• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • ব্রিটিশ নির্বাচনে আবারো জয়ী টিউলিপ সিদ্দিক, রুপা হক ও রুশনারা আলী

    বিপুল উৎসাহ ও কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ব্রিটেনে মধ্যবর্তী জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে ফের নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসনে দ্বিতীয় মেয়াদে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রূপা হক।
    টিউলিপ পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৪৬৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ দলের প্রার্থী ক্লেয়ার লুইচ লিল্যান্ড পেয়েছেন ১৮ হাজার ৯০৪ ভোট। এর আগে ২০১৫ সালে মাত্র ১ হাজার ১৩৮ ভোটের ব্যবধানে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন টিউলিপ। এবার সেই ব্যবধান বেড়ে হলো ১৫ হাজার ৫৬০।
    লেবার দলীয় প্রার্থী রূপা হকের প্রাপ্ত ভোট ৩৩ হাজার ৩৭। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ দলের প্রার্থী জয় মোরিসি পেয়েছেন ১৯ হাজার ২৩০ ভোট। গতবার মাত্র ২৭৪ ভোটে জয় পাওয়া রূপা এবার জিতেছেন ১৩ হাজার ৮০৭ ভোটের ব্যবধানে। ২০১৫ সালে রূপা হক প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে হঠাৎ করে মধ্যবর্তী নির্বাচন ঘোষণা দেওয়ায় রূপা হককে দুই বছরের মাথায় আসনটি ধরে রাখার লড়াইয়ে নামতে হয়।
    বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনেও জয়ী হয়েছেন আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশনারা আলী। তিনি ৪২ হাজার ৯৬৯ ভোট পেয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির চার্লট চিরিকো পেয়েছেন ৭ হাজার ৫৭৬ ভোট। ২০১০ সালে প্রথম কোনো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হিসেবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি আসনটি তৃতীয় মেয়াদে ধরে রাখার জন্য লড়ে যাচ্ছেন। বিবিসি ও রয়টার্স।

    ঈসালে সওয়াব : কিছু মাসনূন পদ্ধতি

    ‘ঈসালে সওয়াব’ ফারসী শব্দ। আরবীতে হবে ‘ঈসালুস সাওয়াব’ (তবে এ ক্ষেত্রে আরবীতে অন্য শব্দ বেশি ব্যবহৃত হয় যেমন ‘ইহদাউস সাওয়াব’)। এর আভিধানিক অর্থ হল সওয়াব পৌঁছানো। পরিভাষায় ঈসালে সওয়াব হল কোনো নেক আমল করে এর সওয়াব মৃত ব্যক্তিকে দান করা।

    ঈসালে সওয়াবের প্রেরণা

    কষ্টার্জিত আমলের সওয়াব যে কাউকে দান করা হয় না। এ সাধারণত তাকেই দান করা হয় যার প্রতি মহব্বত ও আন্তরিকতা আছে। প্রিয়জন আখেরাতের পথিক হয়ে গেলে তার জন্য এমন কিছু করা মানুষের স্বভাবজাত আগ্রহ, যা তার শান্তি-সফলতার পক্ষে সহায়ক হবে, তার জন্য আল্লাহর রহমত ও করুণার উপায় হবে। ফলে তিনি তার গোনাহ মাফ করে দিবেন, মর্যাদা উঁচু করবেন এবং সুখে-শান্তিতে ভরিয়ে তুলবেন।

    এই মহব্বতের একটি অনুষঙ্গ হল আত্মীয়তা। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ ঈমান, সৎকর্ম ও সদ্ব্যবহার। এজন্য পিতা-মাতা, দাদা-দাদী প্রমুখের জন্য যেমন ঈসালে সওয়াব করা হয়, তেমনি উস্তাদ-মুরব্বী, আলেম-উলামা, ওলী-বুযুর্গ ও নবী-রাসূলগণের জন্যও করা হয়; বরং ঈমান, সৎকর্ম ও সদাচারে যারা অগ্রগামী তাদের জন্যই বেশি ঈসালে সওয়াব করা হয়। আর তাতে সহযোগিতার চেয়ে সৌভাগ্য ও সাআদাত অর্জনের মনোভাবই কাজ করে বেশি। কোনো নেক লোকের সঙ্গে ঈসালে সওয়াবের সম্পৃক্ততাও সৌভাগ্য বৈকি?

    এ কারণে সবার গুরুত্ব ও মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হওয়া উচিত ঈমান, সৎকর্ম ও  উত্তম আচার-ব্যবহারে অগ্রগামিতা এবং তা অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা।

     

    মূল বিষয়টি সম্পূর্ণ স্বীকৃত

    জীবিতদের দান করা আমল মৃতদের জন্য কল্যাণকর হওয়া আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআর কাছে একটি স্বীকৃত বিষয়। মৌলিক দিক থেকে তাদের মধ্যে এ ব্যাপারে কোনো মতভেদ নেই; মতভেদ শুধু বিস্তারিত ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে। তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শুধু মুতাযিলা সম্প্রদায় তা অস্বীকার করেছে। এদের মতে জীবিতদের দান করা কোনো আমলই মৃত ব্যক্তির জন্য কল্যাণকর নয়, দুআ-ইস্তিগফার ও সদকাও নয়।

    এই দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট কুরআন, সুন্নাহ ও উম্মাহর ইজমা-বিরুদ্ধ। এজন্য এর উপর কোনো মন্তব্য না করে সরাসরি ঈসালে সওয়াবের পদ্ধতিগুলো আলোচনা করা হল।

     

    ঈসালে সওয়াবের কিছু পদ্ধতি

    এক. দুআ

    ইবাদতের সারনির্যাস হচ্ছে আল্লাহর কাছে পরিপূর্ণ সমর্পণ এবং চূড়ান্ত বিনয় ও মুখাপেক্ষিতা প্রকাশ। আর এটা দুআর মধ্যে সর্বোত্তমরূপে প্রকাশিত হয়। দুআ অর্থ ডাকা। নিজেকে অসহায় ও নিঃস্ব মনে করে কারো সামনে দু’হাত প্রসারিত করার চেয়ে বিনয় ও সমর্পণ আর কী হতে পারে? তাই দুআর মর্যাদা ও গুরুত্ব অসীম। হাদীসে দুআকে ইবাদত বরং ইবাদতের মগজ বলা হয়েছে।

    ইসলামী ভ্রাতৃত্বের একটি সাধারণ হক হল, আপনপর জীবিত-মৃত নির্বিশেষে সকল মুসলিম ভাইয়ের জন্য দুআ করা। আর যারা না-ফেরার জগতে পাড়ি জমিয়েছেন তারা যেহেতু কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন এবং আমাদের আগে ঈমান এনেছেন তাই তাদের জন্য বিশেষভাবে কাম্য। দুআ জীবিত-মৃত সকলের জীবনে কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। এ কুরআন ও হাদীস দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত। নিম্নে কিছু আয়াত ও হাদীস উল্লেখ করছি।

    ১. কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে,

    وَ الَّذِیْنَ جَآءُوْ مِنْۢ بَعْدِهِمْ یَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَ لِاِخْوَانِنَا الَّذِیْنَ سَبَقُوْنَا بِالْاِیْمَانِ وَ لَا تَجْعَلْ فِیْ قُلُوْبِنَا غِلًّا لِّلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا رَبَّنَاۤ اِنَّكَ رَءُوْفٌ رَّحِیْمٌ۠ .

    এবং (ফাই-এর সম্পদ তাদেরও প্রাপ্য আছে ) যারা তাদের (অর্থাৎ মুহাজির ও আনসারদের) পরে এসেছে। তারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! ক্ষমা করুন আমাদের এবং আমাদের সেই ভাইদেরও যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছে এবং আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের প্রতি কোনো  হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি অতি মমতাবান, পরম দয়ালু। Ñসূরা হাশর (৫৯) : ১০

    এখানে পূববর্তী মুমিনদের জন্য (যাতে জীবিত ও মৃত সকলই আছেন) দুআ করার প্রশংসা করা হয়েছে। দুআ যদি তাদের জন্য উপকারী না হয়, তবে এ প্রশংসার কী অর্থ থাকে?

    হাফেয সাখাবী রহ. (৯০২হি.) বলেন, এখানে পূর্ববর্তীদের জন্য দুআ করায় তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। বোঝা গেল যে, দুআ উপকারে আসে। Ñকুররাতুল আইন পৃ. ১২৩

    ২. অন্যত্র ইবরাহীম আলাইহিস সালামের এ দুআ বর্ণিত হয়েছে,

    رَبَّنَا اغْفِرْ لِیْ وَ لِوَالِدَیَّ وَ لِلْمُؤْمِنِیْنَ یَوْمَ یَقُوْمُ الْحِسَابُ.

    হে আমার প্রতিপালক! যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সকল ঈমানদারকে ক্ষমা করুন। Ñসূরা ইবরাহীম (১৪) : ৪১

    ৩. অন্য জায়গায় নূহ আলাইহিস সালামের এ দুআ বর্ণিত হয়েছে,

    رَبِّ اغْفِرْ لِیْ وَ لِوَالِدَیَّ وَ لِمَنْ دَخَلَ بَیْتِیَ مُؤْمِنًا وَّ لِلْمُؤْمِنِیْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتِ  وَ لَا تَزِدِ الظّٰلِمِیْنَ اِلَّا تَبَارًا۠.

    হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও এবং যে ঈমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে আর সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও। Ñসূরা নূহ (৭১) : ২৮

    ৪. সূরা মুহাম্মদ-এ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে,

    فَاعْلَمْ اَنَّهٗ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَ اسْتَغْفِرْ لِذَنْۢبِكَ وَ لِلْمُؤْمِنِیْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتِ وَ اللهُ یَعْلَمُ مُتَقَلَّبَكُمْ وَ مَثْوٰىكُمْ.

    জেনে রেখো, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই এবং ক্ষমাপ্রার্থনা কর নিজ ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য এবং মুসলিম নর-নারীদের জন্যও। Ñসূরা মুহাম্মদ (৪৭) : ১৯

    ৫. অন্যত্র ফিরিশতাদের এ দুআ বর্ণিত হয়েছে,

    اَلَّذِیْنَ یَحْمِلُوْنَ الْعَرْشَ وَ مَنْ حَوْلَهٗ یُسَبِّحُوْنَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَ یُؤْمِنُوْنَ بِهٖ وَ یَسْتَغْفِرُوْنَ لِلَّذِیْنَ اٰمَنُوْا  رَبَّنَا وَسِعْتَ كُلَّ شَیْءٍ رَّحْمَةً وَّ عِلْمًا فَاغْفِرْ لِلَّذِیْنَ تَابُوْا وَ اتَّبَعُوْا سَبِیْلَكَ وَ قِهِمْ عَذَابَ الْجَحِیْمِ رَبَّنَا وَ اَدْخِلْهُمْ جَنّٰتِ عَدْنِ ِالَّتِیْ وَعَدْتَّهُمْ وَ مَنْ صَلَحَ مِنْ اٰبَآىِٕهِمْ وَ اَزْوَاجِهِمْ وَ ذُرِّیّٰتِهِمْ اِنَّكَ اَنْتَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُ وَ قِهِمُ السَّیِّاٰتِ  وَ مَنْ تَقِ السَّیِّاٰتِ یَوْمَىِٕذٍ فَقَدْ رَحِمْتَهٗ  وَ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ.

    যারা আরশ ধারণ করে আছে এবং যারা তার চারপাশে আছে, তারা তাদের প্রতিপালকের প্রশংসার সাথে তাঁর তাসবীহ পাঠ করে ও তাঁর প্রতি ঈমান রাখে এবং যারা ঈমান এনেছে তাদের জন্য মাগফিরাতের দুআ করে, হে আমাদের  প্রতিপালক! তোমার রহমত ও জ্ঞান সমস্ত কিছু জুড়ে ব্যাপ্ত। যারা তাওবা করেছে ও তোমার পথ অনুসরণ করেছে তাদের ক্ষমা করে দাও এবং জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা কর। হে আমাদের প্রতিপালক! তাদেরকে দাখিল কর স্থায়ী জান্নাতে, যার ওয়াদা তুমি তাদের সাথে করেছ এবং তাদের পিতা-মাতা, স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে যারা নেক তাদেরকেও। নিশ্চয়ই তুমিই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। এবং তাদের সকল অকল্যাণ থেকে রক্ষা কর। সে দিন তুমি যাকে অকল্যাণ থেকে রক্ষা করবে তার প্রতি তো তুমি দয়াই করবে। আর এটাই মহাসাফল্য। Ñসূরা মুমিন (৪০) : ৭-৯

    এ দুআগুলোতে জীবিত-মৃতের পার্থক্য ছাড়া সাধারণ মুমিনদের জন্য দুআ করা হয়েছে।

    ৬. দুআ মৃতের পক্ষে কল্যাণকর হওয়ার সবচেয়ে বড় দলীল হল জানাযার নামায। জানাযার নামায বস্তুত সালাতরূপ দুআ। জানাযার নামাযে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব দুআ পড়তেন সেগুলো থেকেই তা পরিষ্কার। এজন্য নিষ্ঠার সাথে দুআ করা কাম্য।

    হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,

    إذا صليتم على الميت فأخلصوا له الدعاء.

    তোমরা যখন মাইয়িতের নামায পড়বে তখন তার জন্য নিষ্ঠার সাথে দুআ করবে। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩১৯৯

    এখানে জানাযার নামাযের দু-একটি দুআ উল্লেখ করা যেতে পারেÑ

    اللهم اغفر لحينا وميتنا، وشاهدنا وغائبنا، وصغيرنا وكبيرنا، وذكرنا وأنثانا، اللهم من أحييته منا فأحيه على الإسلام، ومن توفيته منا فتوفه على الإيمان.

    ইয়া আল্লাহ, আপনি আমাদের জীবিত-মৃতদের মাফ করুন। আমাদের উপস্থিত ও অনুপস্থিত, ছোট ও বড়, পুরুষ ও নারী সকলকে মাফ করুন। ইয়া আল্লাহ, আপনি আমাদের মধ্যে যাকে জীবিত রাখেন তাকে ইসলামের উপর জীবিত রাখুন আর যাকে মৃত্যু দেন তাকে ঈমানের উপর মৃত্যু দিন। Ñমুসনাদে আহমদ, হাদীস ৮৮০৯

    اللهم اغفر له وارحمه، وعافه واعف عنه، وأكرم نزله، ووسع مدخله، واغسله بالماء والثلج والبرد، ونقه من الخطايا كما نقيت الثوب الأبيض من الدنس، وأبدله دارا خيرا من داره، وأهلا خيرا من أهله، وزوجا خيرا من زوجه، وأدخله الجنة، وأعذه من عذاب القبر.

    ইয়া আল্লাহ, তাকে মাফ করে দিন, তার প্রতি রহম করুন, তাকে নিরাপদে রাখুন, তার ভুলত্রুটি মার্জনা করুন। তার সম্মানজনক আপ্যায়ন করুন, তারা প্রবেশস্থলকে প্রশস্ত করে দিন। তাকে পানি, বরফ ও বৃষ্টি দ্বারা ধুয়ে-মুছে দিন এবং গোনাহ থেকে এমনভাবে পরিষ্কার করে দিন যেমন ময়লা থেকে সাদা কাপড় পরিষ্কার করেছেন। তাকে দান করুন তার ঘরের চেয়ে উত্তম ঘর, তার পরিবারের চেয়ে উত্তম পরিবার এবং তার স্ত্রীর চেয়ে উত্তম স্ত্রী । তাকে জান্নাতে স্থান দিন, কবরের আযাব থেকে রক্ষা করুন। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৬৩

    ৭. মৃত্যুর পরে বেশ কটি মনযিল রয়েছে। আর প্রত্যেকটি মনযিলই ভয়াবহ। প্রথম মনযিল হল কবর। এখানে দাফনপর্ব শেষে মাইয়িতের ‘সুয়াল-জওয়াব’ হয়। তাই এ সময় তার জন্য দুআ করা বিশেষভাবে কাম্য, যাতে আল্লাহ তাআলা তার ‘সুয়াল-জওয়াব’ সহজ করে দেন।

    উসমান ইবনে আফফান রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃতের দাফনকার্য সম্পন্ন করে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে বলতেনÑ

    استغفروا لأخيكم، وسلوا له بالتثبيت، فإنه الآن يسأل.

    তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা কর এবং সে যেন সুদৃঢ় থাকতে পারে সে দুআ কর। কারণ এখনই তাকে ‘সুয়াল’ করা হবে। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩২২১

    ৮. কবর যিয়ারত আখেরাতের স্মরণে সহায়ক হওয়ায় হাদীসে এর প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে এবং যিয়ারতকারীর এক বড় করণীয় সাব্যস্ত করা হয়েছে মৃতের জন্য দুআ ও ইস্তিগফার। এ ক্ষেত্রে হাদীসে বেশ কিছু দুআ বর্ণিত হয়েছে। একটি দুআ এ রকমÑ

    السلام على أهل الديار من المؤمنين والمسلمين، ويرحم الله المستقدمين منا والمستأخرين، وإنا إن شاء الله بكم للاحقون.

    এই কবরস্থানের বাসিন্দা মুসলিম-মুমিনদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের প্রতি আল্লাহ রহম করুন। ইনশাআল্লাহ আমরাও আপনাদের সাথে মিলিত হব। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৭৪

    ৯. জানাযার নামায ও কবর যিয়ারতের বাইরেও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত ব্যক্তির জন্য দুআ করেছেন। উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু সালামাকে দেখতে এলেন, তখন তার চোখ খোলা ছিল। তিনি চোখ বন্ধ করে দিয়ে বললেন, যখন রূহ কবয করা হয় তখন চোখ তার অনুসরণ করে। এ কথা শুনে লোকেরা কান্না শুরু করে দিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা ভালো ছাড়া অন্য কিছু বলাবলি করো না। কারণ, তোমরা যা কিছু বল ফিরিশতারা তার উপর আমীন বলেন। তারপর তিনি এভাবে দুআ করলেন,

    اللهم اغفر لأبي سلمة، وارفع درجته في المهديين، واخلفه في عقبه في الغابرين، واغفر لنا وله يا رب العالمين، وافسح له في قبره، ونور له فيه.

    হে আল্লাহ! আপনি আবু সালামাকে ক্ষমা করে দিন, হেদায়েতপ্রাপ্তদের মধ্যে তার মর্যাদা উঁচু করুন, তার পরিবারের অভিভাবক হয়ে যান। হে জগতসমূহের প্রতিপালক! তাকে ও আমাদেরকে মাফ করে দিন। তার কবরকে প্রশস্ত ও নূরানী করে দিন। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ৯২০

    একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু আমের রা.-কে এক যুদ্ধে আমীর নিযুক্ত করে পাঠিয়েছিলেন। একটি তীরের আঘাতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। তার আগে ভাতিজা আবু মূসা আশআরী রা.-কে বলে গেছেন, তিনি যেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তার সালাম পৌঁছান এবং তার জন্য মাগফিরাতের দুআ করতে বলেন। আবু মূসা আশআরী রা. তা-ই করলেন। অতপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানি আনিয়ে অযু করলেন এবং দু’হাত প্রসারিত করে দুআ করলেনÑ

    اللهم اغفر لعبيد أبي عامر، اللهم اجعله يوم القيامة فوق كثير من خلقك أو من الناس.

    হে আল্লাহ! আপনি আবু আমেরকে মাফ করে দিন। তাকে কিয়ামতের দিন আপনার বহু সৃষ্টির উপর (বর্ণনাকারী বলেন, অথবা বলেছেন, মানুষের উপর) মর্যাদা দিন। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ২৪৯৮

    এই আয়াত ও হাদীসগুলো থেকে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, দুআ জীবিত ও মৃত সকলের জন্য কল্যাণকর।

     

    দুই. সদকা

    আল্লাহ তাআলা নিজ ইলম ও হিকমতের ভিত্তিতে কাউকে করেছেন সচ্ছল, কাউকে অসচ্ছল। তবে সবার রিযিকের দায়িত্ব তাঁর হাতে। কিন্তু তা বান্দা পর্যন্ত পৌঁছার উপায় সকলের ক্ষেত্রে এক নয়; বরং বয়স, ব্যক্তি, পরিবেশ ও পরিস্থিতির বিভিন্নতায় তা বিভিন্ন হয়ে থাকে। একটি উপায় হল সদকা বা দান-খায়রাত। এটা অনেক ফযীলত ও সওয়াবের কাজ। তবে এর একমাত্র উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়তে সামান্য সদকাও মূল্যবান। আর অন্য কোনো উদ্দেশ্যে বিশাল সদকাও মূল্যহীন।

    এই সদকা জীবিতদের মত মৃতদের জন্যও করা যায় এবং এর সওয়াব তাদের কাছে পৌঁছে। এ বহু হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। এখানে কিছু হাদীস পেশ করা যেতে পারে।

    ১. ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, সাদ ইবনে উবাদা রা.-এর অনুপস্থিতিতে তার মা ইন্তেকাল করেন। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমার অনুপস্থিতিতে আমার মা মারা গেছেন। আমি যদি তার পক্ষ থেকে সদকা করি, তবে কি তার কোনো উপকারে আসবে? বললেন, হাঁ। সাদ রা. বললেন, আমি আপনাকে সাক্ষী রাখছি যে, আমার ‘মিখরাফ’ নামক বাগানটি আমার মা’র জন্য সদকা। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ২৭৫৬

    عن ابن عباس رضي الله عنهما: أن سعد بن عبادة رضي الله عنه توفيت أمه وهو غائب عنها، فقال: يا رسول الله! إن أمي توفيت وأنا غائب عنها، أينفعها شيء إن تصدقت به عنها؟ قال: نعم. قال: فإني أشهدك أن حائطي المخراف صدقة عليها.

    ২. আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, একলোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল, আমার মা হঠাৎ মারা গেছেন, কোনো অসিয়ত করে যেতে পারেননি। আমার মনে হয়, তিনি যদি কথা বলতে পারতেন, তাহলে সদকা করে যেতেন। আমি তার পক্ষ থেকে সদকা করলে কি তিনি এর সওয়াব পাবেন?  বললেন, হাঁ। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ১০০৪

    عن عائشة أن رجلا أتى النبي صلى الله عليه وسلم فقال: يا رسول الله! إن أمي افتلتت نفسها ولم توص، وأظنها لو تكلمت تصدقت، أفلها أجر، إن تصدقت عنها؟ قال: نعم.

    ৩. আবু হুরায়রা. থেকে বর্ণিত, একব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করল, আমার পিতা ইন্তেকাল করেছেন এবং ধন-সম্পদ রেখে গেছেন কিন্তু অসিয়ত করে যাননি। আমি যদি তার পক্ষ থেকে সদকা করি, তবে কি তার (গোনাহের) কাফফারা হবে? বললেন, হাঁ। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ১৬৩০

    عن أبي هريرة أن رجلا قال للنبي صلى الله عليه وسلم: إن أبي مات وترك مالا، ولم يوص، فهل يكفر عنه أن أتصدق عنه؟ قال: نعم.

    ৪. আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. থেকে বর্ণিত, আস ইবনে ওয়ায়েল জাহেলীযুগে একশো উট যবাহ করার মানত করেছিল। অতপর (তার ছেলে) হিশাম তার পক্ষ থেকে ৫০টি উট যবাহ করে। (বাকি ৫০টি অপর ছেলে আমর যবাহ করতে চান।) এ ব্যাপারে তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তোমার পিতা যদি তাওহীদ স্বীকার করত আর তুমি তার পক্ষ থেকে রোযা রাখতে বা সদকা করতে, তবে এ তার কাজে আসত। Ñমুসনাদে আহমদ, হাদীস ৬৭০৪

    عن عمرو بن شعيب، عن أبيه، عن جده، أن العاص بن وائل نذر في الجاهلية أن ينحر مائة بدنة، وأن هشام بن العاص نحر حصته خمسين بدنة، وأن عمرا سأل النبي صلى الله عليه وسلم عن ذلك؟ فقال: أما أبوك فلو كان أقر بالتوحيد، فصمت وتصدقت عنه، نفعه ذلك.

    এ হাদীসগুলো থেকে প্রমাণিত হল যে, সদকার সওয়াব মৃত ব্যক্তির কাছে পৌঁছে।

    মৃত ব্যক্তির জন্য দুআ ও সদকা কল্যাণকর হওয়া উম্মাহর সর্বসম্মত মত। এতে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআর কোনো দ্বিমত নেই।

    ইমাম নববী রহ. (৬৭৬হি.) إذا مات الإنسان -এ হাদীসটির ব্যাখ্যায় লেখেন,

    وفيه أن الدعاء يصل ثوابه إلى الميت، وكذلك الصدقة، وهما مجمع عليهما.

    এ থেকে প্রমাণ মেলে যে, দুআর সওয়াব মৃত ব্যক্তির কাছে পৌঁছে। এমনিভাবে সদকার সওয়াবও। এ দুটি সর্বসম্মত বিষয়। Ñশরহু সহীহ মুসলিম ১১/৮৫

    অন্যত্র এক প্রসঙ্গে লিখেছেন,

    ৃمن أراد بر والديه فليتصدق عنهما، فإن الصدقة تصل إلى الميت وينتفع بها، بلا خلاف بين المسلمين، وهذا هو الصواب، وأما ما حكاه أقضى القضاة أبو الحسن الماوردي البصري الفقيه الشافعي في كتابه >الحاوي< عن بعض أصحاب الكلام من أن الميت لا يلحقه بعد موته ثواب، فهو مذهب باطل قطعا، وخطأ بين مخالف لنصوص الكتاب والسنة وإجماع الأمة، فلا التفات إليه ولا تعريج عليه.

    …যে পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করতে চাই সে যেন তাদের পক্ষ থেকে সদকা করে। সদকা মাইয়িতের কাছে পৌঁছে এবং তার উপকারে আসে। এতে কোনো দ্বিমত নেই। আর এটাই সঠিক। আর মাওয়ারদী কতক ‘আহলে কালাম’ থেকে যে কথা বর্ণনা করেছেন যে, মাইয়িতের কাছে কোনো সওয়াব পৌঁছে না, সেটা সম্পূর্ণ বাতিল ও ভুল। কিতাব-সুন্নাহ ও উম্মাহর ইজমা বিরুদ্ধ। সুতরাং তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। Ñশরহু সহীহ মুসলিম ১/৮৯-৯০

    আবুল হাসান আলী ইবনে মুহাম্মদ আলখাযিন (৭৪১হি.) উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. ও ইবনে আব্বাস রা.-এর হাদীস দুটি উল্লেখ করে বলেন,

    وفي الحديثين الآخرين دليل على أن الصدقة عن الميت تنفع الميت ويصله ثوابها. وهو إجماع العلماء.

    وكذلك أجمعوا على وصول الدعاء وقضاء الدين، للنصوص الواردة في ذلك.

    হাদীস দুটিতে এ কথার প্রমাণ আছে যে, সদকা মৃতের উপকারে আসে এবং এর সওয়াব তার কাছে পৌঁছে। এটা আলেমদের সর্বসম্মত মত। এমনিভাবে তারা এ ব্যাপারেও একমত পোষণ করেন যে, দুআ ও ঋণ পরিশোধের সওয়াবও পৌঁছে। কারণ এ ব্যাপারে বিভিন্ন হাদীস রয়েছে। Ñতাফসীরে খাযিন ৪/২১৩

    ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস আজ

    আজ ঐতিহাসিক ৭ জুন, ছয় দফা দিবস। বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে এক অনন্য প্রতিবাদী আত্মত্যাগে ভাস্বর একটি দিন। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়। এই দিনটি বাংলার স্বাধিকার আন্দোলনকে স্পষ্টত নতুন পর্যায়ে উন্নীত করে। আর এ ছয় দফার মধ্য দিয়েই বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নেয়। ছয় দফা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আসে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ১১ দফা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০’র নির্বাচন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং সর্বশেষ বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়।
    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাসখন্দ চুক্তিকে কেন্দ্র করে লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সাবজেক্ট কমিটিতে ছয় দফা উত্থাপন করেন এবং পরের দিন সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে যাতে এটি স্থান পায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর এ দাবির প্রতি আয়োজক পক্ষ গুরুত্ব প্রদান করেনি। তারা এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে। প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে যোগ না দিয়ে লাহোরে অবস্থানকালেই ছয় দফা উত্থাপন করেন। সেদিন পাকিস্তানের তত্কালীন সেনাশাসক জেনারেল আইয়ুব খান অস্ত্রের ভাষায় ছয় দফা মোকাবিলার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ছয় দফার সমর্থনে ১৯৬৬ সালের ১৩ মে আওয়ামী লীগ আয়োজিত পল্টনের জনসভায় ৭ জুন হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। মাসব্যাপী ৬ দফা প্রচারে ব্যাপক কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়। ৭ জুন তেজগাঁওয়ে বেঙ্গল বেভারেজের শ্রমিক সিলেটের মনু মিয়া পাকিস্তান স্বৈরশাসকের গুলিতে প্রাণ হারান। এতে বিক্ষোভের প্রচণ্ডতা আরো বাড়ে। তেজগাঁওয়ে ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়। আজাদ এনামেল এ্যালুমিনিয়াম কারখানার শ্রমিক আবুল হোসেন ইপিআরের গুলিতে শহীদ হন।
    একই দিন নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনের কাছে পুলিশের গুলিতে মারা যায় আরো ৬ শ্রমিক। আন্দোলনের প্রচণ্ডতায় লাখো বাঙালি মাঠে নেমে পড়ে। সন্ধ্যায় জারি করা হয় কারফিউ। রাতে হাজার হাজার আন্দোলনকারী বাঙালিকে গ্রেফতার করা হয়। এমনিভাবে ৬ দফা ভিত্তিক আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। শহীদের রক্তে আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয় শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের আন্দোলন।
    কর্মসূচি
    ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সূর্য উদয় ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন এবং দুপুর আড়াইটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে ঐতিহাসিক ৬-দফা দিবস পালন উপলক্ষে গৃহীত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসমূহের সকল শাখাসহ সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
    রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
    ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ঐতিহাসিক ৬ দফা শুধু বাঙালি জাতির মুক্তিসনদ নয়, সারা বিশ্বের নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের মুক্তি আন্দোলনের অনুপ্রেরণারও উত্স। বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণে তথা সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। রাষ্ট্রপতি ৬ দফার দাবি আদায়সহ জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিহত সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
    বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঐতিহাসিক ৭ জুনসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার অক্ষুণ্ন রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশের ইতিহাসে ৭ জুন এক অবিস্মরণীয় দিন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ৬-দফা আন্দোলন ১৯৬৬ সালের ৭ জুন নতুন মাত্রা পায়। তিনি বলেন, বাঙালির মুক্তিসনদ ৬ দফা আদায়ের লক্ষ্যে এদিন আওয়ামী লীগের ডাকে হরতাল চলাকালে নিরস্ত্র জনতার ওপর পুলিশ ও তত্কালীন ইপিআর গুলিবর্ষণ করে। এতে ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জে মনু মিয়া, সফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন শহীদ হন। প্রধানমন্ত্রী এই দিনে ঐতিহাসিক ৭ই জুনসহ স্বাধীনতা সংগ্রামের সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
    ঐশীকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন

    রাজধানীর চামেলীবাগে স্ত্রীসহ পুলিশের পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান হত্যা মামলায় তাঁদের মেয়ে ঐশী রহমানকে মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।

    আজ সোমবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ে এই আদেশ দেন।

    আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম। ঐশীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।

    ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রীর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন মাহফুজের ভাই মশিউর রহমান ওই ঘটনায় পল্টন থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই দিনই ঐশী পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করেন।

    এই মামলায় ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল রায় দেন। রায়ে ঐশীকে মৃত্যুদণ্ড ও তাঁর বন্ধু মিজানুর রহমানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

    একই বছরের ১৯ নভেম্বর নিম্ন আদালতের রায়সহ নথিপত্র হাইকোর্টে আসে। পরে তা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন ঐশী। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ মামলার পেপারবুক (মামলাবৃত্তান্ত) প্রস্তুতের পর ওই বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য আসে। গত ১২ মার্চ এসবের ওপর শুনানি শুরু হয়, ৭ মে শুনানি শেষ হয়।

    জাপানে ছোট বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ৪

    জাপানের মধ্যাঞ্চলে বরফে ঢাকা পর্বতে একটি ছোট বিমান বিধ্বস্ত হয়ে চার জন নিহত হয়েছে। রবিবার স্থানীয় পুলিশ একথা জানিয়েছে। এক প্রপেলার বিশিষ্ট চেসনা বিমানটি চার আরোহী নিয়ে শনিবার জাপানের উত্তরাঞ্চলীয় আলপসে বিধ্বস্ত হয়েছে। পুলিশ এক ব্যক্তির কাছ থেকে জরুরি ফোন পায়। বিমানের কোন আরোহী ওই ফোনটি করেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিমানের আরোহীদের বয়স ২১ বছর থেকে ৫৭ বছরের মধ্যে। জরুরি ফোন পাওয়ার ১৪ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার পৌঁছাতে পেরেছে।
    কুয়াশার কারণে উদ্ধার অভিযান চালাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। বাসস।

    কুরআন তিলাওয়াত ও তারাবীর তিলাওয়াত : আমাদের অসতর্কতা

    কুরআনুল কারীম আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কালাম। মহান প্রভুর মহান বার্তা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

    لَّا یَمَسُّهٗۤ اِلَّا الْمُطَهَّرُوْنَ تَنْزِیْلٌ مِّنْ رَّبِّ الْعٰلَمِیْنَ

    যারা অত্যন্ত পবিত্র তারাই কেবল একে স্পর্শ করে। এটা জগৎসমূহের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। -সূরা ওয়াকেয়া (৫৬) : ৭৯-৮০

    আমরা কুরআন তিলাওয়াত করি। তিলাওয়াত কুরআনের বড় একটি হক। আল্লাহ তাআলা আদেশ করেছেন-

    اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ

    (হে নবী!) ওহীর মাধ্যমে তোমার প্রতি যে কিতাব নাযিল করা হয়েছে তা তিলাওয়াত কর। -সূরা আনকাবূত (২৯) : ৪৫

    তিলাওয়াতের অনেক গুরুত্ব, অনেক ফযীলত। তিলাওয়াতকারীর লাভ ও সওয়াবকে অল্লাহ এমন ব্যবসার সাথে তুলনা করেছেন, যে ব্যবসা কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না-

    إِنَّ الَّذِينَ يَتْلُونَ كِتَابَ اللهِ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَأَنْفَقُوا مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَعَلَانِيَةً يَرْجُونَ تِجَارَةً لَنْ تَبُورَ  .

    যারা আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে, নামায কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে (সৎকাজে) ব্যয় করে গোপনে ও প্রাকশ্যে। তারা এমন ব্যবসায়ের আশাবাদী, যাতে কখনও লোকসান হয় না। -সূরা ফাতির (৩৫) : ২৯

    মহান আল্লাহ তাআলার কালাম তিলাওয়াতের বিশেষ নিয়ম ও আদব রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

    وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلًا

    কুরআন তিলাওয়াত কর ধীরস্থির ভাবে, স্পষ্টরূপে। -সূরা মুযযাম্মিল (৭৩) : ৪

    হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

    زينوا القرآن بأصواتكم

    সুন্দর সূরের মাধ্যমে কুরআনকে  (এর তিলাওয়াতকে) সৌন্দর্যমণ্ডিত কর। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৪৬৮

    হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লম ইরশাদ করেছেন, (কিয়ামতের দিন) কুরআনের তিলাওয়াতকারী বা হাফেজকে বলা হবে-

    اقْرَأْ، وَارْتَقِ، وَرَتِّلْ كَمَا كُنْتَ تُرَتِّلُ فِي الدُّنْيَا، فَإِنَّ مَنْزِلَكَ عِنْدَ آخِرِ آيَةٍ تَقْرَؤُهَا.

    তিলাওয়াত করতে থাক এবং উপরে উঠতে থাক। ধীরে ধীরে তিলাওয়াত কর, যেভাবে ধীরে ধীরে দুনিয়াতে তিলাওয়াত করতে। তোমার অবস্থান হবে সর্বশেষ আয়াতের স্থলে যা তুমি তিলাওয়াত করতে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৪৬৪; জামে তিরমিযী, হাদীস ২৯১৪

    এই ধীরস্থির বা তারতীলের সাথে তিলাওয়াত কেমন হবে তা প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখিয়ে গেছেন, শিখিয়ে গেছেন। হযরত উম্মে সালামাহ রাযি.-কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায ও তিলাওয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, তাঁর তিলাওয়াত ছিল-

    قِرَاءَةً مُفَسَّرَةً حَرْفًا حَرْفًا

    প্রতিটি হরফ পৃথক পৃথকভাবে উচ্চারিত। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৯২৩

    অর্থাৎ কোনো জড়তা, অস্পষ্টতা ও তাড়াহুড়া ছিল না।

    হযরত আনাস রাযি.-কে নবীজীর তিলাওয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, তাঁর তিলাওয়াত ছিল (মদের স্থানে) টেনে পড়া। এর পর তিনি بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ পাঠ করে শোনান এবং اللهِ , الرَّحْمٰنِ  ও الرَّحِيمِ এ সব জায়গার মদগুলো টেনে উচ্চারণ করে দেখান। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০৪৬

    সাহাবায়ে কেরামের তিলাওয়াতের বৈশিষ্ট্যও এমনই ছিল। ধীরস্থিরভাবে তিলাওয়াত করতেন তাঁরা। নিজেরা করতেন, অন্যদেরকেও তাগিদ দিতেন।

    قَالَ عَلْقَمَةُ : صَلَّيْتُ مَعَ ابْنِ مَسْعُودٍ مِنْ أَوَّلِ النَّهَارِ إِلَى انْصِرَافِهِ مِنَ الْفَجْرِ فَكَانَ يُرَتِّلُ.

    হযরত আলকামাহ রাহ. বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর সাথে নামায পড়লাম দিনের শুরু থেকে ফজর পর্যন্ত। তিনি তিলাওয়াত করছিলেন তারতীলের সাথে, ধীরস্থিরভাবে। -মুখতাছারু কিয়ামিল লাইল পৃ. ১৩১

    وَقَرَأَ عَلْقَمَةُ عَلَى عَبْدِ اللَّهِ وَكَانَ حَسَنَ الصَّوْتِ. فَقَالَ: رَتِّلْ فِدَاكَ أَبِي وَأُمِّي. فَإِنَّهُ زَيْنُ الْقُرْآنِ

    আলকামাহ রাহ. একবার হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি.-কে কুরআন তিলাওয়াত করে শোনাচ্ছিলেন। তিনি সুমধুর কণ্ঠের অধিকারী ছিলেন। (তো তিনি কিছুটা দ্রুত পড়ে যাচ্ছিলেন) তখন ইবনে মাসউদ রাযি. বললেন, আমার বাবা-মা তোমার উপর কুরবান হোক! ধীরস্থিরভাবে তারতীলের সাথে তিলাওয়াত কর। এটা কুরআনের (তিলাওয়াতের) ভূষণ। -মুখতাসারু কিয়ামিল লাইল, পৃ. ১৩১

    হযরত ইবনে মাসউদ রা.কে এক ব্যক্তি বলল,

    إِنِّي لَأَقْرَأُ الْمُفَصَّلَ فِي رَكْعَةٍ، فَقَالَ عَبْدُ اللهِ: هَذًّا كَهَذِّ الشِّعْرِ، إِنَّ أَقْوَامًا يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ، وَلَكِنْ إِذَا وَقَعَ فِي الْقَلْبِ فَرَسَخَ فِيهِ نَفَعَ

    আমি এক রাকাতেই মুফাস্সালের [সূরা ক্বাফ থেকে সূরা নাস পর্যন্ত। (ফাতহুল বারী ২/২৫৮)] সব সূরা পড়ে নিই। হযরত ইবনে মাসউদ রাযি তখন বললেন, সে তো কবিতা আওড়ানোর মত পাঠ করা।

    অনেক মানুষ কুরআন তিলাওয়াত করে, কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালির নিচেও যায় না। অথচ কুরআন তিলাওয়াত তখনই (পরিপূর্ণ) উপকারী হয় যখন তা অন্তরে গিয়ে বসে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮২২

    وَعَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ: سَافَرْتُ مَعَ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ مِنْ مَكَّةَ إِلَى الْمَدِينَةِ وَهُمْ يَسِيرُونَ إِلَيْهَا وَيَنْزِلُونَ بِاللَّيْلِ، فَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يَقُومُ نِصْفَ اللَّيْلِ فَيَقْرَأُ الْقُرْآنَ حَرْفًا حَرْفًا، ثُمَّ حَكَى قِرَاءَتَهُ: ثُمَّ يَبْكِي حَتَّى تَسْمَعَ لَهُ نَشِيجًا.

    হযরত ইবনে আবী মুলাইকা রাহ. বলেন, এক সফরে মক্কা থেকে মদীনায় যাওয়ার পথে আমি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.-এর সাথে ছিলাম। দিনভর আমরা পথ চলতাম আর রাতে কোথাও তাবু ফেলে বিশ্রাম করতাম। হযরত ইবনে আব্বাস রাযি. মাঝরাতে নামাযে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং খুব ধীরে ধীরে থেমে থেমে কুরআন তিলাওয়াত করতেন। এক একটি শব্দ স্পষ্ট ও পৃথক পৃথক শোনা যেত। আর নামাযে তিনি ডুকরে ডুকরে কাঁদতেন। এমনকি তাঁর হেঁচকির আওয়ায পর্যন্ত শোনা যেত। -মুখতাসারু কিয়ামিল লাইল পৃ. ১৩১

    আরেক বর্ণনায় হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি.তিনি বলেন-

    لَا تَهُذُّوا الْقُرْآنَ كَهَذِّ الشِّعْرِ، وَلَا تَنْثُرُوا كَنَثْرِ الدَّقَلِ، وَقِفُوا عِنْدَ عَجَائِبِهِ وَحَرِّكُوا بِهِ الْقُلُوبَ، وَلَا يَكُونُ هَمُّ أَحَدِكُمْ مِنَ السُّورَةِ آخِرَهَا.

    তোমরা কবিতা পাঠের মত গড়গড় করে দ্রুত কালামে পাক তিলাওয়াত করো না এবং নষ্ট খেজুর যেমন ছুড়ে ছুড়ে ফেলা হয় তেমন করে পড়ো না বরং এর বিস্ময়কর বাণী ও বক্তব্যগুলোতে এসে থেমে যাও, হৃদয়কে নাড়া দাও। এ ভাবনা যেন না থাকে যে, এ সূরা কখন শেষ হবে! -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস ৮৮২৫

    উলামায়ে কেরাম বলেন, কুরআন তারতীলের সাথে পড়া সুন্নত হওয়ার কয়েকটি কারণ :

    ১. তারতীলের সাথে তিলাওয়াত করা হলে কুরআনে বর্ণিত বিষয়গুলোর প্রতি মনোনিবেশ করা যায়।

    ২. আল্লাহ তাআলার কালামের প্রতি অধিক সম্মান প্রদর্শিত হয়।

    ৩. অন্তরে অধিক ক্রিয়া সৃষ্টি করে। -আলইতকান ফী উলূমিল কুরআন ১/১০৬

    সুতরাং যারা অর্থ বুঝেন না তাদের জন্যও ধীরে তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব। কারণ কুরআনের অর্থ বুঝতে না পারলেও কুরআনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও অন্তরে ক্রিয়া সৃষ্টি হওয়া তো অবশ্যই সম্ভব।

    উলামায়ে কেরাম এ বিষয়েও একমত যে, কুরআন তিলাওয়াত খুব দ্রুত করা ক্ষেত্রবিশেষে নাজায়েয।

    আল্লামা যারকাশী রাহ. বলেন, তারতীল মানে কুরআনের শব্দগুলো ভরাট উচ্চারণে পাঠ করা এবং হরফগুলো স্পষ্ট করে উচ্চারণ করা। অন্যথায় এক হরফ আরেক হরফের সাথে যুক্ত হয়ে যাবে। কারো কারো মতে এটা তারতীলের সর্বনিম্ন মাত্রা।

    নামাযে আমরা কুরআন তিলাওয়াত করে থাকি নামাযের ফরয বিধান হিসাবে। কুরআন তিলাওয়াতের যে আদবসমূহ উপরে আলোচিত হল সেগুলো নামাযে তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে আরও বেশি  প্রযোজ্য। নামাযে তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে ধীরস্থিরতা ও ভাবগাম্ভীর্য আরো বেশি মাত্রায় থাকতে হবে। তখন এগুলো শুধু তিলাওয়াতের বিষয় হিসাবেই থাকে না বরং এই ধীরস্থিরতা ও আত্মনিমগ্নতা নামাযেরও বিষয়।

    নামাযের খুশু-খুযুর জন্য তিলাওয়াত তারতীলের সাথে হওয়া খুব জরুরি। তাছাড়া এত দ্রুত তিলাওয়াতের কারণে মদ্দ-গুন্নাসহ তাজবীদের অনেক কায়েদা লঙ্ঘিত হয় এবং হুরূফের ছিফাতের প্রতিও যথাযথ লক্ষ্য রাখা যায় না, ফলে দ্রুত পড়তে গিয়ে ص এর জায়গায় س হয়ে যাওয়া, ش এর জায়গায় س হয়ে যাওয়া, ﻁ এর জায়গায় ت হয়ে যাওয়া কিংবা যেখানে টান নেই সেখানে টান হয়ে যাওয়া বা কোথাও টান আছে সেখানে টান না হওয়া (দ্রুত পড়তে গেলে এই টানের ভুল সব চেয়ে বেশি হয়) খুব সহজেই ঘটে যেতে পারে।

    মোটকথা নামাযে দ্রুত তিলাওয়াত করতে গিয়ে নামায নষ্ট হয়ে যাওয়ার মত ভুল যদি নাও হয় বরং শুধু যদি এটুকু হয় যে, উচ্চারণে মাকরূহ পর্যায়ের বিঘ্ন ঘটছে তাহলে সেই নামাযও কি ত্রুটিযুক্ত হয়ে পড়ল না? আর যদি ধরে নেওয়া হয় যে, কেউ সকল উচ্চারণ ঠিক রেখে খুব দ্রুত পড়ে যেতে পারেন তার জন্যও তো নামাযে অন্তত এমনটি না করা উচিত। কারণ তাতে কুরআন তিলাওয়াতের ন্যূনতম আদবটুকুও যেমন রক্ষিত হয় না তেমনি নামাযে খুশু-খুযু রক্ষা করাও সহজ হয় না।

    ফরয নামায ও অন্যান্য নামাযে আমরা কিছুটা ধীরস্থির তিলাওয়াত করে থাকি।  কিন্তু রমযানে তারাবীতে এত দ্রুত পড়ে থাকি, এতই দ্রুত যে তারতীলের ন্যূনতম মাত্রাও সেখানে উপস্থিত থাকে না। মদ্দ (টান), গুন্নাহ ও শব্দের উচ্চারণ বিঘ্নিত হয়ে তিলাওয়াত মাকরূহ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছে; বরং অর্থের পরিবর্তন হয়ে নামায নষ্ট হয়ে যায়, আমাদের অজান্তেই। আর খুশু-খুযু, ধ্যানমগ্নতা তো নষ্ট হচ্ছেই। আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে আল্লাহর সুমহান কালাম পড়ছি বা শুনছি এমন ভাব-তন্ময়তা তো দূরের কথা কখন বিশ রাকাত তারাবী শেষ হবে এই চিন্তাই যেন সকলকে তাড়িত করতে থাকে।

    নামায বা তিলাওয়াতের যে আদবটুকু ফরয নামাযে রক্ষা হয় তারাবীতে সেটুকু পাওয়াও দুষ্কর। দ্রুত তিলাওয়াত, দ্রুত রুকু, সেজদা, দ্রুত তাসবীহ। অনেকের মাঝে ধারণা জন্মে গেছে, তারাবী মানেই তাড়াতাড়ি পড়া। যার কারণে দেখা যায় যে, যারা ‘সূরা’-তারাবী পড়েন তারাও ভীষণ দ্রুত পড়েন।

    অনেকেই মুসল্লিদের কষ্টের কথা বলে থাকেন। কিন্তু চিন্তা করে দেখুন, ধীরস্থিরভাবে বিশ রাকাত নামায পড়ার কারণে যতটুকু কষ্ট-ক্লান্তি আমাদের হয় তার চেয়ে বেশি হয় কিয়াম, রুকু, সেজদা, তাসবীহ দ্রুত করার কারণে। দুই রাকাত শেষে সালাম ফিরিয়েই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে যাওয়া। চার রাকাত পড়ে খুব সামান্য একটু সময় বসে আবার শুরু করা। অথচ সালাফে সালেহীনের আমল কেমন ছিল তা আমরা পূর্বেই দেখে এসেছি।

    মক্কা-মদীনার তারাবীর খোঁজ নিয়ে দেখুন, সেখানে কত ধীরস্থির তিলাওয়াত, দীর্ঘ বিশ্রাম, লম্বা সময় নিয়ে তারাবী। সেখানে কত দেশের, কত ধরনের, কত বয়সের মানুষ রয়েছে! অথচ আমাদের অবস্থা হল, বিরতিহীন উঠাবসার মাধ্যমে বিশ রাকাত শেষ করার এক প্রতিযেগিতা। অথচ হাদীস শরীফে কাকের ঠোকরের মত রুকু, সেজদা করা থেকে কত শক্তভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

    এর চেয়ে তিলাওয়াত ধীরে করে কিয়াম একটু লম্বা করলে, রুকু, সেজদায় সময় নিলে এবং উঠাবসায় ধীরস্থিরতা অবলম্বন করলে কষ্ট অনেকই কমে যাবে। বয়স্কদের কথা যদি বলেন তাদের জন্য তো ধীরস্থিরতাই সহজ। তাছাড়া বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য কেরাত ছোট করার কথা হাদীসে রয়েছে। তাড়াতাড়ি করার কথা তো নেই! এদের যদি খতম তারাবী একেবারেই কষ্ট হয়ে যায় তাহলে সূরা তারাবী পড়তে পারেন।

    তারাবীর নামায যেমন গুরুত্বপূর্ণ আমল তেমনই ফযীলতের। হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

    مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.

    যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সাথে, সওয়াবের আশায় রমযানে কিয়াম করে (তারাবী, তাহাজ্জুদ সবই এর অন্তর্ভুক্ত) আল্লাহ তাআলা তার পেছনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেবেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২০০৯

    অন্য হাদীসে ইরশাদ হয়েছে-

    خَرَجَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْم وَلَدَتْهُ أُمُّهُ

    …সে যাবতীয় গুনাহ থেকে নবজাত শিশুর মত পবিত্র হয়ে যাবে। -সুনানে নাসায়ী, হাদীস ২২১০; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৩২৮

    এই যে এত এত সওয়াবের কথা হাদীস শরীফে উল্লেখ করা হল এগুলো পাওয়ার জন্য কি আমল সহীহ ও নির্ভুল হওয়া শর্ত নয়?! কিংবা আল্লাহ আমাকে এত সওয়াব দান করবেন, এর জন্য একটু ধৈর্য, একটু ধীরস্থিরতা, অন্তত সর্বনিম্ন আদবটুকু রক্ষা করাও কি আমার কর্তব্য নয়?

    সুতরাং আমাদের অবশ্যকর্তব্য হচ্ছে, নামাযের কিয়াম, রুকু, সেজদা ও  তিলাওয়াতে ধীরস্থিরতা অবলম্বন করা ও নির্ভুল পড়া।

    আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমীন।

    জাপানি পার্লামেন্টের সায়
    অসুস্থতার কারণে রীতি ভেঙে অবসর যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন জাপানের সম্রাট আকিহিতো। সম্রাটের এ ইচ্ছা পূরণে নতুন আইন করছে দেশটির সরকার। মন্ত্রিসভার পরে এবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এ সংক্রান্ত একটি বিল অনুমোদন পেয়েছে। এর ফলে সম্রাটের অবসরের পথে আরো একধাপ এগিয়ে গেলে দেশটি। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার রাতে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে এ বিল অনুমোদন পায়। এসময় ক্ষমতাসীন পার্টি ছাড়াও অন্য ৬টি দলের এমপিরা বিলের পক্ষে সম্মতি দেন। আগামী সপ্তাহে এটি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে তোলা হবে। সেখানে অনুমোদন পেলেই এটি আইন হিসেবে কার্যকর হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আসছে বছরই অবসরে যাবেন সম্রাট আকিহিতো। রয়টার্স।
    চ্যাম্পিয়নদের দলে বাংলাদেশও
    চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মূলত চ্যাম্পিয়নদেরই খেলা। আসরে অংশ নেয়া আট দলের পিছনের রেকর্ডের দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হয়। এই আট দলের মধ্যে কেবল পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডেরই আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের কোন রেকর্ড নেই। তবে তাদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন করার কোন সুযোগ নেই। তাহলে তাদের ভীড়ে কেন বাংলাদেশ? বাংলাদেশ তো আর চ্যাম্পিয়ন কোন দল নয়!
    সামর্থের প্রশ্ন করলে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। বাংলাদেশকে নিয়ে এমন প্রশ্ন করার সুযোগ ছিল দুবছর আগেও, এখন তা অতীত। বিশেষ করে একদিনের ক্রিকেটে তো বটেই। ধারাবাহীক পারফরম্যান্সের প্রমাণ দিয়ে সকল ক্রিকেট পরাশক্তির কাছ থেকেই সমীহ আদায় করে নিয়েছে টাইগাররা। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরাও তাই এবারের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকে রাখছেন আলাদা কাতারে। সফলতার ব্যাপারে খেলোয়াড়দেরও আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই একটুও। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের পেছনে ফেলে ওয়ানডেতে ছয় নম্বরে উঠে আসার খবরেও সাকিব-মাশরাফিদের বিষ্মিত না হওয়া তো তারই প্রমাণ।
    ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চ্যাম্পিয়নের তকমা গায়ে না মাখলেও এর আগে নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত দুই আসরেই ফাইনালে খেলেছে তারা।  এবারো তাদের ফেভারিট তকমাকে অস্বীকার করবেন না কেউই। আসরের উদ্বোধনী ম্যাচেই এই ইংল্যান্ডের মুখোমুখি বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক বিচারে ওয়ানডের দুই সেরা দলই মুখোমুখি হচ্ছে আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে। তবু কোন প্রশ্ন ছাড়াই ওভালের আজকের ম্যাচে ফেবারিট ইংলিশরাই।
    তবে প্রেরণার জায়গা আছে সাকিব-মাশরাফিদেরও। শুনতে অদ্ভত লাগলেও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের বিচারে এদিয়ে বাংলাদেশই! দু’দলের শেষ ৭ ওয়ানডেতে ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে ইংলিশদের শেষ আট থেকে বিদায় নেয়ার স্মৃতি হয়তো এখনো অনেকের কাছেই টাটকা। গত অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে তিন ম্যাচের সিরিজ ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে জিতলেও সিরিজটা হতে পারত বাংলাদেশেরও। মিরপুরের প্রথম ওয়ানডেতে নিশ্চিত জয়টা হাতছাড়া না হলে ইতিহাসটা তো লেখা হতো অন্যভাবেই।
    তবে সাকুল্য বিচারে অনেক এগিয়ে ক্রিকেটর প্রাচীনতম দল ইংল্যান্ড। মোট ১৯ ম্যাচে ৪ জয় বাংলাদেশের, হার বাকি ১৫ ম্যাচেই। কিন্তু অতীত আর বর্তমানের বাংলাদেশে যে ঢের পার্থক্য। এটাই মাশরাফি বাহিনীর প্রধাণ শক্তি। এখন আর টাইগাররা ‘সান্তনা মূলক হার’এর লক্ষ্যে মাঠে নামে না, নামে জয়ের দৃড় মানসিকতা নিয়েই। আজও নিশ্চয় এর বত্যয় হবে না।
    বিশেষ করে তামিম-সাকিব-মুশফিক-মাহমুদুল্লাহরা যদি নিজেদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেন, ইংলিশ পেসিং কন্ডিশনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে মাশরাফি যদি মুস্তাফিজ-রুবেল-তাসকিনদের কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনতে পারেন, সাব্বির-সৌম্য-মোসাদ্দেকরা যদি বদলে যাওয়া বাংলাদেশের পতাকাটা দৃড়হস্তে ধরতে পারেন তাহলে ভালো কিছুর আশা করতেই পারে চাতকের দৃষ্টিতে সুদর বিদেশভুমে চেয়ে থাকা দেশের ষোল দু গুনে বত্রিশ কোটি চোখ।
    ২০০০ সালে প্রথম বাংলাদেশ অংশ নেই এই আসরে। তখন অবশ্য এর নাম ছিল আইসিসি নকআউট টুর্নামেন্ট। এরপর ২০০২ ও ২০০৪ সালে আসলে ছিল বাংলাদেশের নাম। ২০০৯ সাল থেকে ওয়নডে র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ আট দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দর্শকের সারিতে থেকেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এমন বিশ্বমঞ্চে তখন অবশ্য বাংলাদেশের অংশগ্রহণই দেখা হত অর্জনের দৃষ্টিতে। সময়ের পরিক্রমায় এখন সেই আসরই যেমন নাম নিয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, তেমনি বদলেছে বাংলাদেশের অবস্থান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত সাবেক বিশ্ব ও ২০০৪ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চ্যাম্পিয়ন দলকে পেছনে ফেলে তাই আসরে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। মাঝের আট বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে পরির্তন এসেছে সেটাই এবার প্রামাণের পালা মাশরাফিদের।

    ধূমপায়ী শিয়াল

    Posted by admin on June 1
    Posted in Uncategorized 

    ধূমপায়ী শিয়াল

    ওপরের ছবি দেখে অবাক হওয়ার কিছু নেই, ঘটনাটি সত্যি। ছড়া-গল্পগাথার বদৌলতে শিয়াল অত্যন্ত চতুর প্রাণী হিসেবে বিশেষ পরিচিত। চতুরতার জন্য এদের ‘শিয়াল পণ্ডিত’ও বলা হয়। শিয়াল সাধারণত ঝোপঝাড় কিংবা গর্তে লুকিয়ে থাকে।
    সন্ধ্যার পর গর্ত থেকে বের হয়ে শিকারে মনোযোগ দেয়। শিয়াল মূলত মাংসাশী হলেও এরা সর্বভুক প্রাণী। মরা-পচা প্রাণী থেকে শুরু করে ডাস্টবিনের ময়লা খাবারও খেয়ে থাকে শিয়াল।
    তবে এদিন আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন বিমানবন্দরের বাইরে এক পর্যটকের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ধূমপান করছে শিয়াল। লুইস এচাসোন নামের ঐ স্কটিশ ভদ্রলোক বিমানবন্দরের বাইরে দিয়ে হাঁটার সময় হঠাৎ শিয়ালের মুখে সিগারেট দেখে সঙ্গে সঙ্গে তা ক্যামেরাবন্দি করেন।
    ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারেননি লুইস। টুইটারে দেওয়ার পর ঘটনাটি রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
    তবে ডাবলিন এয়ারপোর্টের অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে ঘটনাটি ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, শিয়ালের সিগারেট খাওয়ার বিষয়টি মোটেও যৌক্তিক কোনো ব্যাপার না। শিয়ালের মুখের সামনে থাকা সাদা বস্তুটি প্রকৃতপক্ষে শিয়ালের বেড়ে যাওয়া দাঁত। খবর দ্য আইরিশ সান।