• Bangla Dailies

    Prothom alo
    undefined
    Songbad
    daily destiny
    shaptahik
  • Weeklies

  • Resources

  • Entertainment

  • Sports Links

  • গাজর-গুণে ও মানে সমৃদ্ধ

    গাজর হলো মূল জাতীয় সবজি। অন্যান্য সবজির ন্যায় গাজরকেও রান্না করে খেতে হয়। আবার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গাজর সালাদ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। গাজরকে পোলাও, খিচুড়ির সাথে মিশিয়ে রান্না করলে তা পুষ্টিযুক্ত ও সুস্বাদু হয়। এছাড়া গাজর দিয়ে আচার, হালুয়া তৈরি করা হয়- যা শরীরের জন্য অত্যন্তউপকারী। কেউ কেউ আবার কাঁচা গাজর ছেটে ছেটে খেতে পছন্দ করেন। যাই হোক গাজরের উপকারিতার শেষ নেই।
    গাজর আমাদের দেশের সর্বত্রই পাওয়া যায়। সাধারণত চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, গাজরের মধ্যে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে, যা আমাদের শরীরের জন্য অতীব প্রয়োজনীয়। এটি এমন এক ধরনের সবজি যাতে রয়েছে খনিজ লবণ ও ভিটামিন। এতে ভিটামিন এ,বি,সি,ই ও খনিজ লবণের মধ্যে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, মেঙ্গানিজ, সিলিকন, আয়োডিন, সালফার, ফসফরাস, ক্লোরিন ইত্যাদি রয়েছে।
    গাজরে খুব বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকার ফলে তা আমাদের দাঁত, হাড়, ত্বকের সুস্থতার জন্য উপকারী। আয়রন মৌল থাকার জন্য রক্তের চলাচল স্বাভাবিক করে তোলার ক্ষেত্রে গাজরের ভ‚মিকা যথেষ্ট। ‘এ’ ভিটামিন থাকা সবজিগুলোর মধ্যে গাজর অন্যতম। সাধারণত কেরোটিন যৌগ হিসাবে থাকা রঞ্জক পদার্থগুলো আমাদের খাদ্য নালিতে গিয়ে ভিটামিনে রূপান্তরিত হয়। চোখের দুর্বলতাও মানসিক চাপ দূরীকরণে গাজর সহায়ক ভ‚মিকা পালন করে থাকে।
    রাতকানা রোগ দূরীকরণে গাজর বেশ উপকারী। ভিটামিন-এ ত্বক মসৃণ ও সতেজ রাখে। গাজরে থাকা ভিটামিন ‘বি’, ‘সি’ ও এ শরীরকে স্বাভাবিক সুস্থ রাখে। দেহের শক্তি ও বিকাশের জন্য আবশ্যকীয় প্রোটিন, শক্তিদায়ক উপাদান চর্বি-ও কার্বো-হাইড্রেট গাজরে রয়েছে। তাই শরীরে দুর্বলতা অনুভব করলে গাজর খেলে শক্তি ফিরে পাওয়া যায়। কারণ কার্বন-হাইড্রেট থেকে আমাদের শরীর শক্তি আহরণ করে। গাজরের রস খেলে উপকার পাওয়া যায়। এতে শক্তি বৃদ্ধি হয়।
    পাচন কাজে গাজরের ভ‚মিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এতে থাকা ভিটামিন বি, পাচনকার্য সহজ করে তোলে। ফলে পাকস্থলীতে অ্যাসিড গঠনে বাধাগ্রস্ত হয়। গাজর পাকস্থলী পরিষ্কার রাখে। গাজর কাঁচা খেলে দাঁত মজবুত হয় ও হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। গাজরের রস সব ধরনের জ্বর, দুর্বলতা, নাড়ি স¤পর্কিত বিকার, রক্তলপ্সতা, নিরাশ ক্ষীন জীবনী শক্তি ও দুর্বলতার ক্ষেত্রে অত্যধিক প্রভাবশালী বলা যায়। আবার গ্রীষ¥ ঋতুতে গাজর খাওয়া উচিত নয়। কারণ এসব গাজর খেলে উচ্চ রক্তচাপ এবং অনিদ্রা দেখা দিতে পারে। ঠাÐায় শরীরকে গরম রাখার জন্য এবং ঠাÐা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য গাজর খাওয়া উচিত। গাজরের রস আশ্চর্যজনক কাজ দেয়। যারা বিভিন্ন রোগে ভোগে থাকেন তারা যদি খাদ্যের সঙ্গে গাজরের রস যুক্ত করে খান তাহলে তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে এবং কোনো ধরনের রোগ থাকবে না বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ভিটামিন-এ হাড় এবং দাঁতের বিকাশ ঘটায়। শারীরিক দিক থেকে সুস্থ রাখে এবং গ্রন্থি সম্বন্ধিত প্রক্রিয়া সঠিক রাখে। গাজর সংক্রমণের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। গর্ভবতী মহিলাদের ভিটামিন-এ এর খুবই প্রয়োজন। তাতে প্রসূতি এবং গর্ভস্থ সন্তান সুস্থ থাকে। গাজরে থাকা ভিটামিন-এ, ই ও বিটা কেরোটিন ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করে বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের অভিমত। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন ‘ই’ যুক্ত রক্ত প্রবাহ ক্যান্সারকে বিকশিত হতে দেয় না। গাজর ক্যান্সার রোগীদের জন্য খুব ফলদায়ক বলে গবেষণায় প্রকাশ।

    মাশরাফি বন্দনায় আনন্দবাজার: বিদায় ক্যাপটেন
    দুই পায়ে মোট আটবার অস্ত্রোপচার। পা বাঁচাতে যখন মাশরাফিকে না খেলার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল, তখন তিনি বলেছিলেন, ‘পায়ে গুলি খেয়ে যদি মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করতে পারে, তাহলে আমি কেন সামান্য সার্জারি নিয়ে মাঠে খেলতে পারবো না?’ দৃঢ়চেতা মনোভাব, ব্যক্তিত্ব আর সহজাত ক্রিকেটীয় মেধার সঙ্গে দারুণ নেতৃত্বগুণ অন্য আরো ১০ জন ক্রিকেটার থেকে আলাদা করে চিনিয়েছে বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। তিনিই দেখিয়েছেন কেবল তীব্র ইচ্ছাশক্তি আর দেশের প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা থাকলে- অনেক কিছুই সম্ভব।ম্যাচ জিতিয়ে গোটা দেশ যখন আনন্দে মাতে, মাশরাফি তখন হাঁটুর ব্যাথায় কাতরান ড্রেসিংরুমে।  ক্রিকেটে তাঁর মতো ইনজুরি জয় করা খেলোয়াড় আর একজন আছেন বলে ইতিহাস সাক্ষী দেয় না। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তিনি তাই ধ্রুবতারা!
    প্রিয় ম্যাশ দেশের মানুষের হৃদয়ে কতটা জায়গা করে নিয়েছেন, তা বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিংবা গণমাধ্যমে চোখ রাখলেই সহজেই বোঝা যায়। বিদায়েও তাই খেলোয়াড় মাশরাফির বাইরে তাই মানুষ মাশরাফিকে নিয়েই জয়গান। টি টোয়েন্টিতে অবসরের ঘোষণাতেই ব্যথিত বাংলার কোটি জনতা।
    বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সবার প্রিয় ম্যাশ বা পাগলার আবির্ভাব অনেক কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে প্রয়োজন ছিল একজন বোলারের, ঠিক সেই সময়ে প্রতিভা আর পরিশ্রমের মিশ্রণে একটু ভিন্ন ধাতুতে গড়া এই তরুণের খোঁজ পেল এ দেশের ক্রিকেট। আক্রমণাত্মক, গতিময় বোলিং দিয়ে প্রথমে নজর কেজেছিলেন সবার। কালে পরিণত হয়ে তিনি এখন বাংলাদেশের সফলতম পেস বোলারদের একজন। সফলতম অধিনায়ক তো বটেই।
    একটু একটু করে বেড়ে ওঠা আজকের মাশরাফির। ধারাবাহিকভাবে জয় করেছে হাজারও ক্রিকেটপ্রেমীর মন। শুধু খেলা দিয়ে নয়, বিনয় আর লড়াকু মনোভাবের সঙ্গে সহজাত নেতৃত্বের গুণ তাঁকে আর দশটা ক্রিকেটার থেকে আলাদা করে রেখেছে। ইনজুরিতে পড়ে পায়ে অপারেশনের এখন আর কোনো জায়গা বাকি নেই! তবুও তিনি বারবার মাঠে ফিরেছেন ক্রিকেটকে ভালোবেসে। জীবন বাজি রেখে, দেশকে ভালোবেসে খেলে গেছেন দেশের জন্য, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। ক্রিকেটে যতটা লড়াকু, ব্যক্তি হিসেবে ততটাই বিনয়ী মাশরাফি। আর এই বিনয়ে বশ বাংলার কোটি মানুষ। সহজাত বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা তো আছেই; সঙ্গে ভালোবাসা ও উদারতার এক উদাহরণও তিনি। এই তো কদিন আগে নিরপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে মাঠে ঢুকে পড়া এক ভক্তকে যেভাবে বুকে টেনে নিলেন, তা হৃদয় ছুঁয়ে গেছে হাজারও ক্রিকেটপ্রেমীর। পরে তো আবার নিরাপত্তাকর্মীদের হাত থেকে তাঁকে রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে গেলেন নিজেই।
    আবার বাংলার আবেগী ক্রিকেট দর্শক যখন ক্রিকেটারদের ‘মুক্তিযোদ্ধা’ উপাধি দিতে ফেসবুকে ইভেন্ট খোলেন তখন সেখানে গিয়েও প্রতিবাদ জানিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘ক্রিকেটারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা টানলেই খুব খারাপ লাগে। আগেও অসংখ্যবার বলেছি, আমার কাছে মুক্তিযুদ্ধ সব কিছুর আগে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্থান সব কিছুর ওপরে। সামান্য ক্রিকেট খেলা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা বাতুলতা ছাড়া আর কিছু নয়।’
    দলের কাছে কোনোদিন তিনি নামকাওয়াস্তে অধিনায়ক ছিলেন না। ছিলেন সবার প্রিয় ‘মাশরাফি ভাই’ । দলটাকে সাজিয়ে রেখেছেন তিনি নিজের ঘরের মতো! নেই কোনো ভেদাভেদ, নেই কোনো কোন্দল। কারো বিয়ে, কিংবা কারো কোনো কাজে এগিয়ে যেতেন বড় ভাইয়ের মতোই।
    এতো ইনজুরির ঝাপ্টা পেরিয়ে মাশরাফিকে তো যেতেই হতো একদিন। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি এই বিদায় মানতে পারছেন না অনেক অনুরাগীই। বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে ৬ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার দিনটা তাই কালো অক্ষরে লেখা থাকবে প্রিয় ক্যাপ্টেনের টি টোয়েন্টি থেকে বিদায়ের দিন হিসেবেই। আনন্দবাজার।