অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলে গেলে কেমন হবে পৃথিবী?

পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকা। দক্ষিণ মেরুতে অবস্থিত অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের গড়ে ৯৮ ভাগই প্রায় দুই কিলোমিটার পুরু বরফাবৃত। পেঙ্গুইন, সিল, নোমাটোড, টার্ডিগ্রেডের মতো প্রবল শৈত্যের সঙ্গে লড়াই করতে সক্ষম উদ্ভিদ এবং প্রাণীরাই কেবল এখানে টিকে থাকতে পারে। এক কোটি ৪০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে থাকা এই বরফাবৃত অঞ্চলকে পৃথিবীর শুষ্কতম মরুভূমি হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়। সেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মাত্র ২০০ মিলিমিটার। তবে মাঝে মধ্যেই বিজ্ঞানীরা অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলে যাওয়া সম্পর্কে সাবধান করছেন পৃথিবীর মানুষকে। বরফ গললে কী হতে পারে সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেন তারা।

পুরো অ্যান্টর্কটিকার বরফ গেলে স্বাভাবিকভাবেই পানির পরিমাণ বেড়ে যাবে পৃথিবীতে। আর এই বাড়তি পানিতে কেমন হবে পৃথিবীর মানচিত্র সেটা নিয়ে চলছে নানা গবেষণা। বরফ গলে সমুদ্র স্তরের উচ্চতা সর্বোচ্চ ২১৬ ফুট পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। এটি ঘটলে এখনকার স্থলভাগের যে মানচিত্র রয়েছে তা বদলে যাবে। তবে এখনই এটি নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। কারণ পৃথিবীতে থাকা পাঁচ মিলিয়ন কিউবিক মাইল বরফ গলতে পাঁচ হাজার বছরের বেশি সময় লাগবে। বর্তমান পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ৫৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট থেকে ৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট হয়ে যাবে। পুরো আটলান্টিক সমুদ্রতীর, এমনকি ফ্লোরিডা এবং উপসাগরীয় উপকূল তলিয়ে যাবে। অন্য মহাদেশের তুলনায় আফ্রিকা কম পরিমাণ ভূমি হারালেও মিশরের আলেকজেন্দ্রা এবং কায়রো ভূমধ্যসাগরে হারিয়ে যাবে। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে নেদারল্যান্ডস সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ডেনমার্কের বেশিরভাগ অংশও তলিয়ে যাবে পানিতে। ভূমধ্যসাগরের পরিধি বেড়ে গিয়ে তা কৃষ্ণসাগর এবং কাস্পিয়ান সাগরের সাথে মিশে যাবে। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চীনের ছয়শ কোটি মানুষ এবং বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ বন্যার কবলে পড়বে। ভারতের উপকূলীয় অনেক এলাকাও এই বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।