তাদের মৃত্যুদণ্ড রহিত করার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গ্রুপগুলোর আহবান উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার তা কার্যকর করা হলো। দেশটির বিচার মন্ত্রণালয় একথা জানায়।
    ২০১২ সালে জাপানের রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এনিয়ে মোট ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। কয়েকটি জাপানি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ১৯৯১ সালে জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে বারের মালিক এমন চার নারীকে হত্যার দায়ে মাসাকাতসু নিশিকাওয়াকে (৬১) দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া ২০১১ সালে নারী সহকর্মীকে হত্যার দায়ে সুমিদকে (৩৪) একই সাজা দেয়া হয়।
    উল্লেখ্য, উন্নত দেশগুলোর মধ্যে কেবলমাত্র জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রে এখনো মৃত্যুদণ্ডের মতো শাস্তি কার্যকর রয়েছে। সরকারের মুখপাত্র ইয়োশিহিদ সুগা জানান, বিচার মন্ত্রী কাতসুতোশি কানেদা এ দুই আসামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অনুমোদন দেন। এএফপি।