• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • মহাশূন্যে ভাসমান অ্যাপার্টমেন্ট

    পৃথিবীর সব মানুষের কাছেই নিজের ঘর সবচেয়ে সুখের জায়গা। কিন্তু প্রতিদিন একই বাড়িতে থাকতে থাকতে একঘেয়েমি চলে আসাটা স্বাভাবিক। এই একঘেয়েমি জীবন থেকে মুক্তি দিতে নতুন আবাসস্থল নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন একদল স্থপতি। ক্লাউড আর্কিটেকচার অফিসের একদল স্থপতি এমনই এক অভিনব ভাসমান অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির পরিকল্পনা করছেন। মূলত ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই তারা এমনটা চিন্তা করছেন। সব থেকে অবাক বিষয়, মহাশূন্যে ভাসমান এই অট্টালিকা এক জায়গায় স্থির থাকবে না। পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণরত স্যাটেলাইটের মতো এটি ঘুরে বেড়াতে সক্ষম হবে। মূলত মহাশূন্যের একটি কক্ষপথে স্থাপন করা হবে বিশেষ এই ভাসমান অট্টালিকাটি। এই ভাসমান অট্টালিকার নাম রাখা হয়েছে ‘অনালেমা টাওয়ার’। ভাসমান এই টাওয়ারটি তৈরি করা হবে দুবাইতে।

    মহাশূন্যে ভাসমান অট্টালিকা তৈরির জন্য বিজ্ঞানীরা একটি দৈত্যাকার গ্রহাণুকে কাজে লাগানোর কথা ভাবছেন। পৃথিবীর বাইরে কক্ষপথে পরিভ্রমণ করা এই গ্রহাণুটির নিচে জোর করে আটকে দেওয়া হবে সেই ভাসমান অট্টালিকাটি। কেন্দ্রাপসারী ভূ-তাত্ক্ষণিক কক্ষপথে পরিভ্রমণরত এই গ্রহাণুটি পৃথিবীর উত্তর থেকে দক্ষিণ গোলার্ধ চলাচল করবে। অন্যভাবে বললে নিউ ইয়র্ক থেকে দুবাই সব জায়গাই ঘুরে বেড়াতে সক্ষম ভাসমান এই অট্টালিকাটি। অনালেমা টাওয়ারের ডিজাইনার অসতাপ রুদাকেভিচ বলেন, এই অ্যাপার্টমেন্টটি তৈরিতে গতানুগতি ইট-পাথর ব্যবহার না করে কার্বন ফাইবার এবং অ্যালুমিনিয়ামের মতো তুলনামূলক হালকা এবং টেকসই উপাদান ব্যবহার করা হবে। আর গ্রহাণুটির নিচে টাওয়ারটিকে  আটকে রাখা হবে শক্তিশালী তারের সাহায্যে। টাওয়ারের বিদ্যুত্ থেকে শুরু করে সব ধরনের জ্বালানির জন্য সোলার সিস্টেমকে কাজে লাগানো হবে। আর পানির সমস্যা মিটাতে কাজে লাগানো হবে মেঘ এবং বৃষ্টির পানিকে। ঘণ্টায় ৩০০ মাইল বেগে আকাশে ছুটে বেড়াবে টাওয়ারটি। ভাসমান টাওয়ারটির বাসিন্দারা যাতে একই সাথে পৃথিবীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে পারেন সে ব্যবস্থাও রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের মতে, এটি সফল হলে ভবিষ্যতে পৃথিবীর বদলে মহাশূন্যেই গড়ে উঠবে এই ধরনের আরো অনেক অ্যাপার্টমেন্ট।-সিএনএন

    হিংসা : চুলার আগুন যেমন

    মানবেতিহাসের শুরুর দিককার কথা। পৃথিবীতে মানব পরিবার বলতে তখনো কেবলই হযরত আদম আলাইহিস সালামের পরিবার। হযরত হাওয়া রা.-এর সঙ্গে তাঁর সংসার। তাঁদের সন্তান জন্ম নিত জোড়ায় জোড়ায়Ñএক ছেলে এক মেয়ে। তাদের জন্যে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বিশেষ নিয়ম ছিল এমনÑজমজ ভাইবোন পরস্পর বিয়ে করতে পারবে না। যাদের জন্ম আগে-পরে, তারা একে অন্যকে বিয়ে করতে পারবে। হযরত আদম আলাইহিস সালামের দুই ছেলের নাম ছিল হাবীল ও কাবীল। কাবীলের সঙ্গে যে বোনের জন্ম হয় সে ছিল অধিক সুশ্রী। তাই নিয়ম ভেঙ্গে কাবীল তাকেই বিয়ে করতে চায়। আর নিয়ম টিকিয়ে তাকে বিয়ে করতে আগ্রহী ছিল হাবীলও। দ্বন্দ্ব নিরসনে তাদেরকে কুরবানী করতে বলা হল। যার কুরবানী কবুল হবে সে-ই তার উক্ত বোনকে বিয়ে করতে পারবে। এর পরের কাহিনী পবিত্র কুরআনের ভাষায়Ñ

    اِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ اَحَدِهِمَا وَ لَمْ یُتَقَبَّلْ مِنَ الْاٰخَرِ قَالَ لَاَقْتُلَنَّكَ قَالَ اِنَّمَا یَتَقَبَّلُ اللهُ مِنَ الْمُتَّقِیْنَ  لَىِٕنْۢ بَسَطْتَّ اِلَیَّ یَدَكَ لِتَقْتُلَنِیْ مَاۤ اَنَا بِبَاسِطٍ یَّدِیَ اِلَیْكَ لِاَقْتُلَكَ  اِنِّیْۤ اَخَافُ اللهَ رَبَّ الْعٰلَمِیْنَ…

    যখন তারা উভয়ে কুরবানী করেছিল, কিন্তু তাদের একজনের পক্ষ থেকে তা কবুল করা হল এবং অপরজনের পক্ষ থেকে কবুল করা হয়নি। সে বলল, আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। অপরজন বলল, আল্লাহ তো মুত্তাকীদের থেকেই কবুল করে থাকেন। তুমি যদি আমাকে হত্যা করার জন্যে আমার দিকে তোমার হাত বাড়িয়ে দাও, তবুও আমি তোমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তোমার দিকে আমার হাত বাড়াব না। আমি অবশ্যই বিশ্বজগতের প্রভু আল্লাহকে ভয় করি। অবশ্যই আমি চাই, তুমি আমার পাপ এবং তোমার পাপ বহন কর, এরপর তুমি দোজখিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। আর এটাই জালেমদের শাস্তি। অবশেষে তার মন তাকে ভাই-হত্যার বিষয়ে প্ররোচিত করল, এরপর সে তাকে হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে। Ñসূরা মায়িদা (৫) : ২৭-৩০

    পবিত্র কুরআনের বর্ণনানুসারে, এই হচ্ছে পৃথিবীতে সংঘটিত প্রথম হত্যাকা-। পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম অপরাধ। প্রথম এই হত্যাকা-ের পেছনের কারণও আমরা উপরোক্ত আয়াতসমূহে দেখতে পাই, ‘তোমার কুরবানী কবুল হয়েছে আর আমারটি হয়নি’Ñএই চিন্তা থেকেই কাবীলের মনে হিংসা জমাট বাঁধতে থাকে আর এর পরিণতিতেই সে তার ভাই হাবীলকে হত্যা করে। যে হিংসা মানুষকে দিয়ে পৃথিবীতে পাপের সূচনা করাল, সে-ই হিংসা জগতে আরও কত শত-সহ¯্র অনিষ্ট ঘটিয়েছে তার হিসাব কে জানে!

    ইতিহাসের আরও পেছনের পাতায় আদম আলাইহিস সালামকে সিজদা করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ইবলিসের যে ঔদ্ধত্য ও অহংকারের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, উল্লেখিত হয়েছে তার অভিশপ্ত হওয়ার কথা, তার মূলেও তো একই হিংসা। কুরআনের ভাষায়Ñ

    قَالَ اَرَءَیْتَكَ هٰذَا الَّذِیْ كَرَّمْتَ عَلَیَّ.

    সে বলল, দেখুন তো, এই কি সেই সৃষ্টি, যাকে আপনি আমার ওপর মর্যাদা দান করেছেন? Ñসূরা ইসরা (১৭) : ৬২

    ফলাফল তো এইÑআকাশের প্রথম অপরাধ আর জমিনের প্রথম অপরাধ সবটার মূলেই এই হিংসা। এর জঘন্যতা তাই আর বুঝিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রশ্ন হল, হিংসা কী?

    হিংসা হচ্ছে অন্যের ভালো কোনো কিছু দেখে তা ধ্বংস হওয়া বা হারিয়ে যাওয়ার কামনা করা। কেউ ভালো পথে চলতে থাকলে কিংবা ভালো কোনো কাজ করতে গেলে সেখান থেকে সে ফিরে আসা, বাধাগ্রস্ত হওয়া কিংবা ব্যর্থ হওয়ার কামনা করা। এগুলোই হিংসা। এসব হচ্ছে হিংসার প্রথম ধাপ। এর একটা পর্যায় অবশ্য মানুষের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। অনেকটাই সৃষ্টিগত ও স্বভাবজাত। আল্লাহ তাআলা তো বলেই দিয়েছেনÑ

    وَ اُحْضِرَتِ الْاَنْفُسُ الشُّحَّ.

    মানুষকে কৃপণতাপ্রবণ করেই সৃষ্টি করা হয়েছে। Ñসূরা নিসা (৪) : ১২৮

    এ কৃপণতার প্রভাবে মানুষ যেমন অন্য কাউকে নিজের সম্পদ দিতে চায় না, ঠিক এ কার্পণ্যের কারণেই ‘অন্য কেউ ভালো অবস্থায় থাকুক’Ñএটা সে মেনে নিতে চায় না। মানুষের একটি স্বাভাবিক স্বভাব হচ্ছে, সে অবচেতনভাবেই কামনা করেÑসকল ভালো জিনিস তার কাছে এসে একত্রিত হোক, যাবতীয় অর্থ সম্মান প্রভাব-প্রতিপত্তি তার হাতে চলে আসুক ইত্যাদি। এ কামনার জন্যেই তো তার চাহিদা সবসময় ঊর্ধ্বমুখী। চাওয়া শেষ হয় না কখনো। এক চাহিদা পূর্ণ হল তো আরেক চাহিদা এসে হাজির। এক লক্ষ্য অর্জিত হল তো আরেক লক্ষ্যের পেছনে অবিরাম ছুটে চলা। এটা স্বাভাবিকতা। এখান থেকেই জন্ম নিয়ে থাকে হিংসাÑএ সম্মান কিংবা এ পদ অথবা এত এত অর্থ আমার কাছে না এসে তার কাছে কেন? তা আমার কাছে চলে আসুক। তা যদি না হয় কমপক্ষে তার কাছ থেকে হারিয়ে যাক। এটাই হিংসা।

    পবিত্র কুরআনের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে বনী ইসরাঈল তথা ইহুদী-খ্রিস্টানদের আলোচনা। জাতি হিসেবে তাদের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ। তাদেরকে আল্লাহ তাআলা দান করেছিলেন অজ¯্র বড় বড় নিআমত। আম্বিয়ায়ে কেরাম আলাইহিমুস সালামের পবিত্র কাফেলার প্রায় সকলেই ছিলেন বনী ইসরাঈল গোত্রভুক্ত। তাদেরকে দেয়া হয়েছিল আসমানী অনেক কিতাব। কিন্তু এতকিছু পেয়েও তারা শোকরগুজার ছিল না। ছিল না আল্লাহ তাআলার হুকুমের পূর্ণ অনুগত। তাঁর বিধান তারা লঙ্ঘন করেছে। আসমানী কিতাবে হয়ত বিকৃতি ঘটিয়েছে, কিংবা তার ওপর আমল করা ছেড়ে দিয়েছে। নবীদেরকে নানাভাবে কষ্ট দিয়েছে। এমনকি তাদের হাতে প্রাণও গেছে অনেক নবীর। পরিণামে তারা আমাদের কাছে আজ আলোচিত অভিশপ্ত এবং আল্লাহর গজবে নিপতিত জাতি হিসেবে। তাদের কিতাবসমূহে শেষ নবীর কথা ছিল। তাঁর চরিত্র ও বৈশিষ্ট্যের বিবরণ ছিল। হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ তাআলা যখন শেষ নবী হিসেবে পাঠালেন, তখন তারা তাঁকে চিনতেও পারল। সে চেনাও কেমন? পবিত্র কুরআনের বর্ণনানুসারেÑনিজের ছেলেসন্তানকে মানুষ যতটুকু শক্তির সঙ্গে চেনে, তাদের চেনা ছিল আরও গভীর, আরও শক্তিমান। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেবলই ইসরাঈলী না হওয়ার কারণে তারা একদিকে তাঁর নবুওত মেনে নিতে অস্বীকার করে। উপরন্তু যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে, হযরত মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেষ নবী হিসেবে মেনে নিয়েছে, তারা যেন এ সঠিক ও সরল পথ ছেড়ে আগের ভ্রান্ত ও বাঁকা পথে ফিরে যায়Ñতারা সে কামনাও করত। এর মূলে ছিল কেবলই হিংসাÑসঠিক দ্বীন আমরা মানি না তো তারা মানবে কেন? পবিত্র কুরআনের ভাষায়Ñ

    وَدَّ كَثِیْرٌ مِّنْ اَهْلِ الْكِتٰبِ لَوْ یَرُدُّوْنَكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ اِیْمَانِكُمْ كُفَّارًا   حَسَدًا مِّنْ عِنْدِ اَنْفُسِهِمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُمُ الْحَقُّ.

    আহলে কিতাবদের অনেকেই তাদের নিকট সত্য স্পষ্ট হওয়ার পরও হিংসাবশত কামনা করেÑতোমাদের ঈমান আনার পরও যদি তারা তোমাদের কাফের  অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে পারত! Ñসূরা বাকারা (২) : ১০৯

    আরেকজনের কোনো নিআমত দেখে তা বিলুপ্তির কামনা করা হিংসার প্রথম ধাপ।  এর পরের ধাপ হচ্ছে, মনে যখন কারও প্রতি হিংসা জন্ম নেয় তখন এর চাহিদা অনুযায়ী কাজ করা। তা হতে পারে তার কোনো ক্ষতি করার মধ্য দিয়ে, হতে পারে তার কোনো ক্ষতিতে আনন্দ প্রকাশের মধ্য দিয়ে। এসব যেহেতু তার কর্ম। তাই এর কারণে সে অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে। জবাবদিহিতার মুখোমুখি হবে তখনো, যদি সে তার হিংসার কথা মুখে প্রকাশ করে ফেলে। যতটুকু মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়, অর্থাৎ অনিচ্ছাকৃতভাবে কারো প্রতি হিংসার ভাব উদ্রেক হওয়াÑতাতে গোনাহ হবে না।

    তবে গোনাহ হোক আর নাই হোক, হিংসা অবশ্যই মানবচরিত্রের একটি মন্দ দিক। মনের হিংসার দাবিতে কেউ যদি অন্যায় আচরণ করে, ক্ষতি করার সুযোগ খোঁজে তাহলে তা যে নিন্দনীয়Ñতা কে অস্বীকার করবে! হিংসা যে মানুষকে অন্যায়ে উৎসাহিত করেÑতাও জানা কথা। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শিখিয়েছেন হিংসুকের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনাÑ

    وَ مِنْ شَرِّ حَاسِدٍ اِذَا حَسَدَ.

    এবং (আমি আশ্রয় চাই) হিংসুকের অনিষ্ট থেকে, যখন সে হিংসা করে। Ñসূরা ফালাক (১১৩) : ৫

    আর যদি বিষয়টি এ পর্যায়ে না গড়ায়, হিংসা কারও মনের গভীরেই লালিত হতে থাকে, তাহলে তাও নিন্দনীয়। আরবী ভাষার উক্তিÑ

    الحاسد يحترق بنار الحسد.

    অর্থাৎ হিংসুক হিংসার আগুনে জ্বলে। কারণ হিংসা কারও কোনো ক্ষতি করতে পারে না। যাকে এগিয়ে যেতে দেখে কেউ হিংসা করছে, সে তো এগিয়েই যায়। হিংসা তার এগিয়ে চলার গতি রোধ করতে পারে না। কারও মনে সৃষ্ট হিংসা যদি অন্য কারও নিআমতকে বিনাশ করতে পারত, তাহলে তো জগতের কেউই ভালো কিছু হাছিল করতে পারত না। দাঁড়াতে পারত না কারও সম্মান প্রতিপত্তি সুনাম যশ খ্যাতি সুসন্তান অর্থ বিদ্যাবুদ্ধি দ্বীনদারী পরহেজগারি কিছুই। কথায় বলে নাÑশকুনের দুআয় গরু মরে না! আত্মচিন্তায় বিভোর শকুনের কামনা যেমন গরুর মৃত্যু ডেকে আনে না, তেমনি হিংসুকের হিংসাও কারও নিআমত ছিনিয়ে নিতে পারে না। হিংসাকে অগ্রাহ্য করে প্রতিনিয়ত যখন কেউ এগিয়ে চলে তখন বাড়তে থাকে হিংসার আগুন। সে আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাই হতে থাকে হিংসুকের অন্তর। কথা হল, হিংসার আগুন কি শুধু হিংসুকের অন্তরকেই জ্বালায়? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস থেকে আমরা এর উত্তর পাইÑ

    إِيّاكُمْ وَالْحَسَدَ فَإِنّ الْحَسَدَ يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ كَمَا تَأْكُلُ النّارُ الْحَطَبَ أَوْ قَالَ الْعُشْبَ.

    তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থেকো। কারণ হিংসা নেক আমলসমূহকে গ্রাস করে নেয়, যেভাবে আগুন গ্রাস করে লাকড়ি (অথবা ঘাস)। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯০৫

    শুকনো ঘাস আর লাকড়ি যেমন আগুনের সামনে অসহায়, হিংসার আগুনের সামনে মানুষের নেক আমলও তেমনি অসহায়। হিংসার আগুন গ্রাস করে নেয় ব্যক্তির যাবতীয় নেক আমল। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরেক হাদীসে হিংসাকে তুলনা করেছেন পানির সঙ্গে। দুই হাদীসের দুই উপমা বাহ্যত বিপরীতমুখী মনে হলেও এ বিবেচনায় তো অবশ্যই একÑআগুন যেমন লাকড়ি আর ঘাসকে জ্বালিয়ে শেষ করে দেয়, পানিও তেমনি আগুনকে নিভিয়ে দেয় মুহূর্তেই। আগুনের সামনে লাকড়ি আর ঘাসের প্রাচুর্য যেমন কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়, পানির সামনেও আগুনের বিশালতা উল্লেখ করার মতো কিছু নয়। হাদীসের ভাষ্য এমনÑ

    إِنّ الْحَسَدَ يُطْفِئُ نُورَ الْحَسَنَاتِ.

    সন্দেহ নেই, হিংসা নেক আমলসমূহের নূর ও আলোকে নিভিয়ে দেয়। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯০৬

    হিংসা তাই সর্বাবস্থায় পরিত্যাজ্য। এ হিংসা কোনো মুমিনের চরিত্র হতে পারে না। হাদীসের বক্তব্য এমনইÑ

    لَا يَجْتَمِعَانِ فِي قَلْبِ عَبْدٍ الْإِيمَانُ وَالْحَسَدُ.

    কোনো বান্দার হৃদয়ে ঈমান ও হিংসা একত্রিত হতে পারে না। Ñসুনানে নাসাঈ, হাদীস ৩১০৯

    অবশ্য হিংসার একটি রূপ এমনও, যেখানে কারও অমঙ্গল কামনা নেই। কারও ভালো কোনো কিছু দেখে তার বিনাশ নয়, বরং নিজের জন্যেও অর্জিত হোক অনুরূপ ভালো ও কল্যাণÑএই কামনা রয়েছে সেখানে। প্রথমটিকে আরবীতে বলে ‘হাসাদ’ আর পরেরটিকে বলা হয় ‘গিব্তা’, বাংলায় যাকে আমরা বলি ‘ঈর্ষা’। এই ঈর্ষা দোষণীয় কিছু তো নয়ই, বরং ক্ষেত্রবিশেষে প্রশংসনীয়ও। ঈর্ষা অনেক সময় আমলের আগ্রহ সৃষ্টি করে। নেক কাজে উদ্ধুদ্ধ করে। ভালো কাজে ও কল্যাণকর ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে। মুমিন বান্দা যখন কাউকে বারবার হজ্ব-উমরা পালন করতে দেখে কিংবা অল্প বয়সে কাউকে বায়তুল্লাহ যিয়ারতের সৌভাগ্য হাসিল করতে দেখে, সে তখন আবেগে আপ্লুত হয়, তার মনে ঈর্ষা জন্ম নেয়Ñএ সৌভাগ্য যদি আমারও হাসিল হতো! এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনÑ

    لاَ حَسَدَ إِلاَ عَلَى اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ آتَاهُ اللهُ الْكِتَابَ وَقَامَ بِهِ آنَاءَ اللّيْلِ وَرَجُلٌ أَعْطَاهُ اللهُ مَالاً فَهْوَ يَتَصَدّقُ بِهِ آنَاءَ اللّيْلِ وَالنّهَار.

    হিংসা (অর্থাৎ ঈর্ষা) কেবল দুই ব্যক্তিকেই করা যায়Ñআল্লাহ যাকে কুরআন হিফ্জ করিয়েছেন আর সে রাতের বিভিন্ন প্রহরে নামাযে দাঁড়িয়ে তা তিলাওয়াত করে, আর যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন এবং সে তা দিনে-রাতে দান করে। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ৫০২৫

    কথা হল, এ ঈর্ষাকে তো আমরা প্রশংসিত হিংসাও বলতে পারি। কিন্তু যে হিংসা নিন্দনীয়, যে হিংসা তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয় আমাদের যাবতীয় অর্জন, আগুনের মতোই গ্রাস করে নেয় আমাদের নেক আমল, যা পানির মতো নিভিয়ে দেয় ঈমান ও আমলের নূর, কারও মনে যখন তা দেখা দেবে তখন তা প্রতিহত করার উপায় কী? অন্য সকল ক্ষেত্রের মতো এখানেও প্রিয় নবীজীর প্রিয় কথামালাই তো আমাদের জন্যে চূড়ান্ত নির্দেশনা। এক হাদীসে তিনি বলেছেন

    دَبّ إِلَيْكُمْ دَاءُ الأُمَمِ قَبْلَكُمْ: الحَسَدُ وَالبَغْضَاءُ…

    পূর্ববর্তী জাতিসমূহের রোগব্যাধি তোমাদের কাছেও এসে পৌঁছেছে। তা হল হিংসা-বিদ্বেষ। এটা মু-িয়ে দেয়। আমি চুল মু-ানোর কথা বলছি না। বরং তা দ্বীনকে মু-িয়ে দেয়। যার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ, যতক্ষণ তোমরা ঈমান না আনবে ততক্ষণ জান্নাতে যেতে পারবে না। আর যতক্ষণ পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি না হবে ততক্ষণ তোমাদের ঈমানও পূর্ণ হবে না। আমি তোমাদের বলে দিইÑকীসের মাধ্যমে তা অর্জিত হবে? তোমরা তোমাদের মাঝে সালামের প্রসার ঘটাও। জামে তিরমিযী, হাদীস ২৫১০

    আরেকটি হাদীসে তাঁর নির্দেশনা এমন

    لاَ تَقَاطَعُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَحَاسَدُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللهِ إِخْوَانًا.

    তোমরা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না, একে অন্যের পেছনে লেগে থেকো না, একে অন্যের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করো না। বরং তোমরা আল্লাহর বান্দা হয়ে যাও, পরস্পর ভাই-ভাই হয়ে যাও। জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৩৫

    হাদীস দুটির বক্তব্যে কোনো অস্পষ্টতা নেই। হিংসা-বিদ্বেষ মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে, সৃষ্টি করে দূরত্ব ও শত্রুতা।

    উল্লেখিত দ্বিতীয় হাদীসে যেমন এসবকে দূরে ঠেলে দিয়ে পরস্পর মিলেমিশে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সমাজ গঠনের নির্দেশনা রয়েছে, প্রথম হাদীসে তেমনি এ ভ্রাতৃত্ববোধকে জাগ্রত করা এবং সর্বদাই একে সজাগ ও সচেতন রাখার জন্যে বেশি বেশি সালামের কথাও বলা হয়েছে। সালামের প্রচলন যখন বেশি হবে পারস্পরিক হৃদ্যতা ও ভালোবাসা তখন সৃষ্টি হবেই। আর হৃদয় দিয়ে যখন কেউ কাউকে ভালোবাসতে পারবে, তখন আর তার ভালো কোনো কিছু দেখে সে কুঞ্চিত হবে না, তার মনে হিংসা দানা বাঁধবে না, বন্ধুর ভালো জিনিসটির বিনাশ কামনা করবে না। তাই কারও প্রতি যদি মনে হিংসা জন্ম নেয় বিশেষভাবে তার সঙ্গে যদি সালাম-কালাম বাড়িয়ে দেয়া যায়, মহব্বত সৃষ্টির লক্ষ্যে তাকে কিছু হাদিয়া দেয়া যায় তাহলে তা হিংসার ঘায়ে মলমের মতো কাজ করতে পারে। মনকে হিংসামুক্ত রাখার জন্যে প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ দুআটিও সবিশেষ উল্লেখযোগ্যÑ

    رَبِّ تَقَبّلْ تَوْبَتِى وَاغْسِلْ حَوْبَتِى وَأَجِبْ دَعْوَتِى وَثَبِّتْ حُجّتِى وَاهْدِ قَلْبِى وَسَدِّدْ لِسَانِى وَاسْلُلْ سَخِيمَةَ قَلْبِى.

    প্রভু আমার! আপনি আমার তওবা কবুল করুন, আমার পাপরাশি ধুয়ে দিন, আমার ডাকে সাড়া দিন, আমার দলীল-প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত করুন, আমার অন্তরকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমার যবানকে সঠিক রাখুন আর আপনি আমার অন্তরের যাবতীয় কলুষতা দূর করে দিন। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৫১২

    জানুয়ারিতে জাপানের প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া

    জাপানের কেন্দ্রীয় সরকার এবং স্থানীয় সরকার আগামী মাসে প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র অপসারণ মহড়া করবে। ২২ জানুয়ারি টোকিও ডোম স্টেডিয়ামের বিনোদন পার্ক এবং সাবওয়ে স্টেশনে মহড়াটি অনুষ্ঠিত হবে।  একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র জাপানের ভূখন্ডে আঘাত হানতে যাচ্ছে এমন দৃশ্যপটকে মহড়ার সামনে রাখা হবে। দেশ জুড়ে জে-এলার্ট ক্ষেপণাস্ত্র সতর্কতা জারি হওয়ার পর প্রায় ২৫০ মানুষ দ্রুত কোনো ভবনে বা ভূগর্ভে নিরাপদ আশ্রয় নেবেন।

    কেন্দ্রীয় সরকার মার্চ থেকে দেশের ২৫টি পৌরসভা নিয়ে যৌথ ভাবে মহড়া করে আসছে। কিন্তু ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সামান্যই মহড়া হয়েছে কেননা তার জন্যে পথঘাট বন্ধ রাখা সহ বিভিন্ন সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়। এনএইচকে।

    রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ খালেদা জিয়ার খালাস দাবি

    জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে তাকে খালাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান।
    খালেদা জিয়ার পক্ষে পঞ্চম দিনের মতো যুক্তি উপস্থাপন শেষে তার আইনজীবী এই দাবি জানান। যুক্তি উপস্থাপনে আদালতে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কুয়েতের টাকা রাখার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলেছেন তার প্রমাণশূন্য। শুধু তাই নয়, তার (খালেদা জিয়া) বিরুদ্ধে লিখিত ও মৌখিক কোনো প্রমাণও নেই। রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশীবাজারে অস্থায়ী আদালতে পঞ্চম বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামানের এজলাসে গত ২০ ডিসেম্বর যুক্তিতর্কের শুনানি শুরুর পর পাঁচ কার্যদিবসের চারদিনই খালেদার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন এই আইনজীবী। গতকাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে বেলা ১১ টা ২০ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন রেজাক খান। মাঝে ১৫ মিনিটের বিরতি দিয়ে দুপর পৌনে দুইটা পর্যন্ত যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করেন তিনি।
    চারদিন নিজের যুক্তি তুলে ধরে শেষে এসে তিনি আদালতকে বলেন, এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তাকে খালাস দেওয়ার দাবি জানাই। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে কুয়েত থেকে আসা টাকা আত্মসাৎ করেছেন এর কোন প্রমাণ নেই। মামলার কোনো সাক্ষীও এ বিষয় কিছু বলেন নাই। মামলার এফআইআর-এ আছে বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তা মোটেও ঠিক নয়। আর এফআইআর-এ কথা যে বেদের মত বিশ্বাস করতে হবে তাও ঠিক না।
    রেজাক খানের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষ হলে বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষে নতুন করে যুক্তি তুলে ধরা শুরু করেন তার আরেক আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনি প্রথম বারের মতো যুক্তি-তর্ক শুরু করলেও দিনের শুনানি শেষ হওয়ার আগে মাত্র ১৫ মিনিট সময় পান। বিচারক আজ বৃহস্পতিবারও তার যুক্তি উপস্থাপনের সময় রেখেছেন। ১৫ মিনিটের বক্তব্যে খন্দকার মাহবুব বলেন, আমরা যাই বলি না কেন, এই মামলার স্বাক্ষী প্রমাণে যাই থাকুক না কেন, বলতে হবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা; এবং এই মামলার উদ্দেশ্য হল যে কোনোভাবেই বলতে হবে- এটাই চোর, আমাদেরকে চোর বলতে হবে। আদালতের দিনের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণে দেখা যায়, কোনো বিষয়েই খালেদা জিয়ার বিপক্ষে বলা হয়নি। তিনি যে জড়িত ছিলেন না, সেটাই বরং প্রমাণিত হয়। সংবিধান অনুযায়ী ওই লেনদেনের সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা প্রাইভৈট ট্রাস্ট। রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য, বেগম জিয়ার চরিত্র হননের জন্য, তাকে জনগণের সামনে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য দূরভিসন্ধিমূলকভাবে এই মামলা দায়ের করা হয়। এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে আসা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে মোট সাত দিন বক্তব্য দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
    গত ৫ ডিসেম্বর তার বক্তব্য শেষ হলে বিচারক যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ঠিক করেন। যুক্তিতর্ক শুনানির শুরুর দিন ২০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছিলেন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। পরের কার্যদিবস থেকে আসামিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরা শুরু হয়। মামলার প্রধান আসামি খালেদার পক্ষে আইনজীবী রেজাক খান ও খন্দকার মাহবুব হোসেন ছাড়াও তার আরও দুই আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের যুক্তি উপস্থাপন করার কথা রয়েছে।
    পঞ্চম দিনে মামলার প্রধান আসামির এক আইনজীবীর যুক্তি উপস্থাপন শেষ হওয়ার পর দুদকের আইনজীবী কাজল সাংবাদিকদের বলেন, তারা বলছে খালেদা জিয়া কোনো অন্যায় করেনি। আমরা বলছি প্রধানমন্ত্রীর যে দায়িত্ব, সাংবিধানিকভাবে অর্থ-সম্পদ সব কিছুর ব্যাপারে দায়-দায়িত্ব তার। অর্থ যেটা এসেছিল- তা দুইভাগে ভাগ করে এক ভাগ তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানকে, আরেকভাগ তারেক রহমানকে দিয়েছিলেন। তারা বলছে (খালেদা জিয়ার পক্ষ) মোস্তাফিজুর রহমান বা তার সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে কেন মামলা হয়নি। এসবের জবাব আমরা দেব। মোস্তাফিজুরর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করা না করা প্রসিকিউশনের ব্যাপার। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এ মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরু করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। খালেদা জিয়া এ মামলায় জামিনে আছেন। তারেক রহমান গত নয় বছর ধরে দেশের বাইরে, তার বিরুদ্ধে এ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ রয়েছেন কারাগারে।

    বড়দিনে কুকুরদের বিরিয়ানি ভোজ

    বড়দিনের ছুটি একটু ধুমধাম করেই করা হলো। ব্যানারে লিখে দেয়া হলো ‘আজ আমাদের পিকনিক’। ১৫০ কেজি চাল আর ৫০ কেজি পনির দিয়ে রান্না হলো বিরিয়ানি। সেই বিরিয়ানি কিন্তু দেয়া হলো রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বেওয়ারিশ কুকুরদের! ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতে বড়দিন উপলক্ষে গত সোমবার ওই ভিন্ন ধর্মী আয়োজন করা হয়। সেখানকার পশুপতি অ্যানিমেল লাভার্স সোসাইটি নামে একটি পশুপ্রেমী সংগঠন বিরিয়ানি রান্না করে শহরের বেওয়ারিশ কুকুরগুলোকে খাওয়ায়। পাঁচটি ভ্যানে বিশাল বিশাল পাত্রে বিরিয়ানি তোলা হয়। এরপর রাস্তায় ঘুরে ঘুরে কুকুরদের খুঁজে বের করা হয়। ছোট ছোট পাত্রে দেওয়া হয় বিরিয়ানি। এভাবে এক হাজারেরও বেশি কুকুরকে খাওয়ানো হয়। তবে পথচারীদের চোখ আটকে গেছে ব্যানারে ‘আজ আমাদের পিকনিক’ লেখা দেখে। সকাল থেকে শুরু হয় এই কুকুর খাওয়ানো। তবে বিকেলের মধ্যেই বিরিয়ানি শেষ হয়ে যায়। ফের ২০ কেজি চাল ও ১০ কেজি পনির দিয়ে বিরিয়ানি রান্না করা হয়। এরপর বিতরণ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। অ্যানিমেল লাভার্স সোসাইটি অন্যতম কর্ণধার অর্পিতা চৌধুরী বলেন, আমরা একটু অন্যভাবে বড়দিন সেলিব্রেট করলাম। আমরা রাস্তার কুকুরদের সঙ্গেই পিকনিক করে ফেললাম বলতে পারেন। এনডিটিভি।

    জেরুজালেম নিয়ে ইসরাইলের নতুন ষড়যন্ত্র

    জেরুজালেম নিয়ে ইসরাইল নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। জেরুজালেমে রাজধানী করার পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য অন্তত দশটি দেশের সাথে যোগযোগ করছে ইসরাইল সরকার। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পর গুয়েতোমালার সমর্থন পাওয়ার পর দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিজিপি হতোবেলি গতকাল মঙ্গলবার সরকারি বেতারে এ কথা বলেন। উপমন্ত্রী বলেন, রাজধানী স্থানান্তরের পক্ষে সমর্থনের জন্য আমরা ইউরোপীয় দেশসহ কমপক্ষে দেশটি দেশের সাথে কথা বলেছি। যদিও তিনি দেশগুলোর নাম বলেননি। তবে ইসরাইলের কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে সরকারি বেতার জানায়, ফিলিপাইন, হন্ডুরাস, রোমানিয়া, দক্ষিণ সুদান তাদের মধ্যে অন্যতম। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের দুই-তৃতীয়াঙ্ক সদস্য যদিও যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী স্থানান্তরের ঘোষণার বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। জেরুজালেম নগরীকে ইসরাইলের রাজধানী হিসাবে যে স্বীকৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তা প্রত্যাখ্যান করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। ওই স্বীকৃতি প্রত্যাহারের আহবান জানিয়ে সাধারণ পরিষদের জরুরী অধিবেশনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটাভুটিতে গৃহীত প্রস্তাবটিতে বলা হয়েছে, এই নগরীর মর্যাদার বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত অকার্যকর ও বাতিলযোগ্য। প্রস্তাবের বয়ানে বলা হয়েছে জেরুজালেম শহর নিয়ে যে কোনরকম সিদ্ধান্ত এই ভোটের মাধ্যমে বাতিল বলে গ্রাহ্য হবে। নামধাম লিখে রাখা এবং অর্থনৈতিক সহায়তা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির পরেও, ১২৮টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে, আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ৯টি দেশ। ভোটদানে বিরত ছিল ৩৫টি দেশ। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, সউদী আরব, জাপানসহ যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ। ফিলিস্তিনের বায়তুল মুকাদ্দাস ইস্যুতে আমেরিকার সিদ্ধান্তকে অনেকটা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বেশিরভাগ সদস্য দেশ। যেসব দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে তাদের তালিকা তুলে ধরা হলো ঃ আফগানিস্তান, আলবেনিয়া, আলজেরিয়া, আন্দোরা, অ্যাঙ্গোলা, আর্মেনিয়া, অস্ট্রিয়া, আজারবাইজান, বাহরাইন, বাংলাদেশ, বারবাডোস, বেলারুশ, বেলজিয়াম, বেলিজ, বলিভিয়া, বতসোয়ানা, ব্রাজিল, ব্রুনাই, বুলগেরিয়া, বুরকিনাফাসো, বুরন্ডি, কেপভার্দে, ক্যাম্বোডিয়া, চাদ, চিলি, চীন, কমরোস, কঙ্গো, কোস্টারিকা, আইভরি কোস্ট, কিউবা, সাইপ্রাস, উত্তর কোরিয়া, ডেনমার্ক, জিবুতি, ডোমিনিকা, ইকুয়েডর, মিশর, ইরিত্রিয়া, এস্তোনিয়া, ইথিওপিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, গ্যাবোন, গাম্বিয়া, জার্মানি, ঘানা, গ্রিস, গ্রানাডা, গিনি, গায়ানা, আইসল্যান্ড, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, জাপান, জর্দান, কাজাখস্তান, কুয়েত, কিরগিজস্তান, লাওস, লেবানন, লাইবেরিয়া, লিবিয়া, লিচটেনস্টেইন, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ। এছাড়া, প্রস্তাবের পক্ষে আরো ভোট দিয়েছে মাদাগাস্কার, মালয়েশিয়া, মাল্লীপ, মালি, মাল্টা, মৌরিতানিয়া, মরিশাস, মোনাকো, মন্টেনেগ্রো, মরক্কো, মুজাম্বিক, নামিবিয়া, নেপাল, নেদারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, নিকারাগুয়া, নাইজার, নাইজেরিয়া, নরওয়ে, ওমান, পাকিস্তান, পাপুয়া নিউগিনি, পেরু, পর্তুগাল, দক্ষিণ কোরিয়া, কাতার, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্যা গ্রানাডিয়ান্স, সউদী আরব, সেনেগাল, সার্বিয়া, সিসিলি, সিঙ্গাপুর, সেøাভাকিয়া, সেøাভেনিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, স্পেন, শ্রীলঙ্কা, সুদান, সুরিনাম, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, সিরিয়া, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, মেসিডোনিয়া, তিউনিশিয়া, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ব্রিটেন, তানজানিয়া, উরুগুয়ে, উজবেকিস্তান, ভেনিজুয়েলা, ভিয়েতনাম, ইয়েমেন এবং জিম্বাবুয়ে। অন্যদিকে প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার এই নয় দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, গুয়াতেমালা, হুন্ডুরাস, মাক্রেসয়া, নাইরু, পালাও, টোগো, মার্শাল দ্বীপ। মজার ব্যাপার হলো এগুলো কোন পরিচিত দেশ নয়। সবাই আমেরিকার দান খয়রাতে চলে। সুতরাং বলা যায়, পরিচিত কোন দেশ ইসরাইল আমেরিকার পক্ষে নাই। এছাড়া ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল এন্টিগুয়া-বারবুদা, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, বাহামাস, বেনিন, ভুটান, বসনিয়া-হারজেগোভিনা, ক্যামেরুন, কানাডা, কলম্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, ডোমিনিক্যান প্রজাতন্ত্র, ইকুইটোরিয়াল গিনি, ফিজি, হাইতি, হাঙ্গেরি, জ্যামাইকা, কিরিবাতি, লাটভিয়া, লেসেথো, মালাউয়ি, মেক্সিকো, পানামা, প্যারাগুয়ে, ফিলিপাইন, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, রুয়ান্ডা, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ সুদান, ত্রিনিদাদ-টোবাগো, টুভ্যালু, উগান্ডা ও ভানুয়াতি। এএফপি।

    আদালতে খালেদা জিয়া

    Posted by admin on December 26
    Posted in Uncategorized 

    আদালতে খালেদা জিয়া

    জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে বকশীবাজারের বিশেষ আদালতে পৌঁছেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
    বিএনপির চেয়ারপারসনের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
    শায়রুল কবীর জানান, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অসমাপ্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন বেলা ১১টার দিকে তার গুলশানের বাসা থেকে বের হয়ে আদালতের উদ্দেশে রওনা দেন।

    উ. কোরীয় ফ্যান ক্লাব খুলেছে জাপানি নারীরা
    উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে যে হারে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলছে, তাতে যেকোনো সময় পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে, এরকম একটি আতঙ্কের মধ্যে আছে জাপান। সেকারণে খুবই সতর্ক অবস্থায় রয়েছে দেশটি। কিন্তু এর মধ্যেই কয়েকজন জাপানি নারী গড়ে তুলেছেন ‘উত্তর কোরিয়া ফ্যান ক্লাব’। এর সব সদস্যই নারী বলে জানা গেছে।
    উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচির কারণে যে কয়েকটি দেশ সবচেয়ে বেশি হুমকি ও আতঙ্কের মুখে তার একটি হলো প্রতিবেশী জাপান। পিয়ংইয়ং যেসব ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় সেগুলোর বেশিরভাগই নিক্ষেপ করা হয় এই জাপানের উপর দিয়ে। তবে জাপানে উত্তর কোরিয়া ফ্যান ক্লাবের নেতা বলছেন, ক্লাবটি গঠন করার পর থেকে অনেকেই তাদের কড়া সমালোচনা করছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে তার দলের সদস্যদেরকে হুমকি-ধমকিও দেয়া হচ্ছে। এমনকি অনেকে এমন অভিযোগও করছেন যে, তারা নাকি কিম জং উনের গুপ্তচর হিসেবেও কাজ করছেন।
    কিন্তু এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেছেন, তারা উত্তর কোরিয়ার নেতার রাজনীতিকে সমর্থন করেন না। তবে এই কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের শিল্প সংস্কৃতি ও সঙ্গীতকে তারা খুবই পছন্দ করেন। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার সংস্কৃতিই তাদের আগ্রহের কেন্দ্রে। তাই তারা উত্তর কোরিয়ার সামরিক পোশাকের আদলে জামা কাপড় পরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়ার গান বাজনা ও শিল্প সংস্কৃতিকে তুলে ধরেন।
    ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা চুনহুন বলেন, তারা যখন এই ক্লাবটি গঠন করেন তখন অনেকেই তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে মেসেজ দিয়েছিলেন। এসব মেসেজ তারা পেয়েছেন জাপানের দক্ষিণপন্থী বিভিন্ন গ্রুপের কাছ থেকে। উত্তর কোরিয়ার একটি নারী ব্যান্ড দল মোরানবং এর অনুসরণে এই ফ্যান ক্লাবটি তৈরি হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন এই মোরানবং ক্লাবের সদস্যদের নির্বাচন করে থাকেন। মোরানবংকে দেখা হয় উত্তর কোরিয়ার ‘স্পাইস গার্লস’ হিসেবে। ক্লাবের প্রধান চুনহুন বলেন, জাপানে তাদের যেমন সমালোচক রয়েছে তেমনি রয়েছে প্রচুর ভক্ত সমর্থকও। বিবিসি।

     প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খালেদা জিয়ার উকিল নোটিশ

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উকিল নোটিস পাঠিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সৌদি আরবে জিয়া পরিবারের সম্পদ নিয়ে বক্তব্য দেয়ার কারণে মঙ্গলবার এই নোটিশ পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    বুধবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, এই উকিল নোটিশের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।
    তিনি জানান, বিএনপির চেয়ারপারসের আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন গতকাল ডাকযোগে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এই উকিল নোটিস পাঠান। যেখানে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ওই বক্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে ও তা সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করতে বলা হয়েছে।

    যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো প্রয়োগ

    আরব দেশগুলোর নিন্দা : মধ্যস্থতা করার আগ্রহ প্রকাশ রাশিয়ার জেরুজালেম ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত এক খসড়া প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেওয়ার ও ওই শহরে মার্কিন দূতাবাস স্থাপনের পরিকল্পনার বিরোধিতা করে এই খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল।
    খবরে বলা হয়, এ প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে, সেটা আগে থেকেই অনুমান করা হচ্ছিল। গত ছয় বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করলো। নিরাপত্তা পরিষদের খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিল মিসর। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, জেরুজালেমের মর্যাদা প্রসঙ্গে যেকোনও সিদ্ধান্তের ‘কোন আইনি ভিত্তি নেই, এ সিদ্ধান্ত অকার্যর এবং একে প্রতিহত করতে হবে’।
    ট্রাম্পের ঘোষণার বিরোধিতা থেকে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হলেও এতে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র বা ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে জেরুজালেমের অবস্থান নিয়ে স¤প্রতি যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর ‘তীব্র নিন্দা’ জানানো হয় এতে।
    নিরাপত্তা পরিষদে ভোটগ্রহণ শেষে জাতিসংঘে মার্কিন স্থায়ী প্রতিনিধি নিক্কি হ্যালে বলেন, ‘আজ নিরাপত্তা পরিষদে যা দেখলাম, তা স্পষ্টতই অপমান। আমরা এটা ভুলে যাবো না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিনের জন্য জাতিসংঘ যে ভালোর চেয়ে খারাপটাই বেশি করছে, এটা তারই আরেকটি প্রমাণ। ইহুদিদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক মাতৃভূমি হিসেবে জেরুজালেম ছাড়া তাদের আর কোনও রাজধানী কখনোই ছিল না। তবে জেরুজালেম ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিলেও মার্কিন মিত্রদেশগুলোসহ পরিষদের বাকি ১৪টি দেশই এতে সমর্থন দিয়েছে। এ থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেওয়ার পরই এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল বিভিন্ন দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণা ফিলিস্তিন-ইসরাইল সঙ্কটকে আরও ঘনীভূত করবে বলেই আশঙ্কার কথা জানান বিশ্লেষকরা।
    জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেন, ‘আমরা সবাই যখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে শান্তিপূর্ণ একটি পরিকল্পনার প্রত্যাশা করছিলাম, তখন দেশটি শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত ইসরাইলকে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আরও বেশি অপরাধ করতে এবং আমাদের ভূমিতে তাদের দখলদারি মনোভাব অব্যাহত রাখতে উৎসাহিত করবে।’
    ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের একজন মুখপাত্রও যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, এমন সিদ্ধান্ত ‘অগ্রহণযোগ্য এবং এটা আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ। কারণ এটা আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে অসম্মান করেছে।’
    তবে নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করার জন্য নিক্কি হ্যালেকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এক টুইটে নেতানিয়াহু বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত হ্যালেকে ধন্যবাদ জানাই। আপনি সত্যের আলো জ্বালিয়ে অন্ধকার দূর করেছেন। আপনি একা হয়েও পরাজিত করেছেন অনেককে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, আপনাকে ধন্যবাদ। নিক্কি হ্যালে, আপনাকে ধন্যবাদ।’
    উল্লেখ্য, গত ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়ে মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির কথাও জানান ট্রাম্প। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
    আরব দেশগুলোর নিন্দা
    জেরুজালেম প্রশ্নে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উত্থাপিত প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো দেওয়ার সমালোচনা করেছে আরব দেশগুলো। প্রস্তাবটিতে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতিসহ যেকোনও ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত বাতিলের কথা বলা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র ভেটো প্রদানের পর দেশটির সমালোচনা করেছে মিসর, ফিলিস্তিন, কুয়েত ও কাতার।
    মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আহমেদ আবু যিয়েদ এক লিখিত বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান ও আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের বিবেককে নাড়া দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো প্রদান করায় মিসর দুঃখ পেয়েছে।’ জেরুজালেমের মর্যাদা রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য জাতিসংঘে আরব দেশগুলো একত্র হবে বলেও উল্লেখ করেন আবু যিয়েদ।
    ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনা যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো প্রদানের নিন্দা জানিয়ে একে ‘আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের প্রতি উপহাস ও ইসরাইলের দখলদারিত্ব ও আগ্রাসনের সমর্থন’ হিসেবে উল্লেখ করেন। ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ওয়াফা এ খবর জানায়। আবু রুদেইনা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের বিরক্তির উদ্রেগকারী এই ভেটো যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে।’
    ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী আন্দোলনের সংগঠন হামাস একটি লিখিত বিবৃতিতে বলেছে, ‘জেরুজালেম চিরদিনই ফিলিস্তিনের রাজধানী। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সিদ্ধান্ত এই সত্যকে পরিবর্তন করতে পারবে না।’
    বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়, আরব ও ইসলামি বিশ্বের প্রতি জেরুজালেমকে সংরক্ষণের আহ্বান জানায় হামাস। একই সঙ্গে জেরুজালেমের বর্তমান অবস্থার পরিবর্তনে ইসরাইলকে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করে দেয় সংগঠনটি।
    কুয়েত পার্লামেন্টের স্পিকার মারজুক আলী আল গানিম এক লিখিত বিবৃতিতে বলেন, ‘জেরুজালেমকে ইসরাইলের বলে স্বীকৃতির একতরফা পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত প্রমাণ করেছে আমরা একা নই। আমাদের আসল লক্ষ্য হলো একটি মুক্ত বিশ্ব।’ বিবৃতিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আন্তর্জাতিক গণভোটের মতো একটি প্রস্তাব উত্থাপন করায় মিসরকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
    আন্তর্জাতিক মুসলিম পন্ডিতদের সংগঠন-আইইউএমএস’র পক্ষ থেকে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত ‘সব দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও চ্যালেঞ্জ’। কাতারভিত্তিক সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আলী কারাদাঘি এক টুইট বার্তায় এ মন্তব্য করেন।
    ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেরুজালেম নীতির বিষয়ে বিশ্বজুড়ে তুমুল নিন্দা ও প্রতিবাদ জারি রয়েছে। ফিলিস্তিন ও আরব দেশগুলোসহ মার্কিন অনেক মিত্র দেশও ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
    এর আগে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রস্তাবটিতে নিরাপত্তা পরিষদের ১৪ সদস্যেরই অনুমোদন জেরুজালেম ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের অবৈধতা নির্দেশ করে। যুক্তরাষ্ট্রের এই ভেটো জাতিসংঘকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করেছে। তবে তুরস্ক ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও এর জনগণের পক্ষেই অবস্থান নেবে।’
    জাতিসংঘে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ফ্র্যাঙ্কয়েস ডেলাট্রেও যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেন, ‘এই খসড়া প্রস্তাব যুগ যুগ ধরে জেরুজালেম প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক মতৈক্যের প্রতিফলনকেই নিশ্চিত করেছিল। এটা পাস না হওয়াটা দুঃখজনক।’
    এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর পর ফিলিস্তিন-ইসরাইল সঙ্কট সমাধানে মধ্যস্থতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। জাতিসংঘে দেশটির সহকারী রাষ্ট্রদূত ভøাদিমির সাফ্রোনকোভ বলেন ‘ইসরাইল-ফিলিস্তিনের সরাসরি সমঝোতার বিষয়টি দিন দিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।’ সে সময় তিনি ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলি নেতাদের নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের আহ্বান জানান। বৈঠকে রাশিয়া ‘একজন সৎ মধ্যস্থতাকারী’ হতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি। রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের বক্তব্য পুনর্ব্যক্ত করে সাফ্রোনকোভ নিরাপত্তা পরিষদকে ‘মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ’ দেওয়ার আহ্বান ও জানান। সূত্র : আল-জাজিরা, বিবিসি, এএফপি ও আনাদোলু।

    সু চির সম্মতিতেই রোহিঙ্গা নির্যাতন

    মিয়ানমারে মুসলমান সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের অনুমোদন সেদেশের নেত্রী অং সান সু চির অনুমোদনেই হয়েছে বলে ধারণা করছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার যেইদ রাদ আল হুসেইন। এজন্য মিয়ানমারের নেতাদের একসময় বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে তিনি বলছেন। বিশ্বে মানবাধিকার রক্ষার বিষয়গুলো দেখভাল করে জাতিসংঘের এই প্রতিষ্ঠানটি, যার প্রধান মি. হুসেইন।
    বিবিসিকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘যে মাত্রায় এবং যেভাবে সেখানে সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে, তা অবশ্যই দেশের উঁচু পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ওই অভিযানে কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছে এবং লাখ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন’।
    মি. হুসেইন বলছেন, ‘এজন্য মিয়ানমারের নেতাদের একসময়ে গণহত্যার অভিযোগের মুখোমুখি হতে হবে’। যদিও এসব অভিযোগের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি অঙ সান সু চি, যিনি একসময় শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।
    বিবিসির সংবাদদাতা জাস্টিন রোল্যাট বলছেন, ‘’মিয়ানমারের নেতাদের ভবিষ্যতে বিচারের মুখোমুখি দাড়াতে হতে পারে, জাতিসংঘের এই নজরদারি প্রতিষ্ঠানটির প্রধানের এই বক্তব্য খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।’’
    এ মাসের শুরুর দিকেই জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে দেয়া বক্তব্যে মি.হুসেইন বলেছিলেন, মিয়ানমারে যে ব্যাপক বা পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে, তাতে গণহত্যার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাবে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হলোকাস্টের পর জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো একটি কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে কোন গোত্রকে নিশ্চিহ্নকে করার চেষ্টাকে গণহত্যাকে বলে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু তার এই বক্তব্যের পর কি অং সান সু চির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা পারে?
    জাস্টিন রোল্যাট বলছেন, মিয়ানমারে গণহত্যা হয়েছে কিনা, সেটি প্রমাণের দায়িত্ব যেইদ রাদ আল হুসেইনের নয়। কিন্তু তিনি হয়তো আন্তর্জাতিক একটি তদন্ত চাইতে পারেন।
    যদিও হাই কমিশনার বলছেন, সেটিও কঠিন একটি কাজ। তিনি বলছেন, ‘কেউ যদি গণহত্যা চালানোর পরিকল্পনা করে, সেটি তো তারা কাগজ কলমে করবে না। হয়তো আপনি কোন নির্দেশনার প্রমাণও পাবেন না। তবে এখন আমরা যা দেখছি, তার ভিত্তিতে ভবিষ্যতে কোন আদালত যদি এরকম কোন তদন্তের আদেশ দেয়, তাতে আমি অবাক হবো না’।
    অগাস্টে এই অভিযান শুরুর পর সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। শত শত গ্রাম পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। সেখানে ব্যাপক হত্যা আর গণধর্ষণের বর্ণনা দিয়েছেন পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। স্যাটেলাইটে তোলা ছবি বিশ্লেষণের পর যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, বার্মার (মিয়ানমার) রাখাইন রাজ্যে গত দুইমাসে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
    অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে আরো ৪০টি গ্রামের ভবনসহ বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে বলে সংস্থাটি দেখতে পেয়েছে। ২৫শে অগাস্টের পর রাখাইনে এ নিয়ে ৩৫৪টি গ্রাম আংশিক বা পুরোপুরি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

    বারী সিদ্দিকি স্মরণে জাপান প্রবাসিদের শোক সভা

    খ্যাতিমান সংগীত শিল্পী , গীতিকার , সুরকার ও বাঁশী বাদক প্রয়াত বারী সিদ্দিকি’র স্মরনে শোক সভার আয়োজন করা হয়েছিল জাপান প্রবাসি বাংলাদেশী কমিউনিটির পক্ষ থেকে ।

    ১৭ ডিসেম্বর ‘১৭ রোববার টোকিওর কিতা সিটি আকাবানে কিতা কুমিন সেন্টার এ আয়োজিত একই শোক সভায় শোক জানানো হয় সদ্য প্রয়াত ঢাকা উত্তর এর অত্যন্ত জনপ্রিয় মেয়র আনিসুল হক , চট্টলাবীর খ্যাত মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী , নায়ক রাজ রাজ্জাক , স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠ যোদ্ধ্বা শিল্পী আব্দুল জব্বার সহ বিজয়ের এই মাসে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ্বে বীর শহীদদের প্রতি ।
    সভার শুরুতেই তাঁদের সকলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধ্বা জানানোর জন্য দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় ।
    নীরবতা পালন শেষে গোলাম মাসুম জিকো’র গ্রন্থনা ও সম্পাদনায় এবং মোস্তাফিজুর রহমান জনি’র সহযোগিতায় শিল্পী বারী সিদ্দিকি এবং মেয়র আনিসুল হক এর উপর এক প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হয় ।
    এরপর প্রবাস প্রজন্ম জাপান সন্মাননা ‘১৪ প্রাপ্ত শিল্পী বারী সিদ্দিকির জাপান সফর কালীন স্মৃতিচারণ মূলক বক্তব্য রাখেন রাহমান মনি , কাজী ইনসানুল হক । এসময় বারী সিদ্দিকির পুত্র সাব্বির সিদ্দিকির সাথে টেলিফোনে কথোপকথন হয় যা , লাউড স্পীকারের মাধ্যমে সকলকে শুনানো হয় । টেলিফোনে সাব্বির সিদ্দিকি পুত্র জাপান প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন , আমার বাবার প্রতি আপনাদের সকলের এতো ভালোবাসা বাবা যদি দেখতে পারতেন তাহলে , বাবা কতোই না খুশী হতেন ।
    এরপর জাপান কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নুর খান রনি , এডভোকেট হাসিনা বেগম রেখা , আলমগীর হোসেন মিঠু , সালেহ মোঃ আরিফ দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব মোঃ বেলাল আহমেদ প্রমুখ ।
    এরপর শিল্পী বারী সিদ্দিকির প্রতি শ্রদ্ধ্বা জানিয়ে তার করা জনপ্রিয় গান গুলো পরিবেশন করেন জাপান প্রবাসী বাংলাদেশী শিল্পী রা ।
    প্রথমেই প্রবাস প্রজন্ম’র খুদে শিল্পী তনুতা ঘোষ শিল্পী বারী সিদ্দিকির একমাত্র মেয়ের জন্য করা ‘তুমি আইও পরাণের বন্ধু , আইও বাউল বাড়ি’ গানটি কচি কন্ঠের মিষ্টি গলায় গেয়ে শুনালে উপস্থিত দর্শক শ্রোতা মুদ্গ্ব হয়ে শুনেন । তনুতার মা পপি ঘোষ এসময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন কমিউনিটির পক্ষ থেকে এমন মহতী আয়োজনের জন্য ।
    এরপর উত্তরণ বাংলাদেশ কালচারাল গ্রুপ বারী সিদ্দিকির জনপ্রিয় গান গুলি পরিবেশন করে । গানের মাঝে মাঝে উত্তরণ শিল্পীরা বিভিন্নভাবে বারী সিদ্দিকিকে স্মরণ করেন । এ ছাড়া ও স্বরলিপি কালচারাল একাডেমীর বাদল বাদ্যযন্ত্রহীন খালি কন্ঠে শিল্পী বারী সিদ্দিকির অত্যন্ত জনপ্রিয় ‘ শোয়া চান পাখী আমার’ গানটি গেয়ে শোনালে পিনপতন নিঃশব্দে দর্শক শ্রোতা তার মাধ্যমে বারী সিদ্দিকিকে অনুধাবন করেন ।
    মহতী এই শোক সভাটি পরিচালনা করেন বিশ্বজিত দত্ত বাপ্পা ।

    লাসভেগাস হত্যাকাণ্ড

    গত ১লা অক্টোবর রোববার মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রের লাসভেগাসে ঘটল বন্দুকধারীর গুলিবর্ষণের ঘটনা। ৬৪ বছর বয়েসী স্টিফেন ক্রেইগ প্যাডক নামক এক মার্কিন শ্বেতাঙ্গের নির্বিচার গুলিবর্ষণের এই ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫৯ জন। আহতের সংখ্যা ৫২৭। পুলিশের ভাষ্যমতে লাসভেগাসের  মান্দালাই বে হোটেল এ্যন্ড ক্যাসিনোতে কনসার্ট দেখতে জড়ো হওয়া ২২ হাজার মানুষের উপর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি শুরু করে ঐ বন্দুকধারী। হোটেলের ৩২ তলার একটি কক্ষ থেকে সে গুলি করে যাচ্ছিল। পুলিশ পৌঁছার আগেই বন্দুকধারী অস্ত্র ঘুরিয়ে নেয় নিজের দিকে। ঐ কক্ষে পৌঁছে পুলিশ উদ্ধার করে তার গুলিবিদ্ধ লাশ। রোববার মধ্যরাতের এই হত্যাকা-কে বলা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ‘মাস শুটিং’।

    সোমবার হোয়াইট হাউস থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ঘটনাকে অভিহিত করেছেন ‘খাঁটি শয়তানি কাজ’ বলে। কিন্তু ব্যাপার হচ্ছে, এই খাঁটি শয়তানি কাজ এখন যুক্তরাষ্ট্রে অনেকটা সাধারণ রীতি। নিয়মিত বিরতিতে তা ঘটে চলেছে। এফবিআইয়ের হিসাবে শুধু ২০১৭ সালেই স্বদেশবাসীর গুলিতে নিহত হয়েছে ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ। গত বছর জুনের অরল্যান্ডো-হত্যাকা-ের পর এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫৮৫ জন, আহত ২১৫৬ জন। (নয়া দিগন্ত, ১০ অক্টোবর, ২০১৭)

    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রবল প্রতাপশালী প্রেসিডেন্ট কি পারবেন তার দেশের  ভেতরের এই শয়তানি কাজ বন্ধ করতে? তিনি তো মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তার অজুহাতে গোটা উত্তর কোরিয়াকেই ‘টোটালি ডেস্ট্রয়’ করে  দেওয়ার ঘোষণা জাতিসংঘের সকল জাতি-গোষ্ঠীর মুখের ওপর দিয়ে আসতেও দ্বিধা করেননি, কিন্তু নিজের দেশের ভেতরের এই নিরাপত্তাহীনতা তিনি রুখবেন কীভাবে?

    আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, স্টিফেন প্যাডক বেশ প্রস্তুুতি নিয়েই হত্যাকা-টি ঘটিয়েছে। শহরটির শেরিফ জানিয়েছেন, হোটেলটির ৩২ তলার ঐ কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২৩ টি বন্দুক ও কয়েক হাজার রাউন্ড গুলি। এছাড়া তার নেভাদার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে আরো ১৯ টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক।

    এই ঘটনার পর সঙ্গত কারণেই কথা উঠছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান অস্ত্র আইন নিয়ে। এই আইনে নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য অস্ত্র রাখার অধিকার দেয়া হয়েছে।

    পাঁচ বছর আগে কানেক্টিকাটের এক প্রাইমারি স্কুলে এক যুবকের এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণে ২৬ শিশুর মৃত্যুর পর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের জোর দাবি ওঠে। গত বছর অরল্যান্ডোর নাইটক্লাবে বন্দুকধারীর গুলিতে ৪৯ জন নারী-পুরুষের নিহত হওয়ার পরও এই দাবি জোরালোভাবেই সামনে এসেছিল। এমনকি এ নিয়ে কংগ্রেস ডেমোক্রেটরা রাতভর আইনসভা কক্ষ ঘেরাও পর্যন্ত করে রেখেছিলেন। কিন্তু ফল কিছুই হয়নি। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে সারা দেশের বেশির ভাগ মানুষ একমত হলেও এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। বিশ্লেষকেরা বলেন, এর প্রধান কারণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘গান-লবি’। ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন বা এনআরএ আমেরিকার মানুষের অস্ত্র বহনের অধিকারের পক্ষে প্রধান গ্রুপ। কংগ্রেসের বিভিন্ন সদস্যকে প্রভাবিত করার জন্য এরা বছরে প্রায় ২৫ কোটি ডলার খরচ করে থাকে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে আগ্নেয়াস্ত্রের পক্ষের প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য এরা সরাসরি খরচ করেছে ৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। (দৈনিক প্রথম আলো, ৪ অক্টোবর, ২০১৭, পৃ. ১১)

    এটা হচ্ছে পশ্চিমা পুঁজিবাদী সমাজ-ব্যবস্থার এক অন্ধকার দিক। মুখে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইত্যাদি যা কিছুই বলা হোক, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর শান্তি ও নিরাপত্তা কার্যত শূলিবিদ্ধ পুঁজির শূলিদ-ে।১

    পশ্চিমা পুঁজিবাদ গোটা পৃথিবীটাকেই বানিয়ে রেখেছে যুদ্ধক্ষেত্র। সচেতন মাহলের অজানা নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় অস্ত্র-নির্মাতা ও অস্ত্র-রফতানীকারক দেশ।

    স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুসারে বিশ্বের সেরা কয়েকটি অস্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠা ও তাদের বিক্রয়ের পরিমাণের দিকে নজর দেয়া যাক।

    লকহিড মার্টিন : যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত এ অস্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি বিমান, রাডারব্যবস্থা, ড্রোন ও বিমান উৎপাদন করে। এদের সবচেয়ে বিখ্যাত পণ্য এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ও হারকিউলিস পরিবহন বিমান। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি তিন হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য বিক্রি করে।

    বোয়িং : যাত্রীবাহী বিমান তৈরি করে খ্যাতি পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর এ প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালে দুই হাজার ৮০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করে মুনাফা করেছে ৫২০ কোটি ডলার। এফ-১৫, এফ-১৮, এফ-২২ যুদ্ধবিমান ও রকেট তৈরির জন্য বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানটি। তাদের মোট বিক্রয়ের ২৯ শতাংশ আসে অস্ত্র খাত থেকে।

    রেইথন : প্রধানত ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান থেকে নিক্ষেপযোগ্য অস্ত্র ও যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করে এ মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৫ সালে তাদের বিক্রয়ের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ২০০ কোটি ডলার।

    নরথ্রোপ গ্রুপম্যান : যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের এ প্রতিষ্ঠানটি ড্রোন, যুদ্ধবিমান ও রাডার উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। ২০১৫ সালে বিক্রয়ের পরিমাণ ছিল দুই হাজার কোটি মার্কিন ডলার।

    জেনারেল ডায়নামিকস : মার্কিন সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত এম-১এ আব্রামস ট্যাংক উৎপাদনকারী এ প্রতিষ্ঠানটিও ভার্জিনিয়ায় অবস্থিত। ২০১৫ সালে অস্ত্র বিক্রি করেছে এক হাজার ৯০০ কোটি ডলারের।

    এয়ারবাস গ্রুপ : ইউরোপভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটিও যাত্রীবাহী বিমান তৈরিতে বিখ্যাত। তবে ২০১৫ সালে এক হাজার ২৯০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে তারা, যা মোট বিক্রয়ের ১৮ শতাংশ।

    ইউনাইটেড টেকনোলজিস : যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাট অঙ্গরাজ্যের এই প্রতিষ্ঠানটির মোট বিক্রয়ের ১৬ শতাংশ আসে অস্ত্র থেকে, প্রতি বছর যা প্রায় এক হাজার কোটি ডলার। মার্কিন বাহিনীর ব্যবহৃত ব্ল­্যাক হক হেলিকপ্টার এদের তৈরি।

    লিওনার্দো-ফিনমেকানিকা : যুদ্ধবিমান, অ্যাটাক হেলিকপ্টার, সাঁজোয়া যান তৈরি করে ইতালির এ কোম্পানিটি। ২০১৫ সালে বিক্রয়ের পরিমাণ ছিল ৯৩০ কোটি মার্কিন ডলার।

    এল-৩ টেকনোলজিস : নিউ ইয়র্কভিত্তিক এ মার্কিন কোম্পানিটি মূলত গোয়েন্দা নজরদারি, যোগাযোগ ও জননিরাপত্তাবিষয়ক অস্ত্র উৎপাদন করে। ৮৮০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে ২০১৫ সালে।

    এই পরিসংখ্যান সামনে রেখে চিন্তা করলে সহজেই বোঝা যায় বিশ্বব্যাপী গোলযোগ ও যুদ্ধাবস্থা কেন প্রয়োজন ও কাদের প্রয়োজন। তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেও ২০০ বছর ২   আগের সেই অস্ত্র আইন এখনো বলবৎ রাখা কাদের প্রয়োজন ও কেন প্রয়োজন।

    বিশ্বের একমাত্র সুপার পাওয়ার হওয়া সত্ত্বেও মার্কিন নাগরিকদের মানসিক অস্থিরতা ও অপরাধপ্রবণতার যে চিত্র বিভিন্ন জরিপ ও পরিসংখ্যানে উঠে আসছে এর সাথে অস্ত্র বহনের অবাধ অধিকার নিঃসন্দেহে এক ভীতিকর ব্যাপার। যুক্তরাষ্ট্র যে সকল বিষয়ে অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে এর একটি হচ্ছে কারাবন্দীর সংখ্যা। সংখ্যাটি ২২ লাখ ৩৯ হাজার ৭৫১ জন।

    হত্যাকারী স্টিফেন প্যাডক সম্পর্কে জানা গেছে তিনি একজন কোটিপতি। লাসভেগাসের উত্তর-পূর্বের মেসকাইট শহরের প্রবীণ নাগরিকদের একটি কমিউনিটিতে নিরিবিলি অবসর জীবন কাটাচ্ছিলেন। পরিবার-পরিজন বলতে ম্যারিলু ড্যানলি নামক এক বান্ধবীর সাথেই তিনি বসবাস করতেন। ঘটনার পর মার্কিন মিডিয়াতে তাকে উল্লেখ করা হয়েছে লোন উলফ (নিঃসঙ্গ শিকারী) বলে। কী মসৃণ খেতাব! যেখানে কোনো মুসলিম রাষ্ট্রে অথবা মুসলিম নামের কারো দ্বারা একটু কিছু ঘটে গেলেই ‘জঙ্গি’ ‘আত্মঘাতী’ জিগির চলতে থাকে সারা বিশে^ মাসের পর মাস, সেখানে এত বড় হত্যাকা- সংঘটনকারী কত সুন্দর খেতাবই না অর্জন করলেন।

    পশ্চিমা সমাজ-ব্যবস্থায় প্রবীণ নাগরিকদের নিঃসঙ্গতাও এক ভয়াবহ ব্যাপার। তাদের কি কখনো মনে হয়েছে, এই নিঃসঙ্গতাই তাদেরকে ‘শিকারী’ করে তুলছে? নিঃসঙ্গতা মোকাবিলার জন্য পশ্চিমা সংস্কৃতিতে আছে অনেক কিছুÑ মদ, জুয়া, নারী এবং বন্দুক। আলোচিত ‘নিঃসঙ্গ শিকারী’ চারটি উপায়ই ব্যবহার করেছেন।

    লাসভেগাসের এই হত্যাকা-ে আরেকটি বিষয়ও আলোচিত। বিশ্লেষকেরা ক্ষোভের সাথে বলেছেন, এই নির্মম হত্যাকা-ের পরও স্টিফেন প্যাডককে ‘সন্ত্রাসী’ বলা হয়নি। মার্কিন মিডিয়ায় তাকে অভিহিত করা হচ্ছে গ্র্যান্ডড্যাড (দাদা মশায়), লোন উলফ (নিঃসঙ্গ শিকারী), জুয়ারি বা সাবেক হিসাব রক্ষক প্রভৃতি নামে। তাঁরা বলছেন, এই লোকটি যদি একজন কৃষ্ণাঙ্গ হত তাহলে অনেক আগেই তার নামের সাথে টেররিস্ট কথাটি যুক্ত হয়ে যেত। আর মুসলিম হলে তো কথাই ছিল না।

    এদিকে কোনো কোনো মিডিয়ায় এই তথ্য এসেছে যে, এই হত্যাকা-ের পরপরই আইএস এর দায় স্বীকার করেছে। এমন কথাও নাকি প্রচার করা হয়েছে যে, প্যাডক একজন মুসলিম, ঘটনার কয়েক দিন আগে সে ইসলাম গ্রহণ করে!!

    কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই) এটাকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন, আইএস-এর শক্তি কতটুকু, কারা এর অর্থ জোগানদাতাÑ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়ে অনেক মতবিরোধ থাকলেও বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে বড় কোনো ঘটনা ঘটার পর  আইএস যখন এর দায় স্বীকার করে তখন তদন্ত কর্মকর্তারা চোখ বুজেই তা গ্রহণ করেন এবং ঢালাওভাবে মুসলমানদের অভিযুক্ত করে থাকেন, কিন্তু এবারের লাসভেগাস হত্যাকা-ের পর আইএস তার নিজস্ব সংবাদমাধ্যম ‘আমাক’-এ বিবৃতি দিয়ে দায় স্বীকারের পরও এফবিআই এটাকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেয়াতে মনে হচ্ছে, এবার হিসাব-নিকাশটা অন্যভাবে করা হচ্ছে। (দ্র. নয়া দিগন্ত, ৫ অক্টোবর, ২০১৭, পৃ. ৭)

    বিশ্বজুড়ে পর্দার সামনে ও পেছনে মুসলমানদের পক্ষে ও বিপক্ষে কী কী ঘটছে তার কতটুকুরই বা আমরা খবর রাখি বা রাখতে পারি। আমাদের তো নির্ভর করতে হয় প্রধানত ইহুদী-খ্রিস্টান নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় পরিবেশিত তথ্য ও সংবাদের উপর।

    যাই হোক, কথা হচ্ছিল শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদ নিয়ে। বাস্তবতা হচ্ছে, মার্কিন সমাজের বর্ণবাদী প্রবণতাও তাদের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস ও অবক্ষয় বৃদ্ধির এক বড় কারণ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্প কি এটা উপলব্ধি করেন? গত আগস্টের ভার্জিনিয়ার কুখ্যাত ঘটনাটি কিন্তু অন্যরকম বার্তাই প্রদান করে। পাঠকের হয়ত মানে আছে, ভার্জিনিয়ার শার্লটসভিলে একটি শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী সমাবেশের প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন একদল বর্ণবাদবিরোধী মার্কিন নাগরিক। এ সময় তাদের উপর গাড়ি উঠিয়ে দেয় এক শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী। ওই ঘটনায় একজন নিহতও হয়েছিলেন। এই হত্যাকা-ের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীদের নিন্দা না করায় দেশে-বিদেশে তখন সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। জাতিসঙ্ঘে বৈষম্যদূরীকরণ কমিটি (সিআইআরডি) নামে মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের যে প্যানেলটি আছে, যারা জাতিসঙ্ঘের বর্ণবৈষম্য-বিরোধী চুক্তিতে থাকা ১৭৭ টি দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি দেখভাল করে থাকে, শার্লটসভিলের ঐ ঘটনার পর এক বিবৃতিতে বলেছিল, ‘বর্ণবাদীদের দমন করতে সর্বোচ্চ পর্যায়ের রাজনীতিকদের ব্যর্থতার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।’

    বিবৃতিতে সিআইআরডি প্যানেলের প্রধান অ্যানাস্তামিয়া ক্রিকলি বলেছিলেন, ‘শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী, নব্য-নাৎসি ও ক্লু ক্লাকস ক্ল্যানের বর্ণবাদী বিক্ষোভ-শ্লোগানে আমরা উদ্বিগ্ন, যা শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদকে উসকে দেয়, জাতিগত বৈষম্য ও ঘৃণার বিস্তার ঘটায়।’

    মার্কিন জাতির এই অবক্ষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গের সহমর্মী হওয়ার পাশাপাশি আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি আমাদের দ্বীনকে, যে দ্বীনের উদার মানবিক শিক্ষা আমাদের মুক্ত রেখেছে এই অন্ধকার থেকে। যে দ্বীনের অনুসারী হওয়ার কারণেই আমরা হযরত বেলাল হাবাশী রা.-কে আমাদের অন্যতম আদর্শ ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্মরণ করেও গর্ববোধ করি এবং তাঁর নামে আপন সন্তানের নাম রাখাকে সৌভাগ্য মনে করি। সকল প্রশংসা আল্লাহর।

    ইসলাম সেই চৌদ্দশ বছর আগেই আমাদের দান করেছে ঐ প্রাগ্রসর শিক্ষা, যে পর্যন্ত বিশ্বের ‘আধুনিক’ জাতিগুলো এখনও পৌঁছুতে পারেনি। ইসলামের এই শিক্ষা এবং মুসলিম সমাজের সাম্য ও উদারতার এই বৈশিষ্ট্য-বর্ণনা করে ড. ইকবাল বলেনÑ

    نہ افغانیم و نے ترک و تتاریم

    چمن زادیم وازیک شاخساریم

    تمیز رنگ وبوبرما حرامست

    کہ ما پروردۂ یک نوبہاریم

    অর্থাৎ আফগানি, তুর্কি, তাতারি কোনো প্রকারের জাতীয়তায় আমরা বিশ^াসী নই। কারণ সকল মানুষ এক মানব-বাগানেরই বিচিত্র ফুল এবং সকলেই বাবা আদমের সন্তান। আমাদের মুসলমানদের জন্য তো বর্ণবাদ সম্পূর্ণ হারাম। কারণ আমাদের চেতনা ও বিশ^াস গঠিত হয়েছে এক নতুন বসন্ত ইসলামের উদার শিক্ষায়।

    ইসলামের এই উদার মানবিক শিক্ষার যুক্তি ও যথার্থতা এক আরব কবির পংক্তিতে বাঙ্ময় হয়েছে এভাবেÑ

    ليس يزري السوادُ بالرجلِ الشهم

    ولا بالفتى الأديبِ الأريبِ

    إن يكن للسواد فيك نصيبٌ

    فبياضُ الأخلاقِ منكَ نصيبي

    অর্থাৎ গুণ ও যোগ্যতার শুভ্রতাই বড় শুভ্রতা আর চিন্তা-চেতনার কৃষ্ণতাই প্রকৃত কৃষ্ণতা। কাজেই মেধা, মনন ও চরিত্র-সুষমা যে অর্জন করেছে তার গায়ের কালো রং দোষের হতে পারে না। আর এ কারণেই তোমার গাত্র বর্ণ-নয়, আমি গুণগ্রাহী তোমার চারিত্রিক শুভ্রতার।

    আসলে বর্ণবাদই হচ্ছে এক ঘোর কৃষ্ণতা। এই কৃষ্ণতা থেকে যে মুক্ত সবাই তার শুভ্র উদার ব্যবহার লাভ করবে। কোনো কৃষ্ণ বর্ণের মানুষও তার সংকীর্ণ আচরণের শিকার হবে না। যদি হয় বুঝতে হবে তার ভেতরটা কৃষ্ণতামুক্ত। কাজেই ঐ কালো বর্ণের মানুষটির কৃষ্ণতার উপর নয়, তার মাতম করা উচিত নিজের ভেতরের কৃষ্ণতার উপর।

    দেখুন, পশ্চিমারা বিশ্বব্যাপী, বিশেষত মুসলিম দেশগুলোতে বিভেদ-বিভক্তির যে কূটচাল অব্যাহত রেখেছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে মুসলিম জনপদগুলোতে যে আগুন প্রজ্জ্বালিত করেছে এ আগুন তাদের জনপদেও ছড়িয়ে পড়েছে দাবানলের মতো। আসলে অগ্নি থেকে অগ্নিস্ফুলিঙ্গই ঝরে, ফুল ঝরে না। প্রশ্ন হচ্ছে, নিজেদের প্রজ্জ্বালিত এই আগুন থেকে মার্কিনীদের কে রক্ষা করবে।

    মোটর গাড়ি উৎপাদনে জাপানি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের পরামর্শ

    বাংলাদেশে মোটর গাড়ি উৎপাদনে জাপানি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, জাপানের হোন্ডা কোম্পানি ইতোমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাথে যৌথ বিনিয়োগে মোটর সাইকেল উৎপাদনের কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু করেছে। এর ধারাবাহিকতায় মোটরগাড়ি উৎপাদন শিল্পেও জাপান বাংলাদেশ সরকারের সাথে যৌথ অংশীদারিত্বে বিনিয়োগ করতে পারে।
    বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোয়াসিও ইজুমি রবিবার শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সাথে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ পরামর্শ দেন। শিল্পমন্ত্রণালয়ে এ সাক্ষাতকার অনুষ্ঠিত হয়।
    শিল্পমন্ত্রী বলেন, জাপান বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু নির্মাণ, পদ্মা সেতুর প্রাক-সমীক্ষা, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ উত্পাদনসহ বিভিন্ন প্রকল্পে জাপান অর্থায়ন করে আসছে। তিনি বাংলাদেশে সোলার গ্লাস উৎপাদন শিল্পে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে জাপানের রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
    আমির হোসেন আমু বলেন, বাংলাদেশ সব সময় জাপানি বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। তিনি মালয়েশিয়ায় জাপানি বিনিয়োগে স্থাপিত ও বর্তমানে বন্ধ থাকা সনি কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের জন্য রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বাংলাদেশের জনবলের কারিগরি দক্ষতা বাড়াতে জাপানের উদ্যোগে একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট এবং হালকা প্রকৌশল শিল্পের মানোন্নয়নে একটি শিল্পপার্ক স্থাপনের সুযোগ রয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
    রাষ্ট্রদূত বলেন, যৌথ বিনিয়োগে হোন্ডা মোটর সাইকেল উৎপাদন প্রকল্প গ্রহণের পর বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রতি জাপানি উদ্যোক্তাদের আকর্ষণ বেড়েছে। তিনি শিল্পায়নের জন্য যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বাংলাদেশে মোটর যান উৎপাদন, জনবলের কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি এবং হালকা প্রকৌশল শিল্পের গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন।

    জাপানে স্কুলের মাঠে পড়ল মার্কিন সামরিক কপ্টারের জানালা

    জাপানের একটি স্কুলের খেলার মাঠে যুক্তরাষ্ট্রের এক সামরিক হেলিকপ্টারের জানালা খুলে পড়েছে। বুধবারের এ ঘটনায় ১০ বছর বয়সী এক জাপানি বালক সামান্য আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ।
    বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইউএস সিএইচ-৫৩ই ট্রান্সপোর্ট হেলিকপ্টারটির জানালা খুলে মাঠে পড়ার সময় সেখানে ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়টির প্রায় ৫০টি শিশু খেলছিল। শিশুটি কীভাবে আঘাত পেয়েছে তার সঠিক কারণ পরিষ্কার নয় বলে ওকিনাওয়া প্রিফেকচারের কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।  যুক্তরাষ্ট্র মেরিনের একটি বিমান ঘাঁটির কাছে ঘটনাটি ঘটেছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে বাহিনীটি।
    ঘটনার পরপরই হেলিকপ্টারটি ঘাঁটিতে ফিরে এসে ঘটনার বিষয়ে রিপোর্ট করেছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জাপানের মন্ত্রীপরিষদ সচিব ইয়োশিহিদে সুগা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ঘটনার বিষয়ে ব্যাখ্যা পাওয়ার পর সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ ধরনের ঘটনা শুধু ওই স্কুলের সঙ্গে জড়িতদের না পুরো ওকিনাওয়াবাসীকেই ‘উদ্বিগ্ন করে’ এবং এ ধরনের ঘটনা ‘কখনোই ঘটা উচিত নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
    জাপানে মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সবচেয়ে বড় ঘাঁটি দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ ওকিনাওয়ায়। কয়েক বছর ধরে এই ফুটেনমা ঘাঁটি নিয়ে জাপানের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ওকিনাওয়ার কর্তৃপক্ষের মতভেদ চলছে। জাপানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতির দায় তাদের বহন করতে হচ্ছে যাকে অন্যায্য বলে মনে করছে ওকিনাওয়াবাসী।
    এর আগে অক্টোবরে ওকিনাওয়ার উত্তরাংশে প্রশিক্ষণ চলাকালীন যুক্তরাষ্ট্র মেরিনের একটি সিএইচ-৫৩ই হেলিকপ্টার জরুরি অবতরণকালে বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। ওই ঘটনায় কেউ আঘাত না পেলেও এ ধরনের বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে মার্কিন সেনাদের জড়িয়ে পড়া নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আছে দ্বীপবাসী। বিবিসি।