দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি : খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, বিএনপি দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, হতে পারে না। যারা সামান্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনেই ভোট চুরি করে জিততে চায় তাদের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের মতো বৃহৎ দায়িত্ব কোনওভাবেই নিরপেক্ষ হতে পারে না। নির্বাচনে ইভিএম বাতিল ও সেনা মোতায়েন করতে হবে।
রবিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের সমাবেশে খালেদা জিয়া এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, এরা ক্ষমতায় থেকে জনগণকে যেমন ভয় পাচ্ছে, তেমনি বিভিন্ন দল বিশেষ করে বিএনপিকে ভয় পায়। যার কারণে আজকের সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের বিভিন্ন জায়গায় বাধা দিয়েছে।
তিনি বলেন, এরা যে এত ছোট মনের, আজকে তারা দ্বিতীয় দিনের মতো প্রমাণ করে দিয়েছে। এত ছোট মন নিয়ে রাজনীতি করা যায় না। এরা মানুষকে ভয় পায়। এজন্য ৭ নভেম্বর আমাদের জনসভা করতে দেয়নি। আজকে অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু জনগণ যেন আসতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করেছে। গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। বাইরের জেলার মানুষ যেন না আসতে পারে। রাজধানীর হোটেলগুলোতে অভিযান চালিয়েছে। অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
তিনি আরও বলেন, এমনকি আমিও যেন সমাবেশে আসতে না পারি সেই ব্যবস্থাও করেছে। আমি বাসা থেকে বের হয়ে দেখি রাস্তায় খালি বাস রেখে দিয়েছে। খালেদা জিয়া বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রে মতপার্থক্য থাকবেই, দেশের কল্যাণে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, দেশের বাইরে সরকারের ‘এজেন্সির লোক’ দিয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশ দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ‌‘প্রতিনিয়ত প্রতি প‌দে প‌দে দুর্নী‌তি। দুদুক প‌ড়ে আছে বিএন‌পির পেছ‌নে। অথচ যারা দুর্নী‌তি কর‌ছে তা‌দের দি‌কে চোখ প‌ড়ে না দুদকের। বাংলা‌দেশ ব্যাংক থে‌কে ৮০০ কো‌টি টাকা কারসা‌জি ক‌রে কারা বিদেশে পাচার করেছে দেশবাসী তা জানে। তবু দুদক চুপ হয়ে আছে।’

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যত‌দিন ক্ষমতায় থাক‌বে তত‌দিন দেশে গুম খুন হত্যা চলতেই থাকবে। আমরা রাজনী‌তি‌তে গুনগত প‌রিবর্তন চাই, ঐক্যের রাজনী‌তি কর‌তে চাই।’ এসময় চলমান রো‌হিঙ্গা সমস্যাকে ভোটার‌বিহীন সরকার নয় দেশের জাতীয় সমস্যা বলে উল্লেখ করেন তিনি। আর এই জাতীয় সমস্যা মোকাবিলায় ভোটারবিহীন এই অবৈধ সরকার চুপ থাকলেও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমাধানের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি জোর আহ্বান জানান খালেদা জিয়া।
বিকাল সোয়া ৩টার দিকে সমাবেশস্থলে আসেন খালেদা জিয়া। দীর্ঘ ১৯ মাস পরে রাজধানীর কোনো সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দুপুর ২টার দিকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। ওলামা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবদুল মালেক কোরআন তেলাওয়াত করেন।