জার্মানির গণমাধ্যমে সু চির সমালোচনা

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা লোকজনের ওপর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংস অভিযানে অং সান সু চির নীরব ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে জার্মানির পত্রপত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে।

জার্মানির শীর্ষস্থানীয় পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে রোহিঙ্গা জাতিসত্তার ওপর অত্যাচার ও নিজভূমি ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার ঘটনা গত কয়েক দিন ধরে প্রকাশিত হচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক স্পিগেল পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ‘মিয়ানমারে রক্তপাতে সুচির নীরবতা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে গভীর রাতে নৌকায় ঠাসাঠাসি করে ভীত-সন্ত্রস্ত পলায়নপর মানুষ নিয়ে নদী পাড়ি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অনেকে আবার খালি পায়ে কাদা মারিয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত পৌঁছাচ্ছেন। অনেক পুরুষের কাঁধে বাবা-মা। প্রতিবেদনে চার দিন আগে আসা শরণার্থী আমিনার বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার কথা বলা হয়েছে। আমিনা জানিয়েছেন, এখন সে জানে না কোথায় তার মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে।

বিগত সময়ে ২ লাখ ৭০ হাজার মুসলিম রোহিঙ্গার মিয়ানমারে ছেড়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ ও নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপ্ত মিয়ানমারের সাবেক গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির নীরবতার সমালোচনা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৩ লাখ ৬৫ হাজার মানুষ  অং সান সু চির নোবেল শান্তি পুরস্কার বাজেয়াপ্তের জন্য নোবেল শান্তি কমিটির কাছে দরখাস্ত করেছেন বলেও তাঁরা জানিয়েছেন।

জার্মানির আর এক শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা ‘যাইট’-এ রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার ও তাদের পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের কথা বলা হয়েছে। তারা জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছে, আগামী তিন মাসে বাংলাদেশে শরণার্থীদের পুনর্বাসনে ১ কোটি ১৫ লাখ ইউরোর প্রয়োজন পড়বে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের উদ্ধৃতি দিয়ে ‘যাইট’ পত্রিকা লিখেছে, মিয়ানমার সরকারের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকেও এই মানবতর ঘটনায় অং সান সু চির নীরবতা লজ্জাজনক।

জার্মানির সুড ডয়েচে যাইটুং পত্রিকা এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জাতিসত্তার ওপর হামলা এবং বাংলাদেশে তাদের আশ্রয় নেওয়ার কথা উল্লেখ করেছে।