গৃহবন্দি হতে পারেন সু চি !

বিশ্রাম অজুহাতে হঠাৎ পদত্যাগ মিয়ানমার প্রেসিডেন্টের

রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধনের কারণে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নের মুখোমুখি রেখে পদত্যাগ করলেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট উ থিন কিয়াও। তার কার্যালয় সূত্রে এই পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। গত প্রায় এক বছর ধরে তার পদত্যাগের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। তার কার্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পোস্টের অস্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়েছে, বিশ্রাম নেওয়ার স্বার্থেই তিনি পদত্যাগ করেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। হারিয়েছিলেন কাজের সক্ষমতা। থিন কিয়াও সু চির বহুদিনের বিশ্বস্ত বন্ধু। খবরে বলা হয়, তার পদত্যাগে আলোড়িত আন্তর্জাতিক মহল। তবে কী কারণে তিনি পদ ছাড়লেন সেই বিষয় পরিষ্কার নয়। আশঙ্কা ফের সেনা শাসনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে দেশটি। সেই সাথে নোবেলজয়ী এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকে ফের গৃহবন্দি করা হতে পারে বলেও জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে। সংবাদ সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সু কি-র ডানহাত হিসেবে পরিচিত ছিলেন পদত্যাগের ঘোষণা দেয়া প্রেসিডেন্ট থিন কিউ। আগামী সাত দিনের মধ্যে তার স্থানে নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্বে আসবেন। গত বছর থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর অত্যাচার ও গণহত্যার অভিযোগে বারবার সংবাদ শিরোনামে এসেছে মিয়ানমার। দেশটির রাখাইন প্রদেশ থেকে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে যায়। ঘটনার সূত্রপাত মিয়ানমার সেনার চৌকিতে হামলা দিয়ে। সরকারের অভিযোগ, রোহিঙ্গা জঙ্গি গোষ্ঠী এই হামলা জড়িত। তারপরেই সেনা অভিযান শুরু হয়। আর এই অভিযান ঘিরেই বিতর্ক দানা বাধে। এই পরিস্থিতিতে গণহত্যায় মদদ দিচ্ছে মিয়ানমার সরকার এমনই দাবি করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। জাতিসংঘে বারবার সমালোচিত হয়েছে মিয়ানমার সরকার। সু চি-র মতো নোবেল জয়ী ব্যক্তিত্ব বিষয়টিকে প্রশ্রয় দিয়েছেন বলেও অভিযোগ। এদিকে, বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখেও সু চি দীর্ঘ সময় নীরব থাকায় তার অবস্থান নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়। ধারণা করা হয় সেনা শাসনের ঘেরাটোপেই আছেন তিনি। পরে তিনি সেনা অভিযানকে সমর্থন করায় বিষয়টি আরও জমাট হয়। এমনই পরিস্থিতিতে ক্রমাগত আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি হয় মিয়ানমারের উপর। এরপরই রোহিঙ্গাদের ধাপে ধাপে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয় সু চি সরকার। এরই মধ্যে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ পরিস্থিতি ঘোলাটে করে তুলেছে। সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে টানা সেনা শাসনের অবসান ঘটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতায় আসে সু চি-র দল। তবে সেখানকার পার্লামেন্টে বড় অংশ সেনা প্রশাসকের দখলে। এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স।