ওবায়দুল কাদের প্রধান বিচারপতির বাসায় যাওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন: ফখরুল

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বাসায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের যাওয়ার ঘটনায় বিএনপি উদ্বিগ্ন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রদল কর্তৃক আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, একটি পত্রিকার নিউজে দেখেছি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বাসায় গিয়েছেন। এতে আমরা, বিএনপি উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত।
উল্লেখ্য, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায় নিয়ে চলমান অস্থিরতার মধ্যেই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নৈশভোজে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবার রাতে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেন ওবায়দুল কাদের। এসময় দুজনের মধ্যে সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতি ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের নৈশভোজ আপাতদৃষ্টিতে সামাজিক অনুষ্ঠান মনে হলেও এর রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক। নৈশভোজে যাওয়ার আগে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে এই দুজনের মধ্যে কি কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তা জানা যায়নি।
জানা গেছে, রাত আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে একান্তে আলাপ করেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা ও ওবায়দুল কাদের। এ সময় প্রধান বিচারপতি কাদেরকে জানান, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে তিনি কোথাও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় সংসদকে অসম্মান করে কোনো বক্তব্য লেখেননি। যারা এগুলো বলছেন, তারা পূর্ণাঙ্গ রায় না পড়ে কয়েকটা লাইন পড়েই এসব সমালোচনা করছেন।
এ ছাড়া প্রধান বিচারপতি কাদেরের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং আইন সচিবের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নিজের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার কথা জানান। আলোচনায় বিচারপতি খায়রুল হকের প্রতিক্রিয়া জানানোর বিষয়টিও স্থান পায়।
অন্যদিকে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর্যবেক্ষণে উল্লেখিত বিষয়গুলো নিয়ে ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ক্ষোভের বিষয়টি প্রধান বিচারপতির দৃষ্টিতে আনেন। জানা গেছে, রায়ের পর্যবেক্ষণের আপত্তিকর অংশগুলো প্রত্যাহারের জন্যও সিনহার সঙ্গে আলোচনা করেছেন কাদের। ৭৯৯ পৃষ্ঠার দীর্ঘ এ রায়ের কিছু অংশ দেখে সুযোগসন্ধানীরা সুযোগ নিতে পারে বলেও প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছেন তিনি।